মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কা সামলাতে জার্মান সরকারের বৈঠক
২৯ আগস্ট ২০২২জার্মানিতে জোট সরকারের মধ্যে কোনো বিষয়ে ঐকমত্য অর্জন করার লক্ষ্যে লোকচক্ষুর অন্তরালে কয়েক দিন ধরে মন্ত্রিসভার বৈঠকের একটা ঐতিহ্য রয়েছে৷ বার্লিনের উপকণ্ঠে মেসেব্যার্গ কেল্লায় জার্মান চ্যান্সেলররা এর আগেও এমন ‘চিন্তন বৈঠক' করেছেন৷ মতপার্থক্য দূর করে আপস মীমাংসা তুলে ধরা হয়েছে৷ কিন্তু বর্তমানে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সংকটের মুখে জার্মানির তিন শরিক দলের জোট সরকারের মধ্যে যে চিড় দেখা যাচ্ছে, তা সহজে মেরামত করা যে মোটেই সহজ হবে না, সে বিষয়ে কোনো সংশয় নেই৷ বিশেষ করে ইউক্রেন যুদ্ধের জের ধরে জনগণের উপর জ্বালানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বোঝা লাঘব করার প্রশ্নে উত্তেজনা বেড়ে চলেছে৷ এমন প্রেক্ষাপটে মঙ্গল ও বুধবার মেসেব্যার্গে জার্মান সরকার বৈঠকে বসতে চলেছে৷
একাধিক বিশেষজ্ঞের মতে, লাগাতার মূল্যস্ফীতির কারণে জার্মানিতে সামাজিক অশান্তির আশঙ্কা বাড়ছে৷ এ অবস্থায় বিশেষ করে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণির জন্য যথেষ্ট সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা না করলে অনেক মানুষ কার্ষত পথে বসতে পারে৷ করোনা সংকটের সময় থেকে সরকার নানা আর্থিক সহায়তা ও ভরতুকি দিয়ে এসেছে৷ ইউক্রেন সংকটের ধাক্কা সামলাতেও বর্তমান সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে৷ কিন্তু গ্যাসসহ জ্বালানি তথা বিদ্যুতের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বেড়ে চলায় বিশেষ করে আসন্ন শীতের মাসগুলিতে জার্মানির মানুষ প্রবল চাপের মুখে পড়তে চলেছে৷ সেইসঙ্গে নতুন করে করোনা মহামারির ধাক্কার আশঙ্কা রয়েছে৷
সমাধানসূত্রের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কোনো সংশয় না থাকলেও জোট সরকারের তিনটি দল ভিন্ন পদক্ষেপের পক্ষে সওয়াল করছে৷ চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দল ও পরিবেশবাদী সবুজ দল মূলত দুর্বল শ্রেণির জন্য আর্থিক সহায়তার পক্ষে সওয়াল করলেও উদারপন্থি এফডিপি দল শিল্পবাণিজ্য জগত ও স্বচ্ছল মানুষের জন্যও কিছু সুবিধা আদায় করতে চাইছে৷ তাছাড়া সব দলের মধ্যেই খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে৷ ফলে মন্ত্রী ও শরিক দলের নেতাদের মধ্যে প্রকাশ্যে বিতণ্ডা দেখা যাচ্ছে৷ বিশেষ করে সবুজ দলের জনপ্রিয় নেতা ও ভাইস চ্যান্সেলর রোব্যার্ট হাবেক চারিদিক থেকে সমালোচনার মুখে পড়ছেন৷
জনপ্রিয়তার বিচারে সবচেয়ে কোণঠাসা এসপিডি দল ইতোমধ্যে জনগণের সহায়তায় একগুচ্ছ পদক্ষেপের খসড়া পেশ করে বাকি দুই শরিক দলের উপর চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে৷ সরাসরি আর্থিক অনুদানের পাশাপাশি জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির ঊর্ধ্বসীমা স্থির করতে চায় এই দল৷ সেইসঙ্গে গণপরিবহণ ব্যবস্থা ব্যবহারের জন্য সস্তায় স্থায়ী টিকিটের প্রস্তাব রেখেছে এসপিডি৷
বিরোধী ইউনিয়ন শিবিরও হাত গুটিয়ে বসে নেই৷ বিশেষ করে দুর্বল শ্রেণির জন্য আরও সহায়তার পক্ষে সওয়াল করেছেন শিবিরের নেতা ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস৷ সরকারের উপর চাপ বাড়াতে তিনি সেই লক্ষ্যে কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)