ফুকুশিমায় তেজস্ক্রিয় পানি সাগরে গিয়ে পড়ছে
২ এপ্রিল ২০১১ঐ চৌবাচ্চায় কেবল, মানে মোটা বিদ্যুতের তার রাখা হতো৷ জাপানের সরকারি পরমাণু কর্তৃপক্ষ এবং ফুকুশিমার পরিচালক সংস্থা টেপকো, উভয়েই বলছে কংক্রিট কিংবা সিমেন্ট দিয়ে ফাটলটা বোজানোর কথা৷ তাড়াটা এই কারণে যে, ঐ চৌবাচ্চার জলের তেজস্ক্রিয়তা ঘণ্টায় ১,০০০ মিলিসিভার্ট৷ এবং সাগরের জলে যে পরিমাণ তেজস্ক্রিয় আয়োডিন-১৩১ পাওয়া গিয়েছে, তা আইনত বৈধ সীমার ৪,০০০ গুণ ঊর্ধ্বে৷
কিন্তু ফুকুশিমার আসল সমস্যা তো পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ভবনগুলি থেকে তেজস্ক্রিয় পানি সরানো, যা'তে কর্মীরা রিয়্যাক্টরগুলিকে শীতল রাখার প্রণালী আবার চালু করতে পারে৷ সমস্যা যেমন জটিল, তেমন নানা ধরণের সমাধানের কথাও ভাবা হচ্ছে৷ তেজস্ক্রিয় পানি রাখার জন্য সাগরে একটি ১৮,০০০ টন পানি ধরার মতো পন্টুন বা ভাসমান ট্যাংক তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে৷ ওদিকে রিয়্যাক্টরগুলোকে ঠান্ডা রাখার একমাত্র পন্থা এখন ওপর থেকে পানি ফেলা৷ টেপকো এখন মার্কিন নৌবাহিনীর একটি গাধাবোট দিয়ে জল আনাচ্ছে সেই কাজে৷ জল - অথবা প্রয়োজনে সিমেন্ট কি কংক্রিট পাম্প করার জন্য শক্তিশালী পাম্প দরকার৷ কাজেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসছে বিশ্বের বৃহত্তম সিমেন্ট বুম পাম্প, ৭০ মিটার অবধি পাম্প করার ক্ষমতা রাখে৷ এগুলো আবার রিমোট কন্ট্রোল দিয়েও চালানো যায়৷ এ'ধরণের দু'টি পাম্প আসছে আগামী সপ্তাহান্তে, বিশ্বের বৃহত্তম পরিবহণ বিমান, রুশ আন্টোনভ এএন-২২৫'এ চড়ে৷ জার্মানি আর চীন তো আগেই এ'ধরণের পাম্প পাঠিয়েছে৷
আসলে ঠিক এই ধরণের বুম পাম্প দিয়েই উক্রেইনের চেরনোবিলে পারমাণবিক দুর্ঘটনার পর রিয়্যাক্টরটিকে কংক্রিটের স্তর দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়৷ অর্থাৎ ফুকুশিমাতে যদি শেষমেষ সেই পথে যেতে হয়, তা'হলে কংক্রিট ঢালার ব্যবস্থা হাতেই রইল৷
জাপানের প্রধানমন্ত্রী নাওতো কান এই প্রথমবার বিপর্যয় পীড়িত এলাকায় গিয়ে কর্মীদের বলেছেন: তাদের এই প্রত্যয় নিয়ে লড়তে হবে যে, এ'লড়াইতে হারা চলবে না৷ কেননা এটা জাপানের ভাগ্য নির্ধারণের লড়াই৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই