1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মুফতি হান্নানের ফাঁসির রায় বহাল

৭ ডিসেম্বর ২০১৬

সিলেটে সাবেক ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার ১২ বছর পর মামলার চূড়ান্ত রায় এসেছে৷ রায়ে হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানসহ তিন জঙ্গির ফাঁসি বহাল রেখেছে সর্বোচ্চ আদালত৷

https://p.dw.com/p/2TtiV
Bangladesch Verurteilter Mufti Hannan, 2004
মুফতি হান্নানছবি: bdnews24.com

২০১৩ সালের পর থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পাশাপাশি নানা পর্যায়ের জঙ্গি হামলার খবরের ভিড়ে ২০০৪ সালে সিলেটে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার মামলাটি গণমাধ্যমে বলতে গেলে গুরুত্বই পায়নি৷ অথচ সেটি বাংলাদেশে শুধু বিদেশি নাগরিকের ওপর প্রথম হামলাই নয়, এখনো পর্যন্ত জঙ্গি হামলার শিকার একমাত্র বিদেশি কুটনীতিকও আনোয়ার চৌধুরী৷

ব্রিটিশ হাই কমিশনার হিসাবে বাংলাদেশে দায়িত্ব পালন করা একমাত্র বাঙালি আনোয়ার চৌধুরী৷ বাংলাদেশ থেকে ফিরে তিনি বৈদেশিক ও কমনওয়েলথ অফিসের ব্যাবস্থাপক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন৷ বর্তমানে তিনি পেরু-তে ব্রিটিশ হাই কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন৷

২০০৪ সালে নিজের জন্মস্থান সিলেটের শাহজালাল (রঃ) মাজারের মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে বের হওয়ার সময় আনোয়ার চৌধুরী  গ্রেনেড হামলার শিকার হন৷ কোনো নিরাপত্তা ছাড়াই মাজারে প্রবেশ করেছিলেন তিনি৷ হামলায় ঘটনাস্থলেই পুলিশের এএসআই কামাল উদ্দিন নিহত হন৷ এছাড়া পুলিশ কনস্টেবল রুবেল আহমেদ ও হাবিল মিয়া নামের আরেক ব্যক্তি হাসপাতালে মারা যান৷ হামলায় ৩ জন নিহত এবং আনোয়ার চৌধুরী ও সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অন্তত ৪০ জন আহত হন৷ সেই হামলার মামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি)-র নেতা মুফতি হান্নানসহ তিন জঙ্গির ফাঁসির রায় বহাল রেখেছে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত৷

মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ওই তিন জঙ্গির আপিল শুনানি শেষ৷ শুনানি শেষে আপিল বিভাগ বুধবার অভিযুক্তদের আবেদন খারিজ করে দেয়৷ এর ফলে তিন আসামি মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার ওরফে রিপনের সামনে এখন কেবল আপিলের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করার সুযোগ থাকল৷ তা-ও নাকচ হয়ে গেলে শেষ চেষ্টা হিসেবে তারা অপরাধ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন৷ সে আবেদনও প্রত‌্যাখ‌্যাত হলে কারাবিধি অনুযায়ী তাদের দণ্ড কার্যকর করার পথে আর কোনো বাধা থাকবে না৷

বাংলাদেশে ২০০৪ সালের পর আর উচ্চপদস্থ কোনো বিদেশি কর্মকর্তার উপর হামলার ঘটনা ঘটেনি৷ তবে ১৯৯৯ থেকে চলতি বছর পর্যন্ত বেশ কিছু সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে৷ ২০০৪-এ আনোয়ার চৌধুরীর ওপর হামলার ১১ বছর পর ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে গুলশানে ইটালির নাগরিক তাভেল্লা সিজার এবং অক্টোবরে রংপুরে জাপানি নাগরিক হোশি কোনিওকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে৷ বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫ সাল থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ৫০টির  মতো জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে৷

তবে জুলাইতে ঘটেছে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা৷ সেই হামলায় গুলশানের হোলি আর্টিজান ক্যাফেতে ১৮ বিদেশিসহ ২০ জন প্রাণ হারান

গুলশান হামলার আগে ইটালি ও জাপানি নাগরিক হত্যার দুটি ঘটনায় কোনো জঙ্গি গোষ্ঠীর সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷ দু'টি হত্যা মামলার বিচার এখনো চলছে৷ 

আর সব মামলার মতো ওই দুই বিদেশি নাগরিক হত্যার বিচার কার্যক্রমও চলছে খু্ব ধীরগতিতে৷ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাড়া জাগানো মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি না হওয়ার বিষয়টিও নতুন নয়৷ আনোয়ার চৌধুরীর ওপর হামলার মামলাই তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত৷ হামলা হয়েছিল ২০০৪ সালে৷ বিচারও শুরু হয় সে বছর৷ কিন্তু রায় চূড়ান্ত হওয়ার পর্যায়ে আসতে লেগেছে সুদীর্ঘ ১২ বছর৷

প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে নীচে মন্তব্যের ঘরে লিখুন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য