মৃত আতিকের চিঠি পৌঁছাল প্রধান বিচারপতির কাছে
১৮ এপ্রিল ২০২৩এলাহাবাদ বা প্রয়াগরাজে পুলিশ পরিবৃত হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় গুলি করে হত্যা করা হয় উত্তরপ্রদেশের অভিযুক্ত ডন তথা রাজনীতিবিদ আতিক আহমেদ ও তার ভাই আসরাফকে। এরপরই আতিকের ইচ্ছানুযায়ী সিলবন্ধ চিঠি পৌঁছালো সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রডূড় ও উত্তরপ্রদেশেরমুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে।
আতিকের আইনজীবী বিজয় মিশ্র জানিয়েছেন, এই চিটি তিনি পাঠাননি। চিঠিতে কী আছে, তাও তিনি জানেন না। এই চিঠি অন্য কোথাও রাখা ছিল। আতিকের ইচ্ছে মেনে তা অন্য কেউ পাঠিয়েছে। তার মানে আতিকের মনে হয়েছিল, তাকে হত্যা করা হতে পারে।
আতিকের বিরুদ্ধে একশটির মতো অভিযোগ ছিল। খুন, খুনের চেষ্টা, অপহরণ থেকে শুরু করে নানা ধরনের অভিয়োগ। তার মধ্যে একটি অভিযোগে আদালত তাকে শাস্তি দিয়েছিল। উমেশ পালকে অপহরণ করার অভিযোগ। এই উমেশ পালকেই কিছুদিন আগে প্রয়াগরাজেই হত্যা করা হয়। সাতজন গাড়িতে করে এসে তাকে হত্যা করে। তার মধ্যে আতিকের ছেলে আসাদও ছিল। পরে পুলিশের গুলিতে আসাদ ও তার সঙ্গী গুলাম মারা যায়। গাড়ির চালকও পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে মৃত।
উমেশ পাল আবার সাবেক বিএসপি বিধায়ক রাজু পালের আত্মীয়। রাজুকে আতিক হত্যা করেছে বলে অভিয়োগ। তার একমাত্র সাক্ষী ছিলেন উমেশ।
আতিকের দুই ছেলে এখন জেলে। স্ত্রীর বিরুদ্ধেও চারটি অভিযোগ রয়েছে। স্ত্রী পলাতক। আতিক প্রয়াগরাজের একটি কেন্দ্র থেকে পাঁচবারের বিধায়ক ও একবার সে সাংসদও হয়েছিল। জেলে থাকার সময়ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জেতে আতিক।
যেভাবে আতিককে মারা হয়েছে তা নিয়ে সোচ্চার বিরোধী দলগুলি। সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব বলেছেন, ''উত্তরপ্রদেশের আইনের শাসন যে কোথায় তা এই ঘটনা প্রমাণ করে দিয়েছে। এভাবে পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে যখন কাউকে মারা হয়, তখন সাধারণ মানুষের অবস্থা কী, তা সহজেই অনুমান করা যায়। একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। কিছু মানুষ তা ইচ্ছে করে তৈরি করছে।''
এআইএমআইএম নেতা আসাদুদ্দিন ওয়েইসি বলেছেন, ''আতিক ও তার ভাই সরকারি হেফাজতে হাতকড়া পরা অবস্থায় খুন হয়েছেন। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁডিয়েছে। আর যারা এনকাউন্টার-রাজের সমর্থক, এই হত্যার জন্য তারাও দায়ী।''
সাবেক মন্ত্রী ও আইনজীবী কপিল সিবাল বলেছেন, ''একসঙ্গে দুইটি হত্য়া হয়েছে। আতিক ও তার ভাইয়ের এবং আইনের শাসনের।''
যোগীর বক্তব্য
যোগী আদিত্যনাথ মঙ্গলবার বলেছেন, কোনো মাফিয়া আর উত্তরপ্রদেশে শিল্পপতিদের ভয় দেখাতে পারবে না। আগে উত্তরপ্রদেশ দাঙ্গার জন্য বিখ্যাত ছিল। কিছু জেলার নাম নিতে মানুষ ভয় পেত। ২০১২ থেকে ২০১৭-র মধ্যে সাতশ দাঙ্গা হয়েছে। আর ২০১৭ থেকে ২৩-এর মধ্যে একটাও হয়নি।
এসজি/জিএইচ(পিটিআই, এনডিটিভি)