‘বরিস জনসনের উপর আর আস্থা করা যায় না'
১২ অক্টোবর ২০২০বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ সম্মেলনে ব্রিটেনের সঙ্গে ব্রেক্সিট-পরবর্তী সম্পর্কের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে৷ নভেম্বরের শুরুর মধ্যে বোঝাপড়া চূড়ান্ত না হলে আগামী ১লা জানুয়ারি চুক্তি ছাড়াই পাকাপাকিভাবে ইইউ ত্যাগ করবে ব্রিটেন৷ তাই আলোচনায় সাফল্যের জন্য চাপ বাড়ছে৷ অন্যদিকে আইন প্রণয়ন করে ব্রেক্সিট চুক্তির শর্ত ভাঙায় ব্রিটেনের উপর ইইউ-র আস্থা তলানিতে এসে ঠেকেছে৷ তাই ভবিষ্যৎ সম্পর্কের বিষয়ে চুক্তি সম্ভব হলেও ব্রিটেন যে সেই চুক্তিরও শর্ত ভাঙবে না, তা নিশ্চিত করার জন্য আইনি রক্ষাকবচের জন্য চাপ বাড়ছে৷
ফাইনান্সিয়াল টাইমস সংবাদপত্রের সূত্র অনুযায়ী, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ ও অন্যান্য ইইউ নেতারা ব্রিটেনের সঙ্গে সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে সেই চুক্তি কার্যকর করার জন্য কড়া নিয়মের উপর জোর দিচ্ছেন৷ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের উপর আর আস্থা না থাকায় এই বিষয়টির উপর তাঁরা জোর দিচ্ছেন৷ আগামী শীর্ষ সম্মেলনে তাঁরা ইইউ-র প্রধান মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে-কে স্পষ্ট জানিয়ে দেবেন যে, প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ও ব্রিটিশ কোম্পানিগুলির মধ্যে ন্যায্য পরিবেশ নিশ্চিত করতে বোঝাপড়া সম্ভব হলেও তা নিশ্চিত করতে রক্ষাকবচের ব্যবস্থা করতে হবে৷ অর্থাৎ ব্রিটেন শর্ত ভাঙলে ইইউ-র হাতে পালটা পদক্ষেপ নেবার ক্ষমতা থাকবে৷ ফ্রান্স ও অন্য কিছু দেশ ব্রিটেনের জলসীমায় মাছ ধরার অধিকারের ক্ষেত্রেও কড়া অবস্থান নিচ্ছে৷ ‘অন্যায্য' বোঝাপড়ার তুলনায় চুক্তি ছাড়াই সম্পর্কে ইতি টানতে প্রস্তুত ফ্রান্স৷
এই অবস্থায় মিশেল বার্নিয়ে কীভাবে ব্রিটেনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবেন, সে বিষয়ে সংশয় দেখা দিচ্ছে৷ কারণ, শেষ পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে কিছু আপোশ সম্ভব না হলে বাণিজ্য চুক্তি অবাস্তব হয়ে পড়বে৷ ব্রিটেনের চুক্তি ভাঙার কারণে ইইউ-র কড়া অবস্থান সেই নমনয়ীতার তেমন সুযোগ রাখছে না৷ রবিবার বরিস জনসন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ মতপার্থক্য দূর করতে অগ্রগতির উপর জোর দেন৷ তাঁর মতে, চুক্তি সম্ভব হলে দুই পক্ষই লাভবান হবে৷ তবে সেটা আদৌ সম্ভব না হলে ‘অস্ট্রেলিয়ার আদলে শর্ত' মেনে নিতেও প্রস্তুত ব্রিটেন৷ উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো বাণিজ্য চুক্তি নেই৷
ফ্রান্সের ইউরোপের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ক্লেমঁ বোন রবিবার বলেছেন, নভেম্বরের শুরুতেই ইইউ ও ব্রিটেনের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করতে হবে৷ শুধু আপোশের খাতিরে ইইউ কোনো চুক্তি মেনে নেবে না৷ চাপের মুখে কোনো ক্ষতিকর শর্ত মানা হবে না৷ বরিস জনসন শনিবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁকে বলেন যে, তিনি চুক্তির খাতিরে সব রকম পথ খতিয়ে দেখবেন৷ জনসন নিজে ১৫ই অক্টোবরের মধ্যে চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করলেও সেই সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ হয়ে পড়েছে৷ ইইউ আলোচনার চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রবেশ করার আগে ব্রিটেনের কাছ থেকে আরও কিছু ছাড় আদায় করতে চাইছে৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)