‘ভারতের আদিবাসীরা শোষিত-বঞ্চিত’ বলছে উইকিলিক্স
২৮ মে ২০১১উইকিলিক্স বলছে, ভারতের প্রায় সাড়ে আট কোটি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উপর চলতে থাকা শোষণ ও বঞ্চনা বন্ধে ভারত সরকার অনিচ্ছুক এবং অপারগ বলে মনে করেন মার্কিন কূটনীতিকরা৷ ওয়াশিংটনের আশঙ্কা, ভারত সরকারের এই অবহেলা নক্সালপন্থীদের পথ সুগম করে দিয়েছে৷ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে মাওবাদী চরমপন্থীদের সন্ত্রাসী তৎপরতার জন্য এটা সহায়ক বলেই ইঙ্গিত এল এই গোপন দলিল থেকে৷ দ্রুত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দিকে ভারত সরকারের মনোযোগকে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য কাল হিসেবে দেখিয়েছে উইকিলিক্স৷ তারা বলছে, সেখানে দ্রুতহারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং ঊর্ধ্বমুখী অর্থনীতি বনাঞ্চল এবং আদিবাসীদের সম্পদ হ্রাস করে তাদের জীবনযাত্রাকে হুমকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে৷
সম্প্রতি ভারত সরকার ‘বন অধিকার আইন অনুমোদন' করে বন সম্পদের উপর আদিবাসীদের অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে৷ কিন্তু তারপরও বিশেষভাবে গ্রথিত এবং দুর্নীতিমূলক স্বার্থসিদ্ধিই বনাঞ্চলকে ধ্বংস করছে বলে উল্লেখ করেছে উইকিলিক্স৷ আর এক্ষেত্রে ঘুষ প্রদানসহ নানা অনৈতিক উপায়ে সরকারি কর্মকর্তাদের সহযোগিতা নিয়ে বনাঞ্চল ও সম্পদের উপর নিজেদের দখলদারিত্ব বজায় রাখছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল৷ সারাদেশ জুড়েই আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য এটা একটা বড় সমস্যা বলে উল্লেখ করা হয়েছে সেই দলিলে৷ এছাড়া ভারতের অধিকাংশ মানুষই দেশের উন্নয়নের পথে আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে অন্তরায় বলে মনে করে৷ তাই তাদেরকে বনাঞ্চল থেকে সরিয়ে বরং সমাজের মূল স্রোতধারার সাথে একীভূত করার পক্ষেই তাদের মত৷
অথচ এভাবে জোর করে সমাজের মূলধারায় আনতে আদিবাসীদের উপর চাপ দেওয়ায় তাদের মানসিক এবং শারীরিক অবস্থার উপর এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে বলে আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘সারভাইভালস' এর ‘প্রোগ্রেস ক্যান কিল' নামক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে৷ সংস্থাটির পরিচালক স্টিফেন করি বলেন, ভারতের আদিবাসীদের মূলধারায় আনার অর্থ দাঁড়াচ্ছে এমন যে তারা ভূমিহীন শ্রমিক হিসেবে সমাজের সর্বনিম্ন শ্রেণীতে গিয়ে দাঁড়াতে বাধ্য হচ্ছে৷ তাই আদিবাসীদের শোষণ ও বঞ্চনা বন্ধে ভারত সরকারের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করেন তিনি৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক