পতাকার ব্যবহার নিয়ে বিভ্রান্তি
১১ জুন ২০১৪সোমবার যশোর জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে টাঙানো বিদেশি পতাকা নামিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয় জেলা প্রশাসন৷ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টাঙানো ভিন্ন দেশের পতাকা নামাতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশ জারির পর মঙ্গলবার সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় টাঙানো প্রায় সব পতাকা নামিয়ে ফেলা হয়েছে৷ তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের কয়েকটি বাড়ি ও ভবনে বিদেশি পতাকা উড়তে দেখা গেছে বলে ডয়চে ভেলেকে জানান যশোরের সাংবাদিক মাইনুল ইসলাম৷
যশোরের জেলা প্রশাসন সোমবার শহরে টাঙানো পতাকা পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দেন৷ স্থানীয় গণমাধ্যমে একটি বিজ্ঞপ্তিও পাঠানো হয়৷ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সময়সীমা শেষ হয়েছে৷ উপজেলা পর্যায়ে পতাকা নামাতে বুধবার বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে৷
জেলা তথ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে শহরে জেলার আট উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাইকে প্রচার চালানো হয়েছে ভিনদেশি পতাকা নামিয়ে ফেলার জন্য৷
জেলা প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ পতাকা বিধিমালা ১৯৭২-এর বিধি ৯ (৪) অনুযায়ী দেশের অভ্যন্তরে কোনো ভবনে বা যানবাহনে কোনো বিদেশি পতাকা উত্তোলন করা যাবে না৷'
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘‘বিশ্বকাপ উন্মাদনায় যশোরে যতগুলো বিদেশি পতাকা তোলা হয়েছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসে এর চার ভাগের এক ভাগও পতাকা দেখি না৷ মানুষের মধ্যে দেশপ্রেমের চেতনার অভাব রয়েছে৷ ওই চেতনায় নাড়া দেওয়ার জন্যই বিদেশি পতাকা নামানোর জন্য মানুষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে৷''
যারা ভিনদেশি পতাকা নামাবে না, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘সেগুলো প্রশাসন লোক দিয়ে নামিয়ে ফেলবে৷''
সাংবাদিক মাইনুল ইসলাম জানান, ‘‘এই নির্দেশ নিয়ে জেলার মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে৷''
এদিকে দেশের পিরোজপুর, কুড়িগ্রাম, টাঙ্গাইলসহ কয়েকটি জেলায় যোগাযোগ করে জানা যায় সেখানে বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষ্যে ফেভারিট দেশের পতাকা ওড়াতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই৷ ঢাকা শহরের বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন ভবনের ছাদে এখন আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলসহ বিশ্বকাপ খেলুড়ে দেশগুলোর হাজার হাজার পতাকা উড়ছে৷ ঢাকায় সচিবালয়ে যোগাযোগ করে বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে ভিনদেশি পতাকা না ওড়াতে সরকারি কোনো নিষেধাজ্ঞার খবর পাওয়া যায়নি৷
আর একদিন পর বিশ্বকাপের আসর শুরু হবে৷ তাই যশোরের ঘটনায় বিভিন্ন দেশের সমর্থকরা পতাকা নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছেন৷ তাদের কথা একই – নিষেধাজ্ঞা শেষ পর্যন্ত সারা দেশে জারি হলে আনন্দে কিছুটা হলেও ভাটা পড়বে৷