জামায়াত ‘‘সন্ত্রাসী সংগঠন’’
১৬ জুলাই ২০১৩জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ৷ গোলাম আযমের সর্বোচ্চ শাস্তি না হয়ে ৯০ বছরের কারাদণ্ডে হতাশ হলেও তিনি বলেন, এই রায়ের কিছু ঐতিহাসিক দিক আছে৷ তাঁর কথায়, ট্রাইব্যুনাল-১-এর এই রায়ের মধ্য দিয়ে একাত্তরে বাংলাদেশে গণহত্যার বিষয়টি আদালতের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে৷ আর গোলাম আযম এই গণহত্যার বে-সামরিক প্রধান বা ‘মাস্টার মাইন্ড'৷ তিনিই ছিলেন এর সুপিরিয়র কমান্ড৷ এছাড়া, জামায়াতে ইসলামী একাত্তরে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে কাজ করেছে৷ সেই জামায়াতের পূর্ব-পাকিস্তানের নেতৃত্বে ছিলেন গোলাম আযম৷
তুরিন আফরোজ জানান, আদালত তার রায়ে এসব কথা স্পষ্ট করেই বলেছে৷ শুধু তাই নয়, আদালত বলেছে যে জামায়াতে ইসলামী এবং তার নেতা গোলাম আযম একাত্তরের পরও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ভূমিকা থেকে সরে আসেনি৷ আদালত আরো জানায়, কোনো সরকারি পদে যেন মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি আসীন না হতে পারে, তার দায়িত্ব সরকারের৷ তাই সরকারেরই এ ব্যাপারে দায়িত্ব নিতে হবে৷
তুরিন আফরোজ বলেন, গোলাম আযমের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ার পরও আদালত তার বয়স এবং শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে তাকে মৃত্যুদণ্ডযোগ্য অপরাধে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে৷ কিন্তু ১৯৭৩ সালের মানবতাবিরোধী আইনে কোনো আসামির বর্তমান বয়স এবং শারীরিক অবস্থাসহ কোনো ধরনের প্রেক্ষিত বিবেচনায় নেয়ার সুযোগ নেই৷ শুধু মাত্র তিনি যে সময়ে অপরাধ করেছেন, সেই সময়ের অবস্থাকেই বিচেনায় নেয়া যায়৷ তাই এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে৷
তিনি বলেন, এই রায়ে জামায়াতে ইসলামীকে আদালত সন্ত্রাসী সংগঠন বলায় দল হিসেবে জামায়াতেরও বিচারের সুযোগ তৈরি হয়েছে৷ সেই দিকটিও বিবেচনা করছেন তারা৷
তবে তুরিন আফরোজ মনে করেন, গোলাম আযম এবং তার দল একাত্তরের পরও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে অবস্থান নিয়েছে তার জন্য রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগের সুযোগ আছে৷ এই সব অপরাধের কথা রায়েও রায়েছে৷ তাই তুরিন আফরোজের ধারণা, শুধু হতাশ না হয়ে আরো বড় আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে হবে৷
এদিকে, এই রায়ের প্রতিবাদে গণজাগরণ মঞ্চ ও জামায়াতে ইসলামী মঙ্গলবার ঢাকাসহ সারা দেশে পাল্টা-পাল্টি হরতাল ডেকেছে৷ গণজারণ মঞ্চ হরতাল ডেকেছে গোলাম আযমের সর্বোচ্চ শাস্তি, মানে মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে৷ আর জামায়াত হরতাল ডেকেছে গোলাম আযমের মুক্তির দাবিতে৷