মহাশূন্যে হীরক গ্রহের সন্ধান লাভ
২৬ আগস্ট ২০১১নতুন আবিষ্কৃত এই গ্রহটির বৈজ্ঞানিক কোন নাম এখনও দেওয়া হয়নি৷ তবে ইতিমধ্যে একে হীরক গ্রহ বলে ডাকছেন বিজ্ঞানীরা৷ কারণ, অত্যন্ত উজ্জ্বল দেখতে এই গ্রহটিকে দূর থেকে দেখলে মনে হয়, যেন মহাকাশের অসীম শূন্যে এক খণ্ড হিরার টুকরা জ্বলজ্বল করে জ্বলছে৷ এর কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, নতুন আবিষ্কৃত এই গ্রহটিতে কার্বনের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি৷ উল্লেখ্য, কার্বন ঘন হওয়ার মাধ্যমেই হিরে তৈরি হয়৷ তাই বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই গ্রহটিতে কার্বনের ঘনত্ব অত্যন্ত বেশি হওয়ায় এর ভূপৃষ্ঠ সম্ভবত হিরায় পরিণত হয়েছে৷ শুধু কার্বন নয়, গ্রহটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্রিস্টালাইজড অক্সিজেন৷
গ্রহটির ঘনত্ব কেমন, একটি তথ্য দিলেই সেটি স্পষ্ট হবে৷ অত্যন্ত ছোট এই গ্রহটি আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতির চেয়ে ২০ গুণ বেশি ঘন৷ অতি ঘনত্বের ফলে এর ওজনও বৃহস্পতি গ্রহের চেয়ে কিছুটা বেশি৷ তবে বৃহস্পতি গ্রহে যেমন হাইড্রোজেন এবং হিলিয়াম রয়েছে এই ছোট্ট গ্রহটিতে তেমন কিছু দেখতে পাননি বিজ্ঞানীরা৷ তারা মনে করছেন, কোন এক বিশাল নক্ষত্রের অবশিষ্টাংশ এই গ্রহটি৷ বর্তমানে যে তারা বা নক্ষত্রটিকে কেন্দ্র করে এটি অত্যন্ত দ্রুতগতিতে আবর্তন করছে সেটিও অত্যন্ত উজ্জ্বল, যাকে বিজ্ঞানীরা বলে থাকেন পালজার স্টার৷
অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত ৬৪ মিটার লম্বা, বিশাল আকারের পার্কস রেডিও টেলিস্কোপ দিয়ে মহাশূন্যে এইরকম একটি নক্ষত্রের ওপর নজর রাখা হচ্ছিল৷ এমন সময় বিজ্ঞানীদের চোখে পড়ে নতুন আবিস্কৃত গ্রহটি৷ মাত্র দুই ঘন্টা ১০ মিনিটের মধ্যে এই গ্রহটি তার নক্ষত্রটিকে একবার করে পরিভ্রমণ করছে৷ ভাবুন তো একবার, কী প্রচণ্ড গতিতে এটি মহাকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে৷
কিন্তু এই হীরক গ্রহে কি কোনদিন পৌঁছানো সম্ভব হবে? আপাতত সেটি অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে, কারণ এটি যে পৃথিবী থেকে চার হাজার আলোকবর্ষ দূরে৷ আর এক আলোকবর্ষ মানে ১০ ট্রিলিয়ন কিলোমিটার৷ তাই টুইংকেল টুইংকেল লিটল স্টার, হাউ আই ওয়ান্ডার হোয়াট ইউ আর, শিশুদের মত বিজ্ঞানীদের মনের এই প্রশ্নটিও ঘুরপাক খাবে আরও বহুকাল৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক