1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মমতার দলের কান্ড

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি২০ ডিসেম্বর ২০১৩

বিরোধী কয়েকটি দলের প্রতিবাদ সত্ত্বেও ভারত-বাংলাদেশ স্থলসীমা চুক্তি সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধনী বিল ভারতের সংসদে পেশ করা হয়েছে৷ এর পরপরই সংসদের শীতকালীন অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি হয়ে যায়৷

https://p.dw.com/p/1AcmC
Westbengalen Wahlen
ছবি: DW/P. Mani Tewari

আগামী মাসে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচনের ঠিক আগে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ছিটমহল হস্তান্তর সংক্রান্ত স্থলসীমা চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য ১১৯ তম সংবিধান সংশোধনী বিলটি ভারতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি হয়ে যাবার কয়েক মিনিট আগে উচ্চকক্ষ রাজ্যসভাতে পেশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সলমান খুরশিদ৷ এর আগের অধিবেশনে কেন্দ্র চেষ্টা করেও তা পেশ করতে পারেনি৷ বিশেষ করে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস এবং আসাম গণপরিষদের বাধার কারণে৷ এবারেও একই দৃশ্য৷ তৃণমূল এবং এজিপির সাংসদরা বিলের খসড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হাত থেকে কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলেন৷ ছুটে যান স্পিকারের মঞ্চের দিকে৷ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সভার অধিবেশন মুলতুবি রাখতে হয়৷ লক্ষ্যণীয়, বিজেপি মৌখিক প্রতিবাদ করলেও হৈ-হট্টগোল থেকে দূরে ছিল৷

যেনতেন প্রকারে শেষ মুহূর্তে বিল পেশ করার একটিই কারণ – সরকার মনে করে, সংসদের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও বিলটিকে জিইয়ে রাখতে পারলে আগামী বছরের মাঝামাঝি নতুন সংসদে তা পাস করাতে সুবিধা হবে৷

পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন, প্রতিবেশী বাংলাদেশের সঙ্গে মৈত্রী সম্পর্ক বজায় রাখা ভারতের জাতীয় স্বার্থের পক্ষে যে কতটা জরুরি তার জন্য নেপথ্যে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে ক্রমাগত সওয়াল করে যায় মনমোহন সিং সরকার৷ ২০১৪ সালে উভয় দেশেই সংসদীয় নির্বাচন৷ ভারতে কংগ্রেস বা বিজেপি যে দলই ক্ষমতা আসুক বাংলাদেশকে দেয়া স্থলসীমা চুক্তি বাস্তবায়নে ভারত যদি তার অঙ্গীকার পালন করতে না পারে, তাহোলে তার পরিণাম খারাপ হবে৷ পাশাপাশি, বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপুমনি কয়েকবার দিল্লিতে এসে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে বোঝাবার চেষ্টা করেন এই বলে যে, এই চুক্তি বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার হাত শুধু শক্তই করবে না, দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নিয়ে যাবে এক স্থায়ী উচ্চতায়৷

শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় সরকার এবং বাংলাদেশ সরকারের তরফে মমতা বন্দোপাধ্যায়কে নানাভাবে রাজি করাবার চেষ্টা করা হয় অতীতে, কিন্তু তিনি তাঁর আপত্তিতে অবিচল৷ তাঁর আপত্তির কারণ, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলির বিনা সম্মতিতে একতরফাভাবে এই বিল পেশ করা হয়েছে৷ এই চুক্তি কার্যকর হলে আসাম, ত্রিপুরা এবং উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির চেয়ে বেশি ক্ষতি হবে পশ্চিমবঙ্গের৷ রাজ্যের ১৭ হাজার একর জমি চলে যাবে বাংলাদেশে৷ বিনিময়ে পাবে মাত্র ৭ হাজার একর জমি৷ এটা মেনে নেয়া যায় না৷ মমতার ভাষায়, ‘‘সংসদীয় ভোটের আগে কংগ্রেসকে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে দেয়া হবে না৷''

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমন কল্যাণ লাহিড়ি ডয়চে ভেলেকে এই প্রসঙ্গে বলেন, পররাষ্ট্রনীতির স্বার্থে কেন্দ্রের উচিত আরো কড়া অবস্থান নেয়া৷ যেহেতু এটা আন্তর্জাতিক চুক্তি, তাতে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বক্তব্য থাকতে পারে, কিন্তু তা মানা কেন্দ্রের পক্ষে বাধ্যতামূলক নয়৷ এখানে যেহেতু সার্বভৌম রাষ্ট্রের জমি হস্তান্তরের প্রশ্ন জড়িত, তাই সংবিধান সংশোধনের জন্য সংসদের দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন দরকার৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য