ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক আমজাদ হোসেন জানান, ‘‘শুক্রবার ‘ঘ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও বাইরের মোট ৯৭টি কেন্দ্রে ১ লাখ ৫ হাজার ৫১৬ জন শিক্ষার্থী নেয়, যাদের মধ্যে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন ১ হাজার ৪১৬ জন৷ পরীক্ষা চলাকালে মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন ‘গ্যাজেট' ব্যবহার করে অসুদপায় অবলম্বনের দায়ে অন্তত ১৭ জনকে আটক করা হয়েছে৷''
অন্যদিকে ব়্যাব পরীক্ষা হলের বাইরে থেকে আরো ১৯ জনকে আটক করে, যাদের মধ্যে ১২ ভর্তি জালিয়াত চক্রের সদস্য বলে তারা নিশ্চিত হয়েছে৷ এদের মধ্যে আটক মোজাম্মেল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক৷ ব়্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান জানিয়েছেন, ‘‘এই চক্রের সদস্যরা মোবাইল ফোনে প্রশ্নের উত্তর সরবরাহ করত এবং প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত৷ এই জালিয়াতি করে তারা বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে৷ ওই চক্রের কাছ থেকে আটক সাত পরীক্ষার্থীর সহযোগিতা পাওয়ার কথা ছিল৷''
এর আগে গত কয়েক সপ্তাহে ‘ক', ‘খ' ও ‘গ' – এই তিন ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে ২৫ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির প্রবণতা বাড়ছে৷ আমরা চেষ্টা করছি এটা বন্ধ করতে৷ এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেমন সতর্ক রয়েছে, তেমনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও সক্রিয় আছেন৷ জালিয়াতি বিরোধী সতর্কতার কারণেই জালিয়াত চক্রের সদস্যরা ধরা পড়ছে৷''
তিনি বলেন, ‘‘জালিয়াতি রোধে পরীক্ষা পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আনা হচ্ছে৷ এরই মধ্যে সর্বশেষ ‘ঘ' ইউনিটের পরীক্ষায় কিছু কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে৷ ফলে জালিয়াতি করেও সুবিধা হয়নি৷ তবে ভবিষ্যতে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নে এমন পরিবর্তন আনা হবে যে জালিয়াতি করা সম্ভব হবে না৷''
তিনি বলেন, ‘‘আমরা আশা করি যে জালিয়াতি যারা করেছে তারা সবাই ধরা পড়েছে৷ তবে জালিয়াতি করে কেউ যদি ভর্তির সুযোগ পায় তাহলে তা হবে দুঃখজনক৷''
অন্যদিকে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক রাশেদা কে চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘যে কোনো উপয়েই হোক ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি বন্ধ করতে হবে৷ এটা যে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ে হচ্ছে তা নয়, আরো অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনা ঘটছে৷ তাই এটা প্রতিরোধে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন৷''
তিনি বলেন, ‘‘পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য অশনিসংকেত৷ শিক্ষার মান এমনিতেই নানা কারণে নেমে যাচ্ছে৷ আর এই ফাঁস জালিয়াতি প্রতিরোধ করা না গেলে মাসের আরো অবনতি ঘটবে৷''