1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতে করোনা আক্রান্ত এক লাখ ছাড়ালো

১৯ মে ২০২০

সোমবার পাঁচ হাজারেরও বেশি লোক করোনায় আক্রান্ত হলেন। আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে রেকর্ড বৃদ্ধি হলো। করোনা সংক্রমণের কারণে বন্ধ করা হয়েছে একটি সংবাদ মাধ্যমের দফতর। 

https://p.dw.com/p/3cRMP
ছবি: DW/P. Tewari

লকডাউনের কড়াকড়ি শিথিল করার পর ভারতে করোনায় আক্রান্তর সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। মঙ্গলবার সকালে তা এক লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছে। মৃতের সংখ্যাও বেড়ে হয়েছে তিন হাজার ১৬৩। অ্যামেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলির তুলনায় সংখ্যাটি যথেষ্টই কম। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে করোনা পরীক্ষা ওই সব দেশের তুলনায় অনেক কম হয়েছে। মৃতের সংখ্যা নিয়েও বারবার অভিযোগ উঠেছে, অনেক রাজ্যই তা কমিয়ে দেখাচ্ছে।

আগে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে এই অভিযোগ উঠেছিলো। এ বার দিল্লি নিয়েও উঠেছে। সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়্যার দিল্লির সব শ্মশান ও কবরস্থানের হিসাব নিয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, নিগমবোধ ও পাঞ্জাবি বাগ শ্মশানে ২২৫টি অন্ত্যেষ্টি করোনায় মৃতের জন্য বিধিনিষেধ মেনে হয়েছে। আইটিও-র কবরস্থানেও ৮৯টি মরদেহ একইভাবে সমাহিত হয়েছে। তাঁদের হিসাব, এই তথ্য ধরলে দিল্লিতে মৃতের সংখ্যা গত শনিবার পর্যন্ত হওয়া উচিত ৩১৪। অথচ সরকারিভাবে তখন দিল্লিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা ছিলো ৬৮ জন। সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন হলো, করোনায় কতজন মারা গিয়েছেন? ঠিক সংখ্যা জানানোর ক্ষেত্রে এরকম রহস্যময় আচরণ কেন?

তবে এই করোনা ও লকডাউনের বাজারে দুইটি ঘটনা সমানে বেড়ে চলেছে। আক্রান্তের সংখ্যা এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্ঘটনায় মৃত্যু। অর্থনীতি ও লোকের কর্মসংস্থানের স্বার্থে লকডাউন অনেকটাই শিথিল করার দরকার ছিলো। তা করলে যে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে তা বোঝা গিয়েছিলো। কিন্তু যা বোঝা যাচ্ছে না, তা হলো, পরিযায়ী শ্রমিকরা কেন এ ভাবে প্রতিদিন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাবেন? একে তো তাঁদের হেঁটে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে বা নিজের ব্যবস্থাপনায় ট্রাকে করে যেতে হচ্ছে। তার ওপর প্রতিদিনই তাঁরা দুর্ঘটনার মুখে পড়ছেন। সোমবার রাতে মহারাষ্ট্রের সোলাপুর থেকে ঝাড়খণ্ডে একদল শ্রমিক বাসে করে যাচ্ছিলেন। মহারাষ্ট্রের ইয়াবতামালে বাসের সঙ্গে ট্রাকের ধাক্কা লাগে। চারজন শ্রমিক মারা গিয়েছেন। ১৫ জন আহত। বিহারেও ট্রাক ও বাসের ধাক্কায় নয় জন পরিযায়ী শ্রমিক মারা গিয়েছেন। আহত বহু। এই দুর্ঘটনা ঘটেছে ভাগলপুরে। 

রাজ্য সরকারগুলি এখন চাপে পড়ে কিছু বাসের ব্যবস্থা করছে। উত্তর প্রদেশে ক্রমাগত সমালোচিত যোগী আদিত্যনাথ সরকারও করেছে। এমনকী কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধীকেও জানানো হয়েছে, তিনি যে হাজারখানেক বাসের কথা বলেছিলেন, সেগুলিকেও রাজ্যে ঢোকার অনুমতিদেওয়া হবে। এর আগে প্রিয়ঙ্কা জানিয়েছিলেন, তাঁদের জোগাড় করা বাস উত্তর প্রদেশ সীমান্তে আটকে দেওয়া হয়েছে। তখন অবশ্য বিজেপি বলেছিলো, প্রিয়ঙ্কা 'ড্রামাবাজি' করছেন। শেষ পর্যন্ত চাপে পড়ে তাও মেনে নিতে হচ্ছে যোগী সরকারকে।

দিল্লিতে কর্মীদের করোনা ধরা পড়ায় একের পর এক মন্ত্রকের অফিস সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এর আগে রেলভবন বন্ধ রাখতে হয়েছিলো। এ বার রামবিলাস পাসওয়ানের অসামরিক সরবরাহ মন্ত্রকের অফিস এবং মন্ত্রীর চেম্বার দুই দিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কারণ, একজন কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং তিনি অফিসে গিয়েছিলেন ও সারাদিন কাজ করেছেন। সংবাদমাধ্যমের দফতরেও করোনার সংক্রমণ ঘটেছে। সোমবার জি নিউজ জানিয়েছে তাদের ২৮ জন কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যার জেরে সাময়িক ভাবে জি নিউজের দফতর এবং স্টুডিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে জি নিউজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আক্রান্ত সকলেই শারীরিক ভাবে স্থিতিশীল। তাঁদের চিকিৎসা চলছে।

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই)