‘বাইরে গরম', বললো মা-পাখি
২৮ আগস্ট ২০১৬‘গানে ভুবন ভরিয়ে দেবে ভেবেছিল একটি পাখি...৷' না, ভুবন ভরিয়ে দেয়া নয়, বরং ভুবন, মানে বিশ্বকে গানের মধ্যে দিয়ে রক্ষা করছে একদল পাখি৷ হ্যাঁ, ডিম ফুটে বের হওয়ার আগেই বাচ্চাকে সাবধান করে দিচ্ছে মা৷ গান গেয়ে পেটের বাচ্চাকে সাহস দিচ্ছে৷ বলছে, বাইরে কেমন গরম, এর জন্য তাকে কী করতে হবে, এমন অনেক কিছু৷
শুধু তাই নয়, তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেরিয়ে গেলে গান গেয়ে গেয়ে বাচ্চার জন্মের সময়ও পিছিয়ে দিচ্ছে মা-পাখি৷ জন্ম দিচ্ছে কম ওজনের বাচ্চাকে, যাতে তার কষ্ট কম হয়, যাতে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচতে পারে একটা গোটা প্রজাতি!
সম্প্রতি ‘বার্ড লাইফ ইন্টারন্যাশনাল'- এর জরিপে বেরিয়ে আসে খুবই উদ্বেগজনক তথ্য৷ জরিপ বলছে, ইউরোপে অতি সাধারণ প্রজাতির যেসব পাখি রয়েছে, তাদের ৪৫ শতাংশের অস্তিত্বই এখন হুমকির মুখে৷ দ্রুত কমে যাচ্ছে তাদের সংখ্যা৷ অস্ট্রেলিয়ায় পাখিদের অবস্থা আরো ভয়াবহ৷
সেখানে জলচর পাখিদের ৮০ শতাংশেরও বেশি এখন বিলুপ্তির পথে৷ আফ্রিকায় সংরক্ষিত এলাকার বাইরে ব্যাপক হারে কমে যাচ্ছে শিকারি পাখি৷ আর এশিয়ায় বিপন্ন অতিথি পাখিরা৷ মহাদেশটির জলচর অতিথি পাখিদের ৬২ শতাংশই বিলুপ্ত হয়ে গেছে কিংবা বিলুপ্ত হতে চলেছে৷
এ অবস্থায় যেন আশার আলো নিয়ে এসেছে এই ‘গানওয়ালা' পাখিরা৷ অস্ট্রেলিয়ার ডেকন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ৬১টি ‘জেব্রা ফিঞ্চ'কে প্রায় দু'বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন, কীভাবে মা-পাখিরা গান গেয়ে, কথা বলে বাচ্চার জন্মের ওপর প্রভাব ফেলছে৷
বিজ্ঞনীদের কথায়, ওজন কম হলে গরম কম লাগে এবং ‘অক্সিডেটিভ ড্যামেজ'ও কম হয়৷ তাছাড়া মায়ের গানের প্রভাবে যাদের দেরিতে জন্ম হয়েছিল, তারা নাকি পরবর্তীতে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি বাচ্চার জন্ম দেয়৷ আর এভাবেই বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পায় একটা প্রজাতি৷
বন্ধু, কেমন লাগলো এই মা-পাখির গল্প? জানান আমাদের, লিখুন নীচের ঘরে৷