1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভিডিও চালিয়ে খুন উদয়পুরে, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা

২৯ জুন ২০২২

চরম সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা উদয়পুরে। এক দর্জিকে ভিডিও চালিয়ে খুন করেন দুইজন। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে। গোটা রাজস্থানে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ।

https://p.dw.com/p/4DPLy
দর্জিকে হত্যা করার পর উদয়পুরে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ।
দর্জিকে হত্যা করার পর উদয়পুরে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ।ছবি: ANI/REUTERS

মহানবীকে (সা:) বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র নূপুর শর্মা। তা নিয়ে জলঘোলাও হয়েছিল অনেক। নূপুর শর্মার সমর্থনে সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন রাজস্থানেরউদয়পুরের কানহাইয়া লাল নামের এক দর্জি। তারই জেরে দর্জির দোকানে ঢুকে ক্যামেরার সামনে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে দুই ব্যক্তি। অভিযুক্তদের নাম গোস মহম্মদ এবং রিয়াজ। ঘটনাটি ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে উদয়পুরে। পুলিশ ওই দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। উদয়পুরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। গোটা রাজস্থানে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ।

কানহাইয়া লাল দিনকয়েক আগে সমাজ মাধ্যমে নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের সমর্থনে একটি পোস্ট করেছিলেন। যা নিয়ে তখনই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। ওই দর্জির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারও করে। দর্জি অবশ্য জানিয়েছিলেন, তিনি সমাজমাধ্যম ব্যবহার করতে জানেন না। তার নাবালক ছেলে ভুল করে ওই পোস্ট করে ফেলে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষকে থানায় ডেকে বিষয়টির মীমাংসার চেষ্টা করে। মুক্তি পান কানহাইয়া।

পুলিশি হেফাজত থেকে ফিরে কানহাইয়া ফের নিজের দোকান খোলেন। মঙ্গলবার সেই দোকানে ঢোকে গোস মহম্মদ এবং রিয়াজ। তারা প্রথমে কানহাইয়া লালকে জামার মাপ নেওয়ার অনুরোধ জানান। ইতিমধ্যে তারা মোবাইল ক্যামেরায় ভিডিও করতে শুরু করে। কানহাইয়া যখন মাপ নিচ্ছেন, তখনই তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন এক ব্যক্তি। ক্যামেরার সামনেই তাকে কুপিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়। নূপুর শর্মাকে সমর্থন জানানোর জন্যই তারা একাজ করেছে বলে জানায়। এরপর প্রধানমন্ত্রীকেও হুমকি দেয় তারা।

ঘটনাটি কিছুক্ষণের মধ্যেই সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ তদন্ত করতে নেমে জানায়, দুই অভিযুক্ত পালিয়েছে। পরে অবশ্য তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু ঘটনাটি ঘিরে উদয়পুরে তীব্র উত্তেজনা শুরু হয়। রাজস্থান-সহ গোটা ভারতেই সমাজ মাধ্যমে এনিয়ে বিতর্ক শুরু করে নেটিজেনরা।

সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা কমাতে প্রশাসন গোটা রাজস্থানে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেয়। উদয়পুরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ডাকা হয়। বুধবার সকালে সেখানে এনআইএ-এর দল পৌঁছায়। তারা আরো বেশ কিছু ব্যক্তিকে আটক করেছে।

ঘটনাটির পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফে নিন্দা করা হয়। রাহুল গান্ধী থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলেই ঘটনার নিন্দা করে টুইট করেছেন।

উদয়পুরের প্রশাসন জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে। সমাজমাধ্যম এবং সংবাদমাধ্যমে খুনের ভিডিও প্রচার না করার অনুরোধও করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট বলেছেন, সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্যই খুন করা হয়েছে কানহাইয়াকে। প্রশাসন অত্যন্ত কড়া হাতে বিষয়টি দেখছে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই, এএনআই)