1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বর্তমান রাজনীতি

১৬ মে ২০১২

বাংলাদেশে আর প্রায় দেড় বছর পরেই জাতীয় নির্বাচন৷ আর এরই মধ্যে সেই নির্বাচনকে ঘিরে নানা টানাপোড়েন বা ‘টেনশন’ শুরু হয়ে গেছে৷ এই টানাপোড়েন যেমন রাজনীতিবিদদের মধ্যে আছে, তেমনই রয়েছে সাধারণ মানুষদের মধ্যে৷

https://p.dw.com/p/14w3C
ছবি: DW/S.K.Dey

এই মুহূর্তে আগামী নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটভূমিতে চলছে নানা ধরনের টানাপোড়েন৷ শুধু রাজনীতিবিদ বা নাগরিকদের মধ্যেই নয়, বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা যুক্ত, অর্থাৎ দেশটির উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যেও এই ‘টেনশন' চোখে পড়ছে৷ বাংলাদেশের অন্যতম সমাজতত্ত্ববিদ এবং ব্র্যাক'এর ‘পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার'-এর সঙ্গে যুক্ত খন্দকার শাখাওয়াত আলী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এটা বাংলাদেশের জন্য নতুন কোন বিষয় নয়৷ নব্বই'এর দশকে এর এক ধরনের সমাধান আমরা করেছিলাম৷ যার ধারাবাহিকতায় দুর্বলতাসহই গণতন্ত্রের একটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপে আমরা এসে পৌঁছেছি৷ কিন্তু গতবারের নির্বাচনের যে অভিজ্ঞতা, তা থেকে দুটো প্রশ্ন আমাদের সামনে উপস্থিত, বিশেষত রাজনৈতিক দলগুলোর ভিতরে৷ প্রথমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে এবং পরবর্তীতে ‘আর্মি ইন্টারভেনশন'-এ আমরা হোঁচট খেয়েছি৷ তারই পরিপ্রেক্ষিতে একটা বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল – তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাটিকে সংবিধান থেকে বাদ দেয়া হয়েছে৷''

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে বিতর্ক

অথচ এখন দেখা যাচ্ছে যে প্রধান বিরোধী দল, বিএনপি'ও সেই একই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনারই দাবি উপস্থাপন করেছে৷ এটা কি আবারো একটি নতুন জটিলতার সৃষ্টি করছে না? এ প্রশ্নের জবাবে খন্দকার শাখাওয়াত আলী জানান, ‘‘একদিকে বিরোধী দল বলছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে বাদ দিয়ে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা যাবে না৷ অন্যদিকে সরকার বলছে যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার তো দেখলাম৷ ভিতর থেকেই যে তার গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট হয়েছে৷ তাই আগামীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে নিয়ে এসে সমস্যার সমাধান করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে৷ সুতরাং তার চেয়ে একটা দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের দিকে যেতে চাইছে আওয়ামী লীগ৷ আর সেটা হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করা৷ আমার মতে, এটা একটা গ্রহণযোগ্যতা বা বিশ্বাসের সংকট৷''

Streik in Bangladesch
ছবি: DW/S.K.Dey

জনগণের ভূমিকাকে অগ্রাহ্য করা ভুল হবে

তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে বাংলাদেশের জনগণও কি দু'ভাগে বিভক্ত? শাখাওয়াত আলী কিন্তু বলছেন অন্য কথা৷ তিনি বলছেন, ‘‘গোটা দেশকে দুটো ভাগে ভাগ করে ফেললে ভুল করা হবে৷ যাঁরা বিএনপি করেন, তাঁরা স্বাভাবিকভাবেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে চাইছেন৷ আবার যাঁরা আওয়ামী লীগ করেন, তাঁরা সেটা চাইছেন না৷ এখানে কিন্তু একটা তৃতীয় পার্টিও আছে৷ তাঁরা হচ্ছেন ‘ইলেক্টোরাল'৷ তাঁরা এ বিতর্কে এখনও অংশগ্রহণ করছেন না৷ তাই আমার ধারণা, বাংলাদেশে যে ‘স্টেলমেট' তৈরি হয়েছে এর একটা সমাধান আমাদেরই বের করতে হবে৷ এক্ষেত্রে টানাপোড়েনটা হলো যে, কোন্ জায়গাটায় বসে এ আলোচনাটা হবে – সেটা নিয়ে৷ তবে এখানে দুটো দলকে একটা সমঝোতায় আসতে হবে, যদি তারা দেশে গণতন্ত্রের প্রক্রিয়াটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়৷''

সাধারণভাবে দেখলে একটা গণতন্ত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আসার কথা নয়৷ কিন্তু এই যে সংসদ বয়কট করার একটা চল শুরু হয়েছে... এটা কি গণতন্ত্রের প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করছে না? খন্দকার শাখাওয়াত আলীর কথায়, ‘‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা হচ্ছে একটা ‘সফ্টওয়্যার'৷ সফ্টওয়্যার অনেক সময় ‘করাপ্ট' হয়ে পড়ে৷ ঠিক তেমনই, বিগত দিনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার কোন কারণে ‘করাপ্ট' হয়েছে৷ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে৷ তাই এখন আমাদের একটা নতুন সফ্টওয়্যার'এর প্রয়োজন৷ আসলে আমাদের দেশের রাজনীতিতে আমরা ভোট দিয়ে সরকার গঠন করছি, বিরোধী দল গঠন করছি৷ কিন্তু রাজনৈতিক সংস্কৃতিটা পরিবর্তন করা যাচ্ছে না৷ সরকার মানে যে বিরোধী দল এবং সরকারি দল – দুটোই এবং বিরোধী দলেরও যে ‘পারফরমেন্স'-এর একটা ব্যাপার আছে – সেটা দেখতে হবে৷''

সমাধানের রাস্তা খুঁজে বের করতে হবে আমাদেরই

তিনি আরো বলেন, ‘‘সামনের দেড়টা বছর হয়ত ঝড়-ঝঞ্ঝা হবে, কিন্তু এর মধ্য দিয়েই বিভিন্ন পক্ষের উপলব্ধির জায়গায় পৌঁছতে হবে আমাদের৷ যেটা হবে একটা আপোশ-রফা৷ আর আমাদের গণতন্ত্রে সে রকমই একটা সমাধানসূত্রের প্রয়োজন৷ আর সেটা আমাদেরই অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বের করতে পারবো বলে আশা রাখি৷ কিন্তু সেটা যদি না হয়, তাহলে এটা গণতন্ত্রের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হবে, হবে ব্যয়সাপেক্ষ৷ এটা বস্তুতই একটা রূপান্তরের কাল৷ তবে এই রূপান্তরের মধ্যে দিয়েই সমাধানের একটা রাস্তা খুঁজে বের করতে হবে আমাদের৷''

সাক্ষাৎকার: দেবারতি গুহ

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য