বাংলার ব্যাঘ্রশাবকদের জন্য নতুন হুমকি
১৯ আগস্ট ২০১২চোরাকারবারিরা ক্রমশ জীবন্ত ব্যাঘ্রশাবক বিদেশে পাচারের দিকে ঝুঁকছে৷ ঢাকার চিড়িয়াখানায় এখন রয়েছে তিনটি অসুস্থ বাঘের বাচ্চা৷ এদেরকে অন্য দেশে পাচারের উদ্দেশ্যে ঢাকায় নিয়ে আসে চোরাকারবারিরা৷ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে কর্মরত নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বন কর্মী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, ‘‘(বাঘ) অনেক সময় খাদ্যের সন্ধানে বন থেকে বেরিয়ে গ্রামে চলে আসে৷ তখন সেগুলোকে ধরা হয় অথবা হত্যা করা হয়৷''
তিনি বলেন, ‘‘চোরাকারবারিরা এখন জ্যান্ত ব্যাঘ্রশাবক ধরে এবং পাচার করে তাদের অবৈধ বাণিজ্যের পরিধি বাড়াচ্ছে৷ ব্যাঘ্রশাবকদের ফাঁদে ফেলা সহজ এবং সেগুলো সহজেই অন্যত্র নিয়ে যাওয়া যায়৷''
দশ হাজার বর্গ মাইলের সুন্দরবনে এখন রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা মাত্র ৩০০ থেকে ৫০০'র মতো৷ সুন্দরবন বাংলাদেশ এবং ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিয়ে অবস্থিত এবং ইউনেস্কো ঘোষিত ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট'৷ একটি পূর্ণবয়স্ক ডোরাকাটা বাঘের ওজন সাধারণত দু'শো কেজির বেশি হয়৷ কিন্তু সুন্দরবনে বাঘের এই সংখ্যা দ্রুত কমে যাচ্ছে৷
ঢাকার একটি বহুতল ভবনের এক বাসিন্দা একদিন ভবনের নীচের তলায় তিনটি ব্যাঘ্রশাবক দেখতে পান৷ চিঁ চিঁ শব্দ করে সেগুলো উপরের দিকে ওঠার চেষ্টা করছিল৷ বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সেগুলোকে উদ্ধার করে একটি বেসরকারি চিড়িয়াখানায় নিয়ে যায়৷ সেখানে ব্যাঘ্রশাবকগুলোকে দুধ পান করানো হয় এবং প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়৷ কিন্তু পরবর্তীতে ব্যাঘ্রশাবকগুলো অসুস্থ হয়ে পড়ে৷ বর্তমানে সেগুলোকে ঢাকার বোটানিক্যাল গার্ডেনের মধ্যে বিশেষ খাঁচায় রাখা হয়েছে এবং তাদের চীন থেকে আমদানি করা খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে৷
ব্যাঘ্রশাবক জীবন্ত উদ্ধারের এই ঘটনা প্রাণী সংরক্ষণবাদীদের উৎকণ্ঠায় ফেলেছে৷ জীবন্ত বাঘের বাচ্চা পাচারের বিষয়টি সম্পর্কে জানতেন না তারা৷ ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট অফ বাংলাদেশ'এর প্রোগ্রাম অফিসার রিয়াজ মোর্শেদ এই বিষয়ে বলেন, ‘‘আমরা আগেই জানতাম, চোরা শিকারিরা বাঘ হত্যা করে৷ কিন্তু এই প্রথম আমরা জানতে পারলাম সেগুলোকে জীবন্ত ধরা হচ্ছে৷''
নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অবশ্য বাঘের বাচ্চা সংগ্রহ এবং নিজেদের কাছে রাখার দায়ে এক ব্যক্তি এবং তার মাকে গ্রেপ্তার করেছে৷ প্রসঙ্গত, একটি ব্যাঘ্রশাবকের দাম বিশ লাখ টাকা৷
এআই / ডিজি (রয়টার্স)