1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ‘কাঁটাতার’

১৯ জানুয়ারি ২০২৪

নতুন সরকার। মন্ত্রিসভায় রদবদল। ভারত কীভাবে দেখছে শেখ হাসিনার নতুন সরকার? কী চ্যালেঞ্জ আছে দুই দেশের সম্পর্কে?

https://p.dw.com/p/4bSis
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী
গত এক দশকের মধ্যে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বাংলাদেশ বড় সংকটে পড়তে যাচ্ছে বলে মনে করেন অনেক বিশ্লেষকছবি: Naveen Sharma/ZUMA/IMAGO

দিল্লিতে তখন জি-২০ বৈঠক চলছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রায় মধ্যরাতে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কতটা গুরুত্বপূর্ণ, গোটা বৈঠক জুড়ে পরতে পরতে সে কথাই বলছিলেন তিনি। এরপর ওয়ান টু ওয়ান সাক্ষাৎকারে তাকে নির্দিষ্টভাবে তিনটি প্রশ্ন করেছিল এই অর্বাচীন সাংবাদিক। সীমান্তহত্যা, তিস্তা এবং নির্বাচনে ভারতের ‘নাক গলানো’ নিয়ে তার কী বক্তব্য, সে বিষয়ে কী কথা হলো মোদীর সঙ্গে।

খানিক উত্তেজিত হয়েই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, এসব সাংবাদিকদের অতিকথন। সীমান্তহত্যা নিয়ে দুই দেশ অনেক আগেই একটি সমাধানসূত্রে পৌঁছেছে। সীমান্ত অঞ্চলে হত্যার সংখ্যাও আগের চেয়ে অনেক কমেছে। আর তিস্তা নিয়ে তার অভিমত আরো স্পষ্ট-- ‘‘জল অনেকটাই গড়িয়েছে।’’

সীমান্তহত্যা নিয়ে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বয়ানের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মানবাধিকার কর্মীদের বয়ানই মেলে না। পশ্চিমবঙ্গের মানবাধিকারকর্মীদের কথায় যাওয়ার আগে একবার মনে করে দেখা যাক, জি-২০ অনুষ্ঠিত হওয়ার ঠিক একবছর আগে দিল্লিতে কী ঘটেছিল।

প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করতে দিল্লিতে এসেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। যে বিষয়গুলি নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছিল, তার একেবারে গোড়ার দিকে ছিল সীমান্তহত্যার বিষয়টি। আশ্চর্যের বিষয় হলো, ভারত বরাবরই এই বিষয়টিকে ততটা গুরুত্ব দিয়ে দেখে না। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী হাসিনা আলাদা করে এ বিষয়ে কথা বলেছিলেন মোদীর সঙ্গে। সত্যিই কি এক বছর সীমান্ত হত্যা বন্ধ থেকেছে?

মানবাধিকারকর্মী কিরীটি রায় মনে করেন, পরিস্থিতি বদলায়নি। এই মানবাধিকারকর্মীর বক্তব্য, ''শুধু হত্যা নয়, সীমান্তে নিরাপত্তারক্ষীদের অত্যাচার দীর্ঘদিনের অভিযোগ। গত কয়েক বছরে এই ধরনের অভিযোগের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বেড়েছে হত্যার সংখ্যাও। এবং ঘটনাগুলি দুইপারেই ঘটছে।'' মানবাধিকার সংগঠন মাসুমের সাম্প্রতিক রিপোর্টেও এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ, বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বয়ানের সঙ্গে মাঠের তথ্য মিলছে না।

তিস্তা চুক্তি নিয়েও জল যে আর খুব বেশি দূর গড়ানো মুশকিল, কূটনৈতিক মহলের আলোচনাতে তা অনেকটাই স্পষ্ট। বস্তুত, মোদী-হাসিনার ওই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বেশ কিছু নদীর জলবন্টন চুক্তি হলেও তিস্তার আলোচনাও সামনে আসেনি। জি-২০ বৈঠকের সময় দ্বিপাক্ষিক আলোচনাতে এমন আলোচনা হয়েছে বলে এখনো পর্যন্ত কোনো খবর নেই। অদূর ভবিষ্যতেও তা হবে বলে কোনো ইঙ্গিত নেই।

জাম্পকাটে এবার নির্বাচন পরবর্তী বাংলাদেশের দিকে নজর দেওয়া যাক। শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির সঙ্গে সম্প্রতি একান্ত আলাপচারিতায় শুনছিলাম, প্রধানমন্ত্রী এক স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মন্ত্রিসভা তৈরি করতে চাইছেন এবার। এবং সে কারণেই বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে মন্ত্রিসভায়। সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল, ভারত-বাংলাদেশ কূটনীতির ক্ষেত্রেও কি কিছু পরিবর্তন দেখা যাবে? অফ দ্য রেকর্ডও সে কথা বলতে চাননি সেই সুহৃদয় ব্যক্তি।

কিন্তু ভারতের কূটনৈতিক মহলে সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। বাংলাদেশ কতটা চীনপন্থি আর কতটা ভারতবন্ধু মনোভাব নেবে, ভারত তা গোড়াতেই বুঝে নিতে চায়। একদিকে যখন ‘মালদ্বীপ সংকট’ শুরু হয়েছে, তখন এই প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর বুঝে নেওয়া ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের নির্বাচনের ঠিক আগে আগরতলা-আখাউড়া এবং চট্টগ্রাম পর্যন্ত রেললাইনের উদ্বোধনে থেকে মোদী বুঝিয়ে দিয়েছেন, ভারত সম্পর্ক আরো উন্নত করে ব্যবসা বাড়াতে চাইছে। বাংলাদেশও কি চাইছে? নাকি বাংলাদেশ তিস্তা এবং সীমান্তহত্যার প্রসঙ্গ আবার সামনে এনে ভারতকে চাপে ফেলার চেষ্টা করবে!

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান