মাঠের বাইরের ঘটনায় বেশি আলোচিত ফুটবল ২০১১
২৭ ডিসেম্বর ২০১১মাঠের ঘটনা বলতে গেলে আসে বার্সেলোনা এবং লিওনেল মেসির সাফল্যের কাহিনী৷ এছাড়া ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনাকে টপকে উরুগুয়ের দক্ষিণ অ্যামেরিকার ফুটবলের শীর্ষে পৌঁছে যাওয়ার ঘটনা৷ সাথে রয়েছে জার্মানিতে অনুষ্ঠিত প্রমীলা বিশ্বকাপ ফুটবল আসরে জাপানের শিরোপা জয়৷ তবে এসব কিছুকে ছাড়িয়ে গেছে ফুটবল নিয়ন্ত্রণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা ফিফা'র কর্তা ব্যক্তিদের ঘুস ও দুর্নীতির কেলেঙ্কারি৷
একদিকে ২০১৮ এবং ২০২২ সালে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপ ফুটবল আসর আয়োজনে রাশিয়া এবং কাতারকে নির্বাচন করে সমালোচনার মুখে পড়ে ফিফা কর্তৃপক্ষ৷ আবার গত জুন মাসে অনুষ্ঠিত ফিফা'র প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে ঘুস প্রদানের কেলেঙ্কারি৷ এমনকি এই কেলেঙ্কারির মুখে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন কাতারের মোহামেদ বিন হাম্মাম৷ ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবারও নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সেপ ব্লাটার৷ আর ঘুস প্রদানের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ক্রীড়া জগত থেকে সারাজীবনের জন্য বহিষ্কৃত হন বিন হাম্মাম৷
কিন্তু ফিফা'র স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াতে নির্বাচনের আগে যে ধরনের সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ব্লাটার এখন বছর শেষেও তেমন কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় কিছুটা হতাশ ফুটবল বোদ্ধারা৷ এরই মধ্যে বর্ণবাদী বিদ্বেষ নিয়ে মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েন ব্লাটার৷ তিনি বলেছিলেন যে, খেলার মাঠে খেলোয়াড়দের মধ্যে জাতিগত বিদ্বেষ প্রকাশ পেলে খেলার শেষে করমর্দন করেই তা মিটিয়ে নেওয়া যায়৷ তাঁর এমন মন্তব্যে খেলোয়াড়, কর্মকর্তা থেকে শুরু করে স্পন্সর প্রতিষ্ঠানগুলোও বেশ ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন৷ তবে শেষ পর্যন্ত ব্লাটার ক্ষমা চাইলে বিষয়টি আপাতত চেপে যায়৷
তবে বর্ণবাদী বিদ্বেষমূলক মনোভাব এবং আচরণের অভিযোগে ফেঁসে গেছেন যুক্তরাজ্যের অধিনায়ক জন টেরি এবং উরুগুয়ের সম্মুখভাগের খেলোয়াড় লুই সুয়ারেস৷ প্রায় একই ধরনের অভিযোগে পদচ্যুতির দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছিলেন ফরাসি কোচ লরঁ ব্লঁ৷ অবশ্য শেষ পর্যন্ত ফরাসি ফুটবল ফেডারেশন তাঁর পাশে দাঁড়ানোয় এই দফা বেঁচে গেছেন তিনি৷
আর ২০১১ সালে জার্মানির ফুটবল জগতে ঘটতে যাচ্ছিল ২০০৯ সালের বিয়োগান্তক ঘটনার পুনরাবৃত্তি৷ জার্মান ফুটবল লিগ বুন্ডেসলিগার রেফারি ৪১ বছর বয়সি বাবাক রাফাতি নির্ধারিত খেলার মাত্র দুই ঘণ্টা আগে হোটেল কক্ষে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন৷ তবে সহকর্মীরা তাঁকে শেষ পর্যন্ত রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন৷ ফলে প্রাণে বেঁচে গেছেন রাফাতি৷ নতুবা ২০০৯ সালে জার্মান গোলরক্ষক রবার্ট এঙ্কের মতোই শোকের সাগরে ভাসিয়ে চিরদিনের মতো বিদায় নিতেন রাফাতি৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক