কৃত্রিম উপগ্রহ
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনাল, এসপিআই কোম্পানিকে পরামর্শদাতা হিসেবে নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে৷ এ মাসের ২৪ তারিখের মধ্যে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি হবে বলে জানালেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক কমিশন বিটিআরসি'র চেয়ারম্যান জিয়া আহমেদ৷
এসপিআই'এর কাজ কী হবে? এ সম্পর্কে বিটিআরসি'র চেয়ারম্যান বললেন, ‘‘তাদের কাজ হবে স্যাটেলাইট ডিজাইন ও এটির নির্মাণকাজ তদারকি করা৷ এছাড়া কৃত্রিম উপগ্রহটি উৎক্ষেপণের সঙ্গে বাংলাদেশের যারা জড়িত থাকবে তাদেরকেও সহায়তা করবে এসপিআই৷ গ্রাউণ্ড স্টেশন তৈরি, বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণ দেয়া এবং এই উপগ্রহকে কী কী ভাবে কাজে লাগানো হবে সেটার পরিকল্পনাও করবে এসপিআই৷''
জিয়া আহমেদ বলছেন, এসপিআই'এর সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে, কবে নাগাদ উপগ্রহটি উৎক্ষেপণ করা হতে পারে৷ তিনি বলছেন, ‘‘পরামর্শদাতারা আসার পর বিটিআরসির স্যাটেলাইট কমিটি তাদের সঙ্গে বসে বিষয়টি ঠিক করবে৷''
এসপিআই'এর পরামর্শদাতাদের সঙ্গে একসাথে বসে যেন বিটিআরসির কর্মকর্তারা কাজ করতে পারেন সেজন্য বিটিআরসি কার্যালয়ের পাঁচতলায় জায়গা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানান তিনি৷ ‘‘স্থান বরাদ্দ হয়ে গেছে৷ এখন সেটা ঠিকঠাক করার কাজ চলছে৷''
এছাড়া কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের এই কাজের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বিটিআরসি'র উপ-পরিচালক মো. গোলাম রাজ্জাককে৷
জিয়া আহমেদ বলছেন বিটিআরসি'র অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে৷ আর উপগ্রহটি হবে ‘সম্প্রচার ও যোগাযোগ' উপগ্রহ৷ অর্থাৎ এর মাধ্যমে দেশের বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলো উপকৃত হবে৷ তিনি বলছেন, ‘‘বর্তমানে দেশে ২২টি টিভি চ্যানেল রয়েছে৷ অন্য দেশের স্যাটেলাইট ব্যবহারের জন্য তারা প্রতি বছর ভাড়া হিসেবে অনেক টাকা দিচ্ছে৷ কিন্তু বঙ্গবন্ধু উপগ্রহ হয়ে গেলে সেটার আর প্রয়োজন হবে না৷''
জানা গেছে, একেকটি টিভি চ্যানেল স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ প্রতি বছর প্রায় ২ লাখ ডলার দিয়ে থাকে৷ সে হিসেবে বর্তমানে চ্যানেলগুলো প্রতি বছর প্রায় ৪০ লাখ ডলার ভাড়া দিচ্ছে৷
বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলছেন, সম্প্রচার ছাড়াও আর অন্য কোনো কাজে এই উপগ্রহকে কাজে লাগানো যায় কিনা সেটা ভেবে দেখা হবে৷ তিনি বলেন, ‘‘এসপিআই'এর সঙ্গে বসে ব্যবসা পরিকল্পনাটা ঠিক করা হবে৷ যেন উপগ্রহ উৎক্ষেপণটা লাভজনক হয়৷''
এর আগে একটি সংবাদ মাধ্যমকে জিয়া আহমেদ জানিয়েছেন, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য তিন থেকে চার হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে৷ তবে উৎক্ষেপণের পর ৫ বছরের মধ্যে সেই টাকাটা উঠে আসবে বলে জানিয়েছেন তিনি৷ আর পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান এসপিআইকে প্রায় ৮৭ কোটি টাকা দিতে হবে বলে জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান৷
এদিকে প্রকল্প পরিচালক গোলাম রাজ্জাক জানিয়েছেন, স্যাটেলাইট স্থাপনের জন্য ইতোমধ্যে মহাকাশ কক্ষপথে বাংলাদেশকে জায়গা দেওয়া হয়েছে৷ পরামর্শদাতা বিষয়ক প্রকল্প কার্যালয়ে বিদেশি পরামর্শক দলের ২৫ জন এবং বাংলাদেশের ছয় জন কাজ করবেন বলে জানান তিনি৷
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক