বোতলের পানিতেও প্লাস্টিক!
১৫ মার্চ ২০১৮রাস্তায় বেরিয়েই দোকান থেকে পানির বোতল কিনে ফেলার অভ্যাস প্রায় সকলেরই কমবেশি আছে৷ অনেক দেশেই বোতলের জলকে মনে করা হয় নিরাপদ৷ বেড়াতে গিয়ে বহু পর্যটক বোতলের জলের ওপরেই নির্ভর করেন৷ কিন্তু সেই জলের সঙ্গে পেটের ভেতর চলে যাচ্ছে না তো বিষাক্ত প্লাস্টিক? সম্প্রতি এক সমীক্ষায় এমন তথ্যই উঠে এসেছে৷
একটি প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি ৯টি দেশের ১৯টি অঞ্চলের ১১ রকমের জলের বোতল সংগ্রহ করে৷ পরীক্ষা করে দেখা যায়, সংগৃহীত বোতলের ৯৩ শতাংশ জলেই মাইক্রো প্লাস্টিক আছে৷ অর্থাৎ, যে জল বিশুদ্ধ ভেবে আমরা পান করছি, তা-ও মোটেই নিরাপদ নয়৷ জলে মিশে রয়েছে অসংখ্য মাইক্রো প্লাস্টিক৷
বিজ্ঞানীরা ইদানীং মাইক্রো প্লাস্টিক নিয়ে নানাবিধ পরীক্ষা চালাচ্ছেন৷ আদৌ মাইক্রো প্লাস্টিক মানুষের শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর কিনা, ক্ষতিকর হলেও ঠিক কতটা, এ সমস্ত বিষয় নিয়ে লাগাতার গবেষণা চলছে৷ অ্যারিজোনা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিরেক্টর এবং বিজ্ঞানী রোলফ হালডেন বহুদিন ধরেই মাইক্রো প্লাস্টিক নিয়ে কাজ করছেন৷ তাঁর বক্তব্য, মাইক্রো প্লাস্টিক রক্তধারায় গিয়ে মিশছে, এমন প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি৷ তবে যে মাইক্রো প্লাস্টিক শরীরে ঢুকছে,তা আদৌ কোনো ক্ষতি করছে কিনা, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত নন তিনি৷
আমস্টারডামের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞানী হিথার লেসলি ইঁদুরের ওপর মাইক্রো প্লাস্টিকের একটি পরীক্ষা শুরু করেছেন৷ ২৮ দিন ধরে ইঁদুরদের শরীরে প্রচুর মাইক্রো প্লাস্টিক ঢোকানো হয়েছে৷ এখনো সেই ইঁদুরগুলিকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে৷ তবে লেসলি জানিয়েছেন, ভয়াবহ কোনো লক্ষণ এখনো দেখা যায়নি৷ অর্থাৎ, ইঁদুরগুলির শরীরে মাইক্রো প্লাস্টিক সেভাবে কোনো প্রভাব ফেলেনি৷ তবে আরো বেশ কিছুদিন ইঁদুরগুলিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলেও জানিয়েছেন লেসলি৷
২০১২ সালে গোটা বিশ্বে ২৮৮ বিলিয়ন লিটার বোতলবন্দি জল বিক্রি হয়েছিল৷ ২০১৭ সালে সেই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯১ বিলিয়ন লিটার৷ এখনো পর্যন্ত জলের বোতলের মাইক্রো প্লাস্টিকে ক্ষতিকর কিছু পাওয়া যায়নি৷কিন্তু যদি অদূর ভবিষ্যতে তেমন কিছু মেলে,তাহলে তা কত মানুষকে আক্রান্ত করবে, তা ভেবেই চিন্তিত বিজ্ঞানীরা৷ প্লাস্টিকের বোতলে জল বিক্রি নিষিদ্ধ করা উচিত কি না, তা নিয়েও ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে কোনো কোনো মহলে৷
তামসিন ওয়াকার/এসজি