মিশর
১০ ডিসেম্বর ২০১২গত সপ্তাহে মিশরের পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত ছিল যে হুসনি মুবারক-বিরোধী আন্দোলনের কথাই মনে পড়ছিল সবার৷ সরকার ও বিরোধীদলের সমর্থকদের সংঘের্ষ তখন ছয়জন মারা যায়৷ প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের বাইরে সেনা মোতায়েন করে, কামান বসিয়ে সাময়িকভাবে সামাল দেয়া হয় পরিস্থিতি৷ তবে শনিবার আশা করা হয়েছিল টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে গিয়ে হয়ত প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুরসি বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতায় গিয়ে শান্তি ফেরানোর কোনো উপায়ের কথা বলবেন৷ মুরসির নেতৃত্বাধীন মুসলিম ব্রাদারহুড সরকারের কাছ থেকে সে রকম আশাই করা হচ্ছিল শুরু থেকে৷
গত জুনে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দলটি৷ কিন্তু ২২শে নভেম্বর মুরসি একটি ডিক্রি জারি করায় বিক্ষোভে উন্মাতাল হয়ে ওঠে মিশর৷ ডিক্রির মাধ্যমে মুরসি নিজের ও দলের ক্ষমতা বাড়াতে চাইছেন – এ অভিযোগে বিক্ষোভ শুরু করে সরকার বিরোধীরা৷ পরে মিশরের প্রথম গণতান্ত্রিক সরকার নতুন সংবিধানের খসড়া সংসদে অনুমোদন করিয়ে আগুনে যেন ঘি ঢেলে দেয়৷ সংবিধানের খসড়া সব বিরোধী দল এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু খ্রিষ্টানদের প্রতিনিধিরা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন৷ তাঁদের দাবি, প্রস্তাবিত সংবিধান ‘অগণতান্ত্রিক' এবং সেখানে নাগরিকের সব মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি নেই, নারী অধিকারের প্রশ্নটিও সেখানে গুরুত্ব পায়নি৷
শনিবারের ভাষণে ২২শে নভেম্বরে জারি করা ডিক্রি প্রত্যাহার করে নেন মুরসি৷ তবে সঙ্গে এ-ও জানান, নতুন সংবিধানকে কার্যকর করার জন্য ১৫ই ডিসেম্বর যে গণভোট হবার কথা তা যথারীতি হবে৷ বিরোধী দলগুলোকে এ নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি৷
মিশরের প্রধান বিরোধী দলগুলো সে আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে প্রতিবাদ বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে৷ সোমবারও প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের বাইরে সমবেত হয়েছেন বিক্ষোভকারীরা৷ মঙ্গলবার দেশব্যাপী অবরোধের কর্মসূচিও রয়েছে তাঁদের৷ তবে বিক্ষোভ ঠেকাতে আগের চেয়ে আরো কঠোর অবস্থান নিয়েছেন মুরসি৷ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনীকে আরো ভালোভাবে মাঠে নামানো হচ্ছে৷ শুধু পুলিশ নয়, গণভোট শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত সেনাবাহিনীও পারবে যে কাউকে গ্রেপ্তার করতে৷ সোমবার এক আদেশের মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে এ ক্ষমতা দিয়েছেন মুরসি৷ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এবং সেনাবাহিনীর সূত্র খবরটি নিশ্চিত করেছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে৷
এসিবি/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি)