প্রেসিডেন্ট প্রার্থী আল সিসি
২৭ মার্চ ২০১৪সিসি তাঁর ভাষণে বলেন, ‘‘সেনা পোশাকে আপনাদের সামনে এই শেষবারের মত আমার দাঁড়ানো৷ সেনা প্রধান এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি৷ আমি মিশরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য নিজেকে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করছি৷ মিশরকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে প্রতিদিন আমি আমার লড়াই অব্যাহত রাখব৷''
সিসির এই মনোনয়ন দেশটির লাখো জনগণ স্বাগত জানিয়েছে৷ আরব বসন্তে হোসনি মুবারকের পতনের পর গত তিন বছরে যে অস্থিতিশীলতার মধ্যে দিয়ে দেশটি যাচ্ছে, তার অবসানের জন্য সিসিকে উপযুক্ত মনে করছে জনগণ৷ জুনের আগেই মিশরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা৷ এই নির্বাচনে সিসি খুব সহজেই জয় পাবেন বলে ধারণা বিশ্লেষকদের৷ তাঁরা বলছেন, ‘‘সিসি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন এবং নির্বাচনে তাকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী নেই৷''
২০১৩ সালের জুলাইয়ে দেশটিতে প্রবল গণবিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মুসলিম ব্রাদারহুডের মোহামেদ মুরসিকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদচ্যুত করেন সিসি৷
ব্রাদারহুডের প্রতিক্রিয়া
তবে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মুরসির দল মুসলিম ব্রাদারহুড জানিয়েছে সিসি'র নেতৃত্বে দেশে কোন স্থিতিশীলতা আসবে না৷ লন্ডন থেকে টেলিফোনে মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্য ইব্রাহিম মুনির সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, ‘‘সিসি সেনা অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং এখন প্রেসিডেন্ট হতে চাইছেন৷ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে প্রতিদিন মানুষ হত্যা করছেন তিনি৷'' এদিকে সিসির ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে মুরসি সমর্থক ছাত্রদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে এক ছাত্র নিহত হয়৷
বিচারের মুখোমুখি ব্রাদারহুড
হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে বুধবার নিষিদ্ধ ঘোষিত মুসলিম ব্রাদারহুডের ৭১৫ সদস্যকে বিচারের মুখোমুখি করার নির্দেশ দিয়েছে মিশরের আদালত৷ এদের মধ্যে মুসলিম ব্রাদারহুডের শীর্ষ নেতা মোহাম্মদ বাদিয়েও রয়েছেন৷ একই অপরাধে সোমবার ব্রাদারহুডের ৫২৯ জন কর্মীকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত৷
২০১৩ সালের ১৪ অগাস্টে দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ মিনায় সহিংসতা, হত্যার উসকানি, লোকজনের ওপর হামলা, সরকারি ও ব্যক্তিগত সম্পত্তি ধ্বংসের অভিযোগে মুসলিম ব্রাদারহুডকে অভিযুক্ত করে৷ ঐসময় আন্দোলন দমনে ব্রাদারহুড কর্মীদের অবস্থানস্থলে অভিযান চালায় মিশরের নিরাপত্তা বাহিনী৷ ওই অভিযানে ব্রাদারহুডের কয়েকশ' সদস্য নিহত হন৷ আর হাজার হাজার ব্রাদারহুড কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ এই সহিংসতার জের ধরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ব্রাদারহুড সদস্যদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়৷ মঙ্গলবার একই আদালতে আরো ৬৮৩ জন সদস্যের শুনানি হয়৷
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, একসঙ্গে এত মানুষকে প্রাণদণ্ড দেয়া আন্তর্জাতিক আইন বিরোধী৷ এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি জর্ডান সফরের সময় এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, মৃত্যুদণ্ড পথ থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন৷ মোহাম্মদ মুরসিও গত ৩রা জুলাই আটক হওয়ার পর থেকে এখনো পর্যন্ত বেশ কয়েকবার বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন৷
এপিবি/এসবি (এপি, এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)