মহাকাশে পিৎসা পার্টি!
৭ ডিসেম্বর ২০১৭ইটালির মহাকাশচারী পাওলো নেসপোলি আর পিৎসার বিরহ সহ্য করতে পারছিলেন না৷ তাই নাসা-র স্পেস স্টেশন ম্যানেজার কার্ক শায়ারম্যান গত নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি একটি অর্বিটাল এটিকে ক্যাপসুলে পিৎসা তৈরির মালমশলা পাঠান৷
মালমশলা বলতে পিৎসা তৈরির রুটি, টমেটো সস, চিজ, পেপেরোনি, গোটা অলিভ, অলিভ তেল, অ্যানচভি পেস্ট ও পেস্টো৷ এত কিছু পাওয়ার পরও পিৎসা তৈরি না করতে পারলে আর নভশ্চর হয়েছেন কেন আইএসএস-এর ছয় মাল্লা! রুটিতে টমেটো সস মাখিয়ে, তার ওপর চিজ ছড়িয়ে, পছন্দমতো বাকি টপিংগুলো বসিয়ে...
গোলমালটা সেখান থেকেই, কেননা ‘কাঁচা’ পিৎসাগুলোকে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে পুরে সেই প্যাকেটটা একটা ধাতব বাক্সে পুরে তবে ওভেনে গরম করতে দিতে হবে – হাজার হোক ‘কিচেন’-টা ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪০০ কিলোমিটার উপরে, ঘণ্টায় ১৭,৫০০ মাইল গতিতে পৃথিবীকে চক্কর দিচ্ছে ও প্রতি ৯২ মিনিট অন্তর সূর্যোদয় দেখছে৷
পিৎসা গরম হতেও যে খুব বেশি সময় লেগেছে, এমন নয়৷ কিন্তু রান্নার পর ধেড়ে-বুড়ো মহাকাশচারীরা যেভাবে খাবার নিয়ে খেলা করতে শুরু করলেন, তাদের গিন্নি কিংবা ছেলেপিলেরা তা দেখলে যে কি বলতেন, তা জানতে ইচ্ছে করে৷ ওগুলো যেন পিৎসা নয়, ফ্রিসবি খেলার চাকতি! তবে ভারশূন্যতার সুবিধে হলো এই যে, প্লেট থাকুক আর না থাকুক, খাবার মাটিতে পড়ে না, বাতাসেই ভাসতে থাকে৷ সাধে কি আর কমান্ডার ব়্যান্ডি ব্রেসনিক এই ‘স্পেস পিৎসা’-র নাম দিয়েছেন খাওয়া যায়, এমন ফ্লাইং সসার?
নেসপোলি স্বয়ং নাকি পিৎসার স্বাদ ‘অপ্রত্যাশিত রকম’ ভালো লেগেছে৷ না লাগলেও কোনো আপত্তি ছিল না, কেননা, তিনি আইএসএস-এ আছেন গত জুলাই মাস থেকে৷ আগামী ১৪ই ডিসেম্বর তিনি ধরাধামে ফিরবেন ব্রেসনিক ও আরো একজন রুশ নভোচারীর সঙ্গে; ক্যাপসুল নামবে কাজাকস্তানের মরুভূমিতে৷
সেখানে পিৎসার ব্যবস্থা থাকবে কি? নাকি বেচারা পাওলোকে ইটালি পৌঁছানো অবধি অপেক্ষা করতে হবে?
এসি/এসিবি (নাসা, এপি)