ঘিলুর কোনো যন্ত্রণাবোধ নেই?
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ইচিলভ হাসপাতালে নাওমির ব্রেন অপারেশন হয়৷ ব্রেন অপারেশন বলতে, তাঁর মস্তিষ্কে একটি ‘(ব্রেন) পেসমেকার' বসানো হয়৷ নাওমি ২০ বছর যাবৎ একটি ‘ট্রেমর' বা কাঁপুনিতে ভুগছেন৷ লিথুয়ানিয়া থেকে আগত সংগীতশিল্পীকে ঐ হাত কাঁপার দরুণ কনসার্ট শিল্পী হওয়া ছেড়ে শুধু বেহালা শেখানোর কাজে নিজেকে সীমিত রাখতে হয়েছে৷ এবার সেই কাঁপুনি দূর করার শেষ প্রচেষ্টা: মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করে৷
মগজে এক দশমিক তিন মিলিমিটারের একটি ইলেকট্রোড বসানো হবে ব্রেনের পেসমেকার হিসেবে – হার্টের যেমন পেসমেকার থাকে৷ তার জন্য মাথার খুলিতে একটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ফুটো করে তার ভেতর দিয়ে ইলেকট্রোডটি ঢোকানো হয়৷ এ সবই লোকাল অ্যানাস্থেশিয়া দিয়ে, অর্থাৎ শুধু সেই স্থানটুকু অবশ করে৷ শেষ প্রশ্ন থেকে যায়: মস্তিষ্কের ঠিক কোন জায়গায় ইলেকট্রোডটি বসানো হবে?
ইচিলভ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ইটঝাক ফ্রিড জানালেন: ‘‘ইলেকট্রোডটা সঠিক জায়গায় বসানোর জন্য পেশেন্টের সক্রিয় সহযোগিতা প্রয়োজন৷ সেজন্য আমরা নাওমি এলিশুভকে অনুরোধ করেছি, তিনি যেন অপারেশন চলার সময় বেহালা বাজান৷'' নাওমি অবশ্যই তা করেছেন, এবং সেই অপারেশনের ফল হয়েছে আশ্চর্য: ‘‘আমরা যখন সঠিক জায়গায় স্টিমিউলেশনটি অ্যাকটিভেট করি, তখন নাওমির কাঁপুনি দূর হয়ে যায় – তিনি মন-প্রাণ দিয়ে মোৎসার্ট বাজাতে থাকেন, কিন্তু কোনোরকম ট্রেমর ছাড়াই৷''
অপারেশনের ফলাফলে প্রফেসর ফ্রিড খুশি, তবে সবচেয়ে বেশি খুশি নাওমি স্বয়ং: ‘‘আমি বেহালা বাজাব, কাগজ-পত্রে স্বাভাবিক ভাবে সই করব, পেয়ালা না কাঁপিয়ে, চা না ফেলে চা খাব৷'' তাঁর একমাত্র দুঃখ হলো, তিনি এর আগে এমন আশ্চর্য একটি অপারেশেনের কথা শোনেননি কেন৷ নয়ত এর অনেক আগেই স্বাভাবিক জীবনে প্রত্যাবর্তন করতে পারতেন৷
জেনে রাখা ভালো যে, মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচার অনেক ক্ষেত্রেই পেশেন্টকে পুরোপুরি অজ্ঞান না করে হয়৷ এর ফলে চিকিৎসকরা আরো ভালোভাবে দেখতে পারেন, মস্তিষ্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলি অস্ত্রোপচারের সময় কাজ করছে কিনা৷ মস্তিষ্কের আসল উপাদান – অর্থাৎ ঘিলুর কোনো যন্ত্রণাবোধ নেই৷
এসি/ডিজি (ডিপিএ)