মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফর
২৪ জুন ২০১৩ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্ট্র্যাটিজিক সহযোগিতাকে সমতার ভিত্তিতে আরো ‘ফাইন-টিউনিং' করতে এই কৌশলগত সংলাপ একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া৷ চীন, মিয়ানমার, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান পরিবৃত ভারতকে দক্ষিণ এশিয়ায় নিজেদের প্রভাব কায়েম রাখতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যেমন দরকার৷ তেমনি বিশ্ব নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক কূটনীতির কাঠামোয় নিজের জায়গা করে নিতে হলে ওয়াশিংটনকে পাশে না পেলে নতুন দিল্লির পক্ষে তা সম্ভব নয়৷
পরমাণু উপকরণ সরবরাহকারী গোষ্ঠী, ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ সংস্থা, অস্ট্রেলিয়ান গোষ্ঠীর মতো চারটি রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ সংস্থায় ভারতকে যুক্ত করতে তৎপর ওবামা প্রশাসন৷ সেটা হলে পরবর্তী ধাপে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভিটো ক্ষমতাসহ স্থায়ী সদস্যপদ লাভে ভারতের কণ্ঠ আরো জোরালো হবে৷
ভারত-মার্কিন স্ট্র্যাটিজিক সংলাপ একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া৷ ২৪শে জুন নতুন দিল্লির বৈঠকে উঠে আসবে বিভিন্ন বিষয়৷ অ্যাজেন্ডার শীর্ষে আছে অর্থনৈতিক এবং দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যু৷ এছাড়া আছে বেসামরিক পরমাণু সহযোগিতা চুক্তির বাস্তবায়নের অগ্রগতি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, মহাকাশ গবেষণা, জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি৷ অর্থনৈতিক দিক থেকে উদীয়মান শক্তি হিসেবে মার্কিন বিনিয়োগের জন্য ভারতের বাজার আরো খুলে দেবার কথা বলতে পারেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি৷
পাশাপাশি ভারতের তরফে দক্ষ ভারতীয় কর্মীদের কর্মসংস্থান তথা অভিবাসনের বিধিনিষেধ আরো উদার করার জন্য মার্কিন প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হতে পারে৷ উল্লেখ্য, ভারতে যেসব মার্কিন কোম্পানি আউট সোর্সিং করে ওবামা প্রশাসন তাদের কর সুবিধা দিতে নারাজ৷ দিল্লির কূটনৈতিক মহলের মতে নতুন দিল্লি বৈঠকে উল্লেখযোগ্য সাফল্য হয়ত আসবে না, কারণ এটা দীর্ঘমেয়াদী বিষয়৷
বর্তমানে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির দুটি কন্টকিত ইস্যু এই মুহূর্তে আফগানিস্তান এবং সিরিয়া৷ আফগনিস্তানের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম৷ এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা জানতে চাইবে ভারত৷ ভারত চায় এক স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ আফগানিস্তান৷ ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল অবধি তালিবান শাসনে ভারতের নিরাপত্তা যেভাবে বিঘ্নিত হয়েছিল, তাতে পুনরায় তালিবান শাসন ভারতের কাম্য হতে পারে না৷ অথচ আফগানিস্তানে বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ করতে তালিবানরা শান্তিবৈঠকে সক্রিয়৷
২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ন্যাটো বাহিনী পর্যায়ক্রমে আফগানিস্তান থেকে সরে যেতে শুরু করলে তৈরি হবে সেই রাজনৈতিক শূন্যতা৷ ভারতের সিরিয়া নীতির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র একমত নয়৷ সেটা নিয়ে ভারতের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ কোনো প্রত্যাশা না থাকারই কথা৷