‘মোদীর কাছে প্রত্যাশা’
১৬ মে ২০১৪শুক্রবার বিজেপির নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পরপরই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় পার্টির নেতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও বিএনপির অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে মোদীকে অভিনন্দন জানিয়ে বিবৃতি দেয়া হয়৷ এ সংক্রান্ত পাঁচটি খবরের শিরোনাম একসঙ্গে করে সুমন মাহবুব ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘ভারত হামকো জানসে পেয়ারা হে....৷''
বিএনপি ও জামায়াতের অভিনন্দন নিয়ে আরিফ জেবতিক ফেসবুকে একটি নোট লিখেছেন, যার শিরোনাম ‘মোদীর মদিরা ফর্মুলা: বঙ্গের আশা কেমন?'
তিনি লিখেছেন, ‘‘উগ্র মৌলবাদ ভাতৃপ্রতীম ব্যাপার, সেটা আলাদা আলাদা ধর্মের হলেও নিজেদের মাঝে এক ধরনের খায়খাতির আছে বলে মনে হয়৷ হাজার হাজার মুসলমানের রক্তে যে লোকটির হাত রাঙা, পুরো ফলাফল ঘোষণা হওয়ার আগেই তাঁর প্রতি শুভেচ্ছা জানানোর তড়িৎ আকুতি জানাচ্ছেন বঙ্গের সেই দল, যারা নিজেদেরকে ইসলামপন্থি বলে জাহির করে ভোট করে থাকে! এই আকূল আনন্দের মূল কারণ হয়ত ভারতে কংগ্রেস সরকারের পতনের কারণে বাংলাদেশে কংগ্রেসের মিত্র বলে পরিচিত আওয়ামী লীগ সরকার বেকায়দায় পড়বে বলে মনে করা৷''
আরিফ জেবতিক অবশ্য মনে করেন, ক্ষমতায় যে দলই থাকুক, ভারতের রাষ্ট্রীয় নীতিতে তার খুব বেশি প্রভাব পড়বে না৷
‘‘উগ্র হিন্দুত্ববাদী আরএসএস-এর সন্তান মোদী পাশের দেশ বাংলাদেশে নতুন করে বড় উৎপাত তৈরির চেষ্টা ছাড়া আর কিছুতে মনোযোগ দেবে বলে আমার মনে হয় না৷ কিন্তু ভারতের প্রতি আওয়ামী লীগের অতিরিক্ত বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাবের কারণে রাষ্ট্র হিসেবে ভারত স্বস্তিতেই আছে এবং এখানে সরকার অস্থিতিশীল করে তুলে মোদীর আলাদা কোনো লাভ নেই৷''
ভারতীয় জনগণের রায়ে হতাশা প্রকাশ করে আবু বকর সিদ্দিক লিখেছেন, এভাবেই ইতিহাসব্যাপী ভারত-সংস্কৃতির সংখ্যাগরিষ্ঠ অন্ত্যজেরা নিজেদের পায়ে নিজেরা কুড়াল মেরে আসছে৷
‘‘ভারতের মানুষ ভারতের অসাম্প্রদায়িক আদর্শকে সমুন্নত রাখবে এমন আশাই করেছিলাম৷ ভারতের শিক্ষিত সমাজ, গণতান্ত্রিক বোধসম্পন্ন মানুষ একটা হোঁচট খেল আর কি! তবে এটা ভারত আবার কাটিয়ে উঠবে এটাও আমি আশা করি৷ কর্পোরেট অঢেল অর্থ, মিডিয়ার অতিতৎপরতার কাছে সচেতন মানুষের প্রতিরোধটুকু পেরে ওঠেনি এবার, যদিও আগের দুবার পুঁজি ও গণমাধ্যমই পরাস্ত হয়েছিল, আমি দৃঢ়ভাবে আশা রাখি, আবার পরাস্ত হবে তারা৷''
ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের অফিশিয়াল ফেসবুক পাতাতেও বহু পাঠকের প্রতিক্রিয়া এসেছে৷ তাঁদের কেউ কেউ ‘এক সময়ের চা বিক্রেতা' মোদীকে নিয়ে ব্যাঙ্গ করেছেন৷ কেউ আবার তীব্র সমালোচনা করেছেন ২০০১ সালের গুজরাটের দাঙ্গায় নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা নিয়ে৷
মোদীকে অভিনন্দন জানানোর সমালোচনা করে হিমেল আহমেদ লিখেছেন, ‘‘অভিনন্দন জানানো খারাপ কিছু না৷ তবে একটু খেয়াল করেন, যে আজ ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছে সেই লোকটির হাতে লেগে আছে ভারতের জনগণ (মুসলিম) নিধনের রক্ত৷ সেই রক্ত পিপাসুকে ভারতের জনগণ চিনতে না হয় ভুল করেছে, কিন্তু আপনি করলেন কেন? আপনার মতো রাজনীতিবিদের কাছে আমরা এটা আশা করিনি৷''
বাবু আনা নামে আরেকজন প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘অভিনন্দন জানিয়ে ম্যাডাম জিয়া কি পরোক্ষভাবে মোদীর মুসলিম নিধনকেই সমর্থন দিলেন?''
চমন সিকদার জুলকারনাইন লিখেছেন, ‘‘বেগম জিয়া অপেক্ষায় মোদীজির জন্য৷ বিজেপি ও বিএনপি নামের মিল রয়েছে৷ এবার যদি আওয়ামী লীগকে হটানো যায় – এই তাঁর আশা৷ তবে মনে রাখতে হবে ভারত চালায় আমলারা৷''