1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি২৫ অক্টোবর ২০১৩

১১ই নভেম্বর এশিয়া-ইউরোপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলনে যোগ দিতে নতুন দিল্লিতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা.দীপু মনি৷ তবে তাঁর মূল অ্যাজেন্ডা আটকে থাকা তিস্তা ও স্থলসীমা চুক্তি বাস্তবায়নে ভারতের সম্মতি আদায়৷

https://p.dw.com/p/1A5c3
Bangladesh's Foreign Minister Dipu Moni addresses the Nuclear Nonproliferation Treaty (NPT) conference at United Nations headquarters, Tuesday, May 4, 2010. (ddp images/AP Photo/Richard Drew)
ছবি: AP

বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে অবশ্যই ছায়া ফেলবে বহুদিন ধরে আটকে থাকা তিস্তা জলবণ্টন চুক্তি এবং ভারত-বাংলাদেশ স্থলসীমা চুক্তি দুটির বাস্তবায়ন৷ কাজেই এটা যে কত জরুরি সেটা ভারতের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে নতুন করে বোঝাতে আগামী নভেম্বর মাসে দিল্লি যাচ্ছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি৷ বলা বাহুল্য, শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের পুনর্নির্বাচনে এই দুটি হবে প্রধান নির্বাচনি ইস্যু৷ তাই চুক্তি দুটি না হলে সেটা হবে শাসকদলের বিরুদ্ধে বিএনপি এবং জামাতের প্রধান হাতিয়ার৷ বিরোধীদল ইতিমধ্যেই অভিযোগের আঙুল তুলতে শুরু করেছে এই বলে যে, শেখ হাসিনার সরকার ভারতের কাছে বাংলাদেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিচ্ছে, কিন্তু পরিবর্তন আনতে পারেনি কিছুই৷

উভয় দেশের কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, ঐ দুটি চুক্তি রূপায়ণে প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং-এর তরফে আন্তরিকতা বা রাজনৈতিক সদিচ্ছার খামতি নেই৷ কিন্তু ঘরোয়া রাজনীতির আবর্তে পড়ে সেটা আটকে আছে৷ ভারতেও সংসদ এবং বিধানসভা ভোট-যুদ্ধে ড. সিংয়ের মুঠোতে ক্রমশই যেন জোর কমে যাচ্ছে৷ তবে তিস্তা চুক্তি মূলত আটকে আছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অনড় অবস্থানে৷ মনমোহন সিং সরকার ভোটের মুখে মমতা বন্দোপাধ্যায়কে চটাতে চাইছে না৷ এর কারণ, ভোটের পর হয়ত তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থন দরকার হতে পারে কংগ্রেসের৷

FILE - In this Nov. 23, 2010 file photo, Indian Prime Minister Manmohan Singh listens to a speaker during a meeting in New Delhi, India. India's prime minister defended his embattled government against a string of corruption scandals Wednesday, Feb. 16, 2011, saying the allegations would be thoroughly investigated and those involved would be punished, no matter their position. (AP Photo/Manish Swarup, File)
প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং-এর তরফে আন্তরিকতা বা রাজনৈতিক সদিচ্ছার খামতি নেইছবি: AP

প্রশ্ন হলো, মমতার এত আপত্তির কারণ কী? তাঁর মতে, তিস্তা চুক্তির আগেই উত্তরবঙ্গের চাষিদের সেচের জল থেকে বঞ্চিত করে তিস্তার জল বাংলাদেশকে দেয়া হচ্ছে এবং হবে৷ এই অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মমতা৷ এই অভিযোগ অস্বীকার করে ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশের বলেছেন, শুকনো মরসুমে তিস্তার জল এতটাই কম থাকে যে, ব্যারাজ থেকে উত্তরবঙ্গের সেচ খালে বাড়তি জল দেয়া সম্ভব নয়৷ তিস্তা চুক্তির একটা সন্তোষজনক সমাধানে তাই শুরু হয়েছে, কূটনৈতিক ভাষায় যাকে বলা হয় ‘‘ট্র্যাক-টু ডিপ্লোমেসি''৷ সমস্যা সমাধানে যুক্ত করা হয়েছে এসএফজি নামে ভারতের এক থিংক ট্যাংককে৷ তারা তিন দফা সমাধান-সূত্রের কথা বলেছে৷ যেমন যৌথ নদী কমিশনকে ঢেলে সাজানো, নদী অববাহিকার পলি সরিয়ে গভীরতা, তথা নাব্যতা বাড়ানো এবং বর্ষাকালে উদ্বৃত্ত জলধারণ ক্ষমতা বাড়ানো ইত্যাদি৷

ভারত-বাংলাদেশ স্থলসীমা চুক্তি বাস্তবায়নেও দরকার সংসদের দুই-তৃতীয়াংশের অনুমোদন৷ সেখানে বেঁকে বসেছে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি৷ আপত্তি রয়েছে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস এবং আসামের অহম গণপরিষদের৷ সেখানেও প্রধানমন্ত্রীর হাত বাঁধা৷ শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে গত জুলাই মাসে ডা. দীপু মনি দিল্লিতে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে বোঝাতে চেষ্টা করেন যে, দু'দেশের মৈত্রী বন্ধন অটুট রাখতে এটা কত জরুরি৷ এতে ভারতের কৌশলগত সহযোগিতা বাড়বে৷ আর ঢাকার সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকলে দু'দেশেরই লাভ৷

সব থেকে বড় কথা, আওয়ামী লীগ ভোটে হেরে গেলে দৌরাত্ম্য বাড়বে ইসলামিক শক্তিগুলির৷ বিশেষ করে আফগানিস্তান থেকে যৌথ সেনা সরে গেলে পাকিস্তানের সীমান্ত থেকে যেমন জঙ্গি তৎপরতা বাড়বে, তেমনি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তেও তার আশঙ্কা থাকছে৷ দু'দিক থেকে তার মোকাবিলা করা ভারতের পক্ষে কঠিন হবে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহল৷ কাজেই, দু'দেশের সরকারের পক্ষে চুক্তি দুটি কার্যকর করার এটাই সম্ভবত শেষ সুযোগ৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য