বিক্ষোভ ভাঙতে গুলি চালাচ্ছে ইরান, দাবি অ্যামেরিকার
১৪ জানুয়ারি ২০২০ইরানের ভাবমূর্তি নিয়ে এ বার সরব হল আন্তর্জাতিক মহল৷ ইউক্রেনের বিমানে ক্ষেপনাস্ত্র হামলা থেকে শুরু করে দেশের ভিতরে বিক্ষোভকারীদের উপর হামলা-- নিন্দায় সরব অ্যামেরিকা, জার্মানি সহ বিভিন্ন রাষ্ট্র৷
ইরানের প্রশাসন অবশ্য এখনও বলে চলেছে, ভুল বশতই ইউক্রেনের বিমানে মিসাইল আঘাত করেছিল তারা। ইচ্ছাকৃত ভাবে সে কাজ করা হয়নি৷ কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলের বক্তব্য, ওই বিমানে মিসাইল হামলার যে ছবি পাওয়া গিয়েছে, তাতে স্পষ্ট, ইরান ইচ্ছাকৃত ভাবেই কাজটি করেছিল৷
শুধু তাই নয়, বিমানে মিসাইল লাগার কথা ইরান স্বীকার করে নেওয়ার পর থেকেই দেশের ভিতরে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ৷ আন্দোলনকারীরা বলছেন, শত্রু বাইরে নয়, দেশের ভিতরেই। বস্তুত, ইরানে সরকার-বিরোধী বিক্ষোভ এই প্রথম নয়৷ এর আগেও একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটেছে৷ যখনই ঘটেছে কড়া হাতে তা দমন করেছে খামেনির সরকার৷ বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালানো হয়েছে৷ হত্যা করা হয়েছে৷ এ বারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না৷ একাধিক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে পুলিশ নির্বিচারে বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালাচ্ছে৷ চালানো হচ্ছে কাঁদানে গ্যাস। সম্প্রতি নিউ ইয়র্কের একটি সংস্থা বিক্ষোভের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, এক মহিলাকে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ৷ আর তাকে ঘিরে থাকা বিক্ষোভকারীরা বলছেন, তার পায়ে গুলি লেগেছে৷
ভিডিও প্রকাশ পাচ্ছে অসংখ্য৷ কিন্তু ইরানের প্রশাসন এখনও বলছে, বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালানো হয়নি। তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হচ্ছে না৷
এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ফের বিক্ষোভকারীদের সমর্থন জানিয়েছেন৷ টুইটে তিনি লিখেছেন, নিজের দেশের বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ইরান খারাপ ব্যবহার করলে তার ফল ভাল হবে না৷ এর আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, ইরানের সঙ্গে অ্যামেরিকা সমঝোতায় আসতে পারে, যদি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সে দেশের সরকার ভাল ব্যবহার করে৷ জার্মানিও বিক্ষোভকারীদের সমর্থন জানিয়েছে৷
ইরানের অন্যতম প্রভাবশালী জেনারেল কাসিম সোলেইমানিকে অ্যামেরিকা হত্যা করার পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ আন্তর্জাতিক কূটনীতি বিশেষজ্ঞরা বলছিলেন, গত কয়েক দিনে যুদ্ধ পরিস্থিতির সম্ভাবনা খানিকটা হলেও কমেছিল৷ কিন্তু ইরান যে ভাবে আন্দোলন দমন করতে শুরু করেছে, তাতে ফের যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলেই অনেকের অভিমত৷
মিসাইল হামলা ‘ক্ষমাহীন অপরাধ’
অন্য দিকে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে এ দিন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি একটি টেলিভিশন বিবৃতিতে জানিয়েছেন, বিমানে মিসাইল হামলা ‘ক্ষমাহীন অপরাধ’৷ যারা এ কাজ ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷ সকলকেই শাস্তি পেতে হবে৷ যদিও আন্তর্জাতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, চাপের মুখে ইরান এই বিবৃতি দিলেও বাস্তবে তা কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে৷
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এএফপি, এফপি)