লিঙ্গবৈষম্যমূলক বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ?
২৮ জুলাই ২০১৭শুধু ‘গুড মর্নিং অ্যামেরিকা' অনুষ্ঠানেই নয়, বিশ্বের সব মিডিয়া প্রতিষ্ঠানেই দৃশ্যত এই ছোট্ট খবরটা দায়িত্বশীলদের টনক নেড়েছে – যার একটা কারণ সম্ভবত মিডিয়ার জগতের সঙ্গে বিজ্ঞাপনের জগতের কুটুম্বিতার সম্পর্ক৷
মনে রাখা দরকার, বিষয়টা লিঙ্গবৈষম্য নিয়ে নয় – ছোটদের বিজ্ঞাপনে তারা আজ কী, ও ভবিষ্যতে কী হবে বা হবার স্বপ্ন দেখবে, তাই নিয়ে৷ ছোটরা খোঁজে আদর্শ বা রোল মডেল: তারা বাড়িতে যা দেখে, সেই বাবা-মা, দাদা-দাদি আদর্শ হতে পারেন; আবার বিজ্ঞাপনের জগতের ছোট ছোট ছেলেমেয়ে থেকে শুরু করে কাল্পনিক বাবা-মা, দাদা-দাদি, তারাও আদর্শ হতে পারেন৷
বিজ্ঞাপনে যখন দেখানো হয়, ওয়াশিং পাউডার যাইহোক না কেন, একটি পরিবারে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মহিলারা – শুধুই মহিলারা – ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ভরে আসছেন; পক্ষান্তরে পুরুষরা গাড়ি থেকে শুরু করে যান্ত্রিক করাত অবধি সব কিছু চালাচ্ছেন...
টিভি কমার্শিয়ালে ছেলেরা আজও সুপারম্যান সাজে; মেয়েরা তাদের ঘর সাজিয়ে, বার্বি পুতুলের চুল আঁচড়ে ‘সুপার মম' হবার প্রস্তুতি নেয়...
বেবিফুডের বিজ্ঞাপনে পর্যন্ত ন্যাপি পরা খুকি ব্যালেরিনার পোজ ধরে; ন্যাপি পরা খোকা আগামীর সায়েন্টিস্ট হতে যায়...
একেই বলে জেন্ডার স্টিরিওটাইপিং, যা ছেলে, মেয়ে, নারী, পুরুষ সবার পক্ষেরই স্বাধীন ও মুক্ত বিকাশের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়৷
বিজ্ঞাপন যাতে এ ধরনের মান্ধাতার আমলের রোল মডেল ছোটদের মধ্যে ছড়াতে না পারে, সেজন্যই ব্রিটেনের কমিটি অফ অ্যাডভার্টাইজিং প্র্যাকটিস, অর্থাৎ যে কমিটি ব্রিটেনে বিজ্ঞাপনের মান নির্ধারণ করেন, তারা এবার বিজ্ঞাপন শিল্পের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একত্রে ছোটদের জন্য বিজ্ঞাপনের নতুন স্ট্যান্ডার্ড বা মান নিরূপণ করবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন৷ পরে অ্যাডভার্টাইজিং স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি – একটি নিরপেক্ষ কর্তৃপক্ষ – সেই নিয়মাবলী বলবৎ করবে৷
আসলে ছোটদের যে সহজ কথাটা বলা ও তাদের বোঝা দরকার, সেটা হলো: ‘‘তুমি ছেলে হও আর মেয়ে হও; তুমি যা হতে চাও, তুমি তাই হতে পারো৷''
এসি/ডিজি