অটোরিক্সায় ফ্রি ম্যাগাজিন, উদ্দেশ্য বিজ্ঞাপন!
৩০ মে ২০১০মুলচাঁদ দেধিয়ার বয়স ২৫ আর ইশান মেহতা ও সিমি সাইলোপালের ২৩৷ এই তিনজন মিলে একটি ম্যাগাজিন বের করেছে৷ ইংরেজি ভাষায় লেখা ম্যাগাজিনটি মাসে একবার বেরোয়৷ প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে গত মার্চে৷ কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, ম্যাগাজিনটি পাওয়া যাচ্ছে মুম্বইয়ের মাত্র ৫০০ অটোরিক্সা চালকের কাছে৷ যেখানে নিবন্ধন করা অটোরিক্সার সংখ্যা প্রায় এক লক্ষ ৬০ হাজার৷
যাত্রীরা বিনামূল্যে ম্যাগাজিনটি পড়তে পারবে৷ আর নিজের অটোরিক্সায় ম্যাগাজিন রাখতে রাজি হওয়ায় চালকরা পাচ্ছে কিছু অর্থ৷ তবে তা কত সেটা জানা যায়নি৷ অর্থাৎ চালকের এখান থেকে কিছু টাকা আয় হলো৷ আর অটোরিক্সায় চুপচাপ বসে থাকার চেয়ে বিনামূল্যে ম্যাগাজিন পড়তে পারায় যাত্রীরাও লাভবান হলো৷
কিন্তু এতে মুলচাঁদ, ইশান আর সিমি'র কী লাভ৷ আর এখানেই এসে যাচ্ছে বিজ্ঞাপনের কথা৷ ২৪ পৃষ্ঠার এই ম্যাগাজিনটিতে বিভিন্ন বিষয়ে লেখা ছাড়াও থাকছে বিভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপন৷ ফলে যাত্রীদের কাছে সহজেই পৌঁছে যাচ্ছে ঐসব কোম্পানির তথ্যগুলো৷
ঐ তিন তরুণ গবেষণা করে দেখেছেন যে, মুম্বইয়ের জনগণের একটা বড় অংশ প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট কাটায় অটোরিক্সায়৷ এসময় তাদের কিছু করার থাকেনা৷ আর তাই বিনামূল্যে ম্যাগাজিন পড়ার মাধ্যমে তাদের সময়টাও কেটে যায়৷ আর এদিকে বিজ্ঞাপনের কাজটাও হয়ে যাচ্ছে৷
অভিনব এই বিজ্ঞাপন ইতিমধ্যে সাড়া ফেলেছে সকলের মাঝে৷ অন্যান্য শহর যেমন দিল্লি, পুনে, হায়দ্রাবাদ ও ভুপাল থেকে নতুন ধরণের এই বিজ্ঞাপনের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হয়েছে৷ ও আচ্ছা, এখনো তো ম্যাগাজিনটার নামই বলা হয়নি৷ তরুণ উদ্যোক্তারা এর নাম দিয়েছে ‘মিটার ডাউন'৷ কোনো অটোরিক্সায় যাত্রী ওঠার পর এর চালক স্টার্ট নেয়ার সময় ভাড়া গোনার মিটারের ফ্ল্যাগটিকে নিচের দিকে নামিয়ে দেন৷ অর্থাৎ ডাউন করে দেন৷ এর ফলে শুরু হয় বিল ওঠা৷ সেকারণে মিটার ডাউন কথাটি ভারতে বেশ প্রচলিত৷ উল্লেখ্য, ম্যাগাজিনটার প্রথম সংখ্যায় ফ্যাশন আর তারকাদের নিয়ে লেখা ছাড়াও ভারতের কফি শপ কালচার নিয়ে প্রবন্ধ ছাপা হয়েছিল৷
মুম্বইয়ের এই তিন তরুণ উদ্যোক্তার প্রত্যেকে নিজের পকেট থেকে ২৫ হাজার রুপি দিয়ে ব্যবসাটি শুরু করেছে৷ তাদের এই নতুন উদ্যোগ সফল হবে বলে বিশ্বাস করে ইশান৷ মুম্বইয়ের মোট অটোরিক্সার অন্তত ১০ ভাগের কাছেও যদি ম্যাগাজিন পৌঁছনো যায় তাহলে সেটাই অনেক বড় সাফল্য হবে বলে মনে করছে সে৷
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী