বিমান দুর্ঘটনায় নিহত শতাধিক, কিউবায় শোক
১৯ মে ২০১৮কিউবার রাজধানী হাভানায় শুক্রবার বোয়িং ৭৩৭ সিরিজের একটি বিমান দুর্ঘটনায় পড়লে প্রাণ হারান ১০৭ জন, তবে জীবিত আছেন তিন আরোহী৷ দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ট্রো জানিয়েছেন, বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতদের স্মরণে শনিবার থেকে রবিবার মধ্যরাত অবধি দেশব্যাপীয় শোকপালন করা হবে৷
দেশটির কমিউনিস্ট পার্টির এই নেতা হাভানার হোসে মার্টি বিমানবন্দের কাছে একটি মাঠ পরিদর্শন করে যেখানে উড্ডয়নের পরপরই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছিল৷ এটিকে ‘সর্বনাশা দুর্ঘটনা' আখ্যা দিয়ে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন কাস্ট্রো৷
তদন্ত শুরু হয়েছে
কিউবার রাষ্ট্রীয় বিমানসংস্থা ‘কিউবানা'-র পক্ষে পরিচালিত ‘দ্য গ্লোবাল এয়ার' বিমানসংস্থার উড়ালটি হাভানা থেকে দেশটির পূর্বাঞ্চলের শহর হলগেনে যাচ্ছিল৷ উড়ালটিতে থাকা অধিকাংশ যাত্রীই ছিলেন কিউবার নাগরিক৷ বিদেশি পাঁচ যাত্রীর মধ্যে দুই আর্জেন্টিনার নাগরিক ছিলেন৷ বিমানটির ছয় ক্র ছিলেন মেক্সিকোর নাগরিক৷
বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়ার কারণ এখনো পরিষ্কার হয়নি৷ প্রেসিডেন্ট মিগেল দিয়াথ-কানেল গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, ৪০ বছর বয়সি বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি কেন বিধ্বস্ত হয়েছে তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে৷
এদিকে, মেক্সিকো জানিয়েছে, বিমান দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে নিযুক্ত তদন্তকারী দলকে সহায়তায় বিশেষজ্ঞ পাঠাচ্ছে দেশটি৷
শোকবার্তা
রাশিয়ার প্রেসিডেন্টি ভ্লাদিমির পুটিনসহ ল্যাটিন আমেরিকার অনেক নেতা বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন৷ ভেনেজ্যুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো এক শোকবার্তায় লিখেছেন, ‘‘হাভানায় ভয়াবহ দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাচ্ছি৷ তারা এই কঠিন বেদনা কাটিয়ে ওঠার শক্তি অর্জন করুক৷ তাদের প্রতি আমাদের সব ধরনের সহায়তা থাকবে৷''
স্পেনের রাজা চতুর্থ ফেলিপে ফোর এবং রানি লেটিথিয়া একই ধরনের শোকবার্তা প্রদান করেছেন৷
দুর্বল রেকর্ড
কারিগরি সমস্যার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে কিউবানা বিমানসংস্থাটি নিজেদের বেশ কয়েকটি বিমান ব্যবহার থেকে বিরত থাকে৷ দেশটির ‘এয়ার সেফটি রেকর্ড' দুর্বল৷ দেশটিতে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনাটি ঘটে ১৯৮৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে৷ সেসময় কিউবানার হাভানা থেকে ইটালির মিলানগামী বিমানটি ১২৬ জন যাত্রী নিয়ে দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছিল৷
কিউবার মানুষদের কাছে কিউবানার বেশ দুর্নাম রয়েছে৷ বিমানসংস্থাটি উড়াল বিলম্ব এবং বাতিলের জন্য আলোচিত৷ তবে কিউবান কর্তৃপক্ষের দাবি, কিউবার উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে বিমানের যন্ত্রাংশ এবং বিমানের স্বল্পতা সৃষ্টি হওয়ায় উড়াল বিলম্ব এবং বাতিলের অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে৷ এমনকি শুক্রবারের দুর্ঘটনার একদিন আগে বৃহস্পতিবার কিউবানার সেবার মান বাড়াতে এক বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়৷
এআই/ডিজি (এএফপি, এপি)