1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

২০১৩ সালের মধ্যে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠাতে চায় বাংলাদেশ

১৭ মে ২০১১

স্যাটেলাইট টিভি’র কল্যাণে স্যাটেলাইট কথাটির সঙ্গে সবাই বেশ পরিচিত৷ এর মানে হলো কৃত্রিম উপগ্রহ৷ বাংলাদেশের অনেক স্যাটেলাইট চ্যানেল থাকলেও নিজেদের কোনো কৃত্রিম উপগ্রহ নেই৷ সেই দু:খ হয়তো এবার ঘুচতে চলেছে৷

https://p.dw.com/p/11HVh
১৯৯৭-৯৮ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিল, কিন্তু পরে সেটা আর বাস্তবে রূপ নেয়নিছবি: AP

১৯৫৭ সাল৷ সেবছর প্রথমবারের মতো মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠাতে সক্ষম হয় সোভিয়েত ইউনিয়ন৷ যার নাম ছিল ‘স্পুটনিক ১'৷ এর পরের বছর অ্যামেরিকা এক্ষেত্রে সফলতা দেখায়৷ যদিও তারা পরিকল্পনা করছিল ১৩ বছর আগে থেকেই৷ পরবর্তীতে আরও অনেক দেশ কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করেছে৷ দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত এবং পাকিস্তানেরও নিজস্ব উপগ্রহ রয়েছে৷ এর মধ্যে ভারত নিজে নিজেই মহাকাশে উপগ্রহ পাঠানোর সামর্থ্য অর্জন করেছে৷ আর পাকিস্তান অন্য দেশের সহায়তায় উপগ্রহ পাঠিয়েছে৷ এখন, বাংলাদেশও সেটা করতে যাচ্ছে৷

পূর্বের কথা

১৯৯৭-৯৮ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিল৷ কিন্তু পরে সেটা আর বাস্তবে রূপ নেয়নি৷ এরপর আবার ঝোঁক উঠেছে উপগ্রহের ব্যাপারে৷ সে লক্ষ্যে কাজও শুরু হয়ে গেছে৷ ২০১৩ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ তার নিজস্ব একটি উপগ্রহ মহাকাশে পাঠাতে চায়৷ এ ব্যাপারে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা - বিটিআরসি৷ এর চেয়ারম্যান হলেন জিয়া আহমেদ৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বললেন, এখন পরামর্শক নিয়োগের কাজ চলছে৷ সাতটি প্রতিষ্ঠান এ ব্যাপারে তাদের প্রস্তাব জমা দিয়েছে৷ এর মধ্যে দুটি কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের৷ আর ক্যানাডা, ফ্রান্স, রাশিয়া ও জার্মানির একটি করে কোম্পানি রয়েছে৷ এসব কোম্পানির প্রস্তাব খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানালেন বিটিআরসি'র চেয়ারম্যান আহমেদ৷

তিনি বলেন পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে একটি প্রতিষ্ঠানকে পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হবে৷ তারাই ঠিক করবে, কে উপগ্রহটি তৈরি করবে এবং মহাকাশে পাঠাবে৷ এছাড়া উপগ্রহটি মহাকাশের কোথায় থাকবে, এর বেস স্টেশনই বা কোথায় হবে, উপগ্রহটি কী কী কাজে লাগানো যেতে পারে, সেসব ব্যাপারে বু্দ্ধি দেবে ঐ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান৷ পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে ২৮ মাস সময় বেঁধে দেয়া হবে বলেও জানালেন বিটিআরসি'র চেয়ারম্যান৷

উপগ্রহ প্রেরণের জন্য বাংলাদেশ ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন বা আইটিইউ'এর কাছ থেকে কক্ষপথ বরাদ্দ নিয়েছে৷

সুবিধা

সফলভাবে উপগ্রহ পাঠাতে পারলে বাংলাদেশের কী লাভ হতে পারে? জিয়া আহমেদ বলছেন, এটি হবে একটি কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট অর্থাৎ যোগাযোগ উপগ্রহ৷ ফলে টেলিযোগাযোগ, টিভি ও বেতার সম্প্রচারের মত কাজগুলো এই উপগ্রহ দিয়ে করা সম্ভব হবে, এখন যেটা করা হচ্ছে অন্য দেশের উপগ্রহ ব্যবহার করে৷ যার জন্য খরচ হচ্ছে প্রচুর অর্থ৷ এছাড়া আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেয়া এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কাজও করা যাবে এই উপগ্রহের মাধ্যমে৷ চাইলে অন্য দেশকেও উপগ্রহ ব্যবহারের জন্য ভাড়া দেয়া যেতে পারে৷ সেক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের একটা উৎস হতে পারে এই উপগ্রহ৷

আরও কিছু তথ্য

কৃত্রিম উপগ্রহগুলো উৎক্ষেপণের সময়েই পর্যাপ্ত জ্বালানি দিয়ে দিতে হয়৷ কারণ মহাকাশে রিফুয়েলিংয়ের কোনো সুযোগ নেই৷ তবে কিছু উপগ্রহ জ্বালানি হিসেবে সৌরশক্তি ব্যবহার করে৷ আগেই বলা হয়েছে, সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রথমে কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠাতে সক্ষম হয়৷ সেটা ১৯৫৭ সালে৷ এরপর ঐ বছরই ‘স্পুটনিক ২' নামের আরেকটি উপগ্রহ পাঠায় দেশটি৷ সেটাতে ‘লাইকা' নামের একটি কুকুরকেও পাঠানো হয়েছিল৷ যদিও উৎক্ষেপণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাপনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে লাইকা মারা গিয়েছিল৷

এবার দুর্ঘটনার খবর৷ দুবছর আগে আমেরিকার কৃত্রিম উপগ্রহ ‘ইরিডিয়াম ৩৩' এবং রাশিয়ার ‘কসমস ২২৫১' উপগ্রহের মধ্যে ধাক্কা লাগার ঘটনা ঘটেছিল৷ মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা-র উপগ্রহ বিজ্ঞানী মার্ক ম্যাটনি'র মতে, সেটাই ছিল দুটি গোটা কৃত্রিম উপগ্রহের মুখোমুখি সংঘাতের প্রথম ঘটনা৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী