ফের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থা বিক্রির পরিকল্পনা
২৪ ডিসেম্বর ২০১৯এতদিন ছিল শুধু এয়ার ইন্ডিয়া৷ এ বার তার সঙ্গে যুক্ত হল ভারত পেট্রোলিয়ামও৷ টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন স্পষ্ট করে দিলেন যে, ২০২০ সালের মার্চ মাসের মধ্যে এয়ার ইন্ডিয়া এবং ভারত পেট্রোলিয়ামের মতো দু টি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থাকে বেসরকারি সংস্থার হাতে বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার।
সোমবার অর্থমন্ত্রী বলেন, ''এয়ার ইন্ডিয়া এবং ভারত পেট্রোলিয়াম-- দু টি সংস্থাই ঋণের বোঝায় জর্জরিত। বহু দিন ধরেই সংস্থা দু টি লাভের মুখ দেখছে না। ফলে সরকারকে ভর্তুকি দিয়ে চালাতে হচ্ছে। মার্চের মধ্যে দু টি সংস্থাকেই সরকার বিক্রি করতে পারবে বলে আমরা মনে করছি।'' সীতারামনের দাবি, এই দু টি সংস্থআকে বিক্রি করতে পারলে বড় অঙ্কের টাকা ঢুকবে রাজকোষে। যার সাহায্যে ভারতের বর্তমান অর্থনৈতিক মন্দার সঙ্গে মোকাবিলা করা যাবে।
এয়ার ইন্ডিয়া এবং ভারত পেট্রোলিয়ামকে যে সরকার বিক্রি করতে চাইছে, তা নিয়ে বহু দিন ধরেই জল্পনা চলছিল। সংসদের গত শীত অধিবেশনে সরকার পরিস্কারভাবে জানায়, এয়ার ইন্ডিয়া বিক্রি করা ছাড়া আর কোনও পথ খোলা নেই৷ না হলে তা বন্ধ করে দিতে হবে৷ বিরোধীদের বক্তব্য, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থাগুলিকে বিক্রি করে সরকার মুষ্টিমেয় কিছু বেসরকারি সংস্থা এবং শিল্পপতিকে সাহায্য করার চেষ্টা করছে। বস্তুত এর আগে ফ্রান্সের কাছ থেকে যুদ্ধ বিমান কেনার সময়েও একই অভিযোগ উঠেছিল। দেখা গিয়েছিল রাফাল যুদ্ধ বিমান তৈরির বরাত রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থাকে না দিয়ে রিলায়েন্সকে দেওয়া হয়েছে। যুদ্ধবিমান তৈরির ক্ষেত্রে যাদের কোনও অভিজ্ঞতাই নেই। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে এই বিষয়টি নিয়ে গোটা দেশ জুড়ে প্রচার চালিয়েছিল কংগ্রেস।
২০১৯ এ বিজেপি দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফেরার পরে আরও বেশ কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থাকে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয় বিজেপি সরকার। যার মধ্যে রেল এবং অস্ত্র তৈরির কারখানার মতো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা আছে। বাম এবং কংগ্রেস এর প্রতিবাদে দিকে দিকে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। চাপের মুখে সরকার জানায় অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি অর্থাৎ, অস্ত্র তৈরির কারখানা বেসরকারি হাতে দেওয়া হচ্ছে না।
এয়ার ইন্ডিয়াকেও এর আগে বেশ কয়েকবার বিক্রির প্রসঙ্গ উঠেছে। চেষ্টাও হয়েছে৷ খুব একটা সাড়া পাওয়া যায়নি৷ বামেরা এর তীব্র প্রতিবাদ করেছে বরাবর। এখন দেখার সরকারের এই নতুন সিদ্ধান্তের পর নতুন করে আন্দলন শুরু হয় কি না। প্রশ্ন উঠছে, এয়ার ইন্ডিয়ার মতো সংস্থাকে কেনার সাহস দেখাবে কোন সংস্থা। ইতিমধ্যেই টাটা এবং স্পাইস জেটের নাম আলোচনায় এসেছে। তাছাড়া নির্মলা যে পরিমাণ অর্থপ্রাপ্তির আশা করছেন, এই মন্দার বাজারে দুই সংস্থা বিক্রি করে সত্যিই কি তা পাওয়া যাবে?
এসজি/জিএইচ (টাইমস অফ ইন্ডিয়া)