ব্যবসার আড়ালে মানবপাচার
৩০ জুন ২০১৯জার্মান কর্তৃপক্ষের বিশ্বাস, বার্লিন সীমান্তের বড়সড় এই এশিয়ান ফুড মার্কেট থেকেই মানবপাচারকারীরা এই কাজ করছে৷ শত শত অপ্রাপ্তবয়স্কদের ভিয়েতনাম থেকে পশ্চিম ইউরোপে নিয়ে আসছে সংঘবদ্ধ এই চক্র৷
পাবলিক ব্রডকাস্টার আরবিবি২৪ কে তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলেছেন, সংগঠিত এই অপরাধ চক্রটি ডং জুয়ান সেন্টারকে তাদের কাজে ব্যবহার করছে৷ এই সেন্টারটি মূলত একটি পাইকারি বাজার৷ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে ২৫০ ব্যবসায়ী এই সেন্টারে ব্যবসা করছে৷ তার আড়ালে, অপরাধ চক্রটি পোল্যান্ড, রাশিয়া, আর বাল্টিক দেশগুলো হয়ে জার্মানিতে লোক নিয়ে আসছে৷
জার্মান কাস্টমস অফিসের মুখপাত্র মাইকেল বেন্ডের বলেন, মানবপাচারকারীরা অপ্রাপ্তবয়স্কদের অবৈধভাবে জার্মানি নিয়ে আসার প্রমাণ তাদের কাছে রয়েছে৷
পাচারকারীদের নেটওয়ার্ক
আরবিবি২৪ কে পোল্যান্ড সীমান্তের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জার্মানিতে একজন নিয়ে আসতে কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ হাজার ইউরো নিয়ে থাকে পাচারকারীরা৷ জার্মানিতে প্রবেশের পরই এই অর্থ বুঝে নেয় তারা৷ কখনো কখনো বিশাল অংকের ঋণ পরিশোধ করতে পাচারের স্বীকার হওয়াদের বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়তে বাধ্য করা হয় বলেও জানান তিনি৷
ভিয়েতনামের এতিমখানা কিংবা দেশটির পথশিশু-যাকে সম্ভব হচ্ছে নিয়ে আসা হয় জার্মানিতে৷ এরপর এদের দিয়ে পশ্চিম ইউরোপে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করানো হয় বলেও জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিনিয়র তদন্তকারী কর্মকর্তা৷
পোল্যান্ডের পোজনান শহরে মানব পাচার নিয়ে বিচার কাজ চলছে৷ সেখানে পাচারের শিকার হওয়া একজন জানিয়েছেন, ইউরোপে কাজ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে নিয়ে আসা হয়৷ বিনিময়ে, তার গ্রামের বাড়িটি পাচারকারীদের লিখে দেয় তার দাদি৷
আধুনিক দাসত্ব
পোল্যান্ডের আইনজীবী আদালতে দাঁড়িয়ে বলেন, খুব দরিদ্র পরিবার থেকে তাদের নিয়ে আসা হয়, এমনকি এতিমখানাকে পর্যন্ত টার্গেট করে পাচারকারীরা৷ যাদের নিয়ে আসে, তাদের মধ্যে অনেকেই নিখোঁজ হয়ে যান৷ টাগেসস্পিগেল পত্রিকার এক প্রতিবেদন বলছে, ২০১২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বার্লিনে নিখোঁজ রয়েছেন ভিয়েতনামের চারশত ৭২জন অপ্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক৷
মানবপাচারের অভিযোগে ২০১৮ সালে লিটল হ্যানয় নামে পরিচিত ডং জুয়ান সেন্টারে অভিযান চালায় ফেডারেল পুলিশ৷ সেখান থেকে বেশকিছু কাগজপত্র জব্দ করা হয়৷ জব্দকৃত কাগজপত্রে দেখা যায়, ভিয়েতনাম থেকে জার্মানিতে লোক আনতে, বিয়ের দলিল পর্যন্ত জাল করে তারা৷
বেন নাইট/টিএম