1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উত্তরপ্রদেশে এনকাউন্টার, আট পুলিশ হত

৩ জুলাই ২০২০

কানপুরে এক কুখ্যাত ডনকে ধরতে গিয়েছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। কিন্তু ডন ও তার বাহিনীর আক্রমণে আটজন পুলিশ মারা গেলেন। মূল দুষ্কৃতী পলাতক।

https://p.dw.com/p/3ejE3
ফাইল চিত্রছবি: Reuters/ANI

সিনেমা নয়, বাস্তব। মূলধারার হিন্দি ছবিতে আততায়ীর সঙ্গে পুলিশের গুলি বিনিময়ের দৃশ্য সুপরিচিত। এ বার ঠিক সে ঘটনাই ঘটল উত্তরপ্রদেশের কানপুরে। কানপুরের বিকারু গ্রামের চৌবেপুরে বৃহস্পতিবার রাতে অতর্কিতে হানা দেয় পুলিশ। উদ্দেশ্য ছিল কুখ্যাত দুষ্কৃতী বিকাশ দুবেকে গ্রেফতার করা। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গে বিকাশের গুন্ডারা ঘিরে ফেলে পুলিশ বাহিনীকে। এলোপাথারি গুলি ছুড়তে শুরু করে। আট জন পুলিশ ঘটনাস্থলেই মারা যান। চার জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁদের অবস্থাও গুরুতর।

বিকাশ দুবের বিরুদ্ধে সম্প্রতি একটি খুনের চেষ্টার মামলা হয়েছে। ৫০টিরও বেশি মালায় অভিযুক্ত তিনি। কানপুর অঞ্চলের অন্যতম ডন হিসেবে পরিচিত এই বিকাশ। জনশ্রুতি বিকারু গ্রামের চৌবেপুরে মশা-মাছিও বিকাশের কথা শুনে চলে। এ হেন বিকাশের মাথার দাম ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল বেশ কিছু দিন আগেই। বৃহস্পতিবার পুলিশ খবর পায়, গ্রামের বাড়িতে এসেছেন বিকাশ। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে গ্রেফতার করতে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হয়। কিন্তু পুলিশ এলাকায় পৌঁছনোর আগেই বিকাশের কাছে খবর চলে যায়। পুলিশকে গ্রাম পর্যন্ত আসার সুযোগ দেন বিকাশ। তারপর পিছন থেকে ঘিরে ফেলেন। শুরু হয় গুলি বৃষ্টি।

ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে বিলহোরের সার্কল অফিসার দেবেন্দ্র কুমার মিশ্র, শিবরাজপুর পুলিশ স্টেশনের অফিসার ইন চার্জ মহেশ যাদব এবং দুইজন সাব ইনস্পেক্টর আছেন। বাকি চার নিহতই কনস্টেবল।

বলিউডি কায়দায় হাত ধোয়া শেখাচ্ছে ভারতীয় পুলিশ

ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় পৌঁছয়। আইজি নিজে ঘটনাস্থলে যান। ততক্ষণে বিকাশ পালিয়েছেন। পুলিশের সঙ্গে দ্বিতীয় দফাতেও গুলি বিনিময় হয় দুষ্কৃতীদের। পুলিশের দাবি, দ্বিতীয় দফার গুলিবিনিময়ে দুই দুষ্কৃতী নিহত হয়েছে। বিকাশের কাকা প্রেমপ্রকাশ পাণ্ডেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর সঙ্গে প্রেমপ্রকাশের ঘনিষ্ঠ অতুল দুবে নামের এক ব্যক্তিকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের জেরা করে বিকাশের খবর নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

শুক্রবার সকালে কানপুরের এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন তিনি। যোগী ক্ষমতায় আসার পর থেকে উত্তরপ্রদেশে পুলিশি এনকাউন্টারের সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলি একাধিকবার অভিযোগ করেছে, এনকাউন্টার বাড়ার ফলে অপরাধের সংখ্যা আরও বেড়েছে উত্তরপ্রদেশে। একদিকে পুলিশ যেমন এনকাউন্টার করছে, অন্য দিকে অপরাধীরাও কথায় কথায় গুলি চালাচ্ছে। সব মিলিয়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। তিনি বলেছেন, ''উত্তর প্রদেশের আইন ও শৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। অপরাধীদের রমরমা। সাধারণ লোক তো বটেই, পুলিশও তাদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না।'' রাহুল গান্ধীর বক্তব্য, ''এই ঘটনা উত্তর প্রদেশের গুণ্ডারাজের আরেকটা প্রমাণ।''

অনেকরই প্রশ্ন, এমন ঘটনা ঘটল কী ভাবে? দুষ্কৃতীদের কাছে এত অস্ত্র কী ভাবে এল, সে প্রশ্নও উঠছে।

 

এসজি/জিএইচ (পিটিআই, এএনআই)