1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রত্যাশার চাপ ও ভয়ের মুখে তুরস্ক

সংবাদভাষ্য: বাহা গ্যুনগর/এসবি১৫ অক্টোবর ২০১৪

তুরস্কের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সমালোচনা বাড়ছে৷ ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর বিরুদ্ধে সংগ্রামে ন্যাটোর এই সদস্য দেশ কুর্দিদের সাহায্য করার বদলে নিষ্ক্রিয় রয়েছে৷ বাহা গ্যুনগর মনে করেন, এর ফলে তুরস্ক নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনছে৷

https://p.dw.com/p/1DVpc
Kampf um Kobani Sicherheitsvorkehrungen auf der türkischen Seite 29.09.2014
ছবি: Getty Images

সিরিয়া সীমান্তে তুরস্কের সারিসারি ট্যাংক নিরাপদ দূরত্ব থেকে প্রতিবেশী দেশের ভূখণ্ড দখলের লড়াই দেখছে৷ অথচ কুর্দিদের ঘাঁটি কোবানি শহরের উপর ইসলামিক স্টেট সন্ত্রাসবাদীদের হামলা শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রত্যাশা ছিল যে, তাদের সেনাবাহিনী সীমান্ত পেরিয়ে আইএস-এর হামলা বানচাল করে দেবে৷

তুরস্কের হামলার বিপক্ষে যুক্তি

তুরস্কের বর্তমান নীতির সমালোচকরা কিন্তু প্রতিবেশী দেশে এমন হস্তক্ষেপের পরিণতি সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করছেন না৷ তুরস্ক কি নিজেকে সিরিয়ার কাছে দখলদারি শক্তি হিসেবে তুলে ধরবে? আইএস জঙ্গি অথবা স্বৈরাচারী শাসক বাশার আল-আসাদের বাহিনী যদি নিজস্ব ভূখণ্ডের সুরক্ষায় পালটা হামলা চালায়, তার কী পরিণতি হবে? তখন কি সিরিয়ার সমর্থক দেশ রাশিয়া ও ইরান আসাদের সহায়তায় এগিয়ে আসবে না? এর জের ধরে যদি ইসরায়েল সহ একের পর এক দেশ গোটা অঞ্চল জুড়ে এক বিস্তারিত যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, কে তার দায়-দায়িত্ব নেবে?

Auftanken einer F-16 Incirlik Air Base Türkei
তুরস্ক কি নিজেকে সিরিয়ার কাছে দখলদারি শক্তি হিসেবে তুলে ধরবে?ছবি: picture-alliance/U.S. Air Force/Tom Kennedy

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ান যখন তুরস্কের একতরফা হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করেন এবং অ্যামেরিকার নেতৃত্বে এক বৃহত্তর সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী জোটের দাবি করেন, তখন তার বিরুদ্ধে কিছু বলার থাকে না৷ কিন্তু এই দাবির পেছনে এর্দোয়ানের নিজস্ব একটা লক্ষ্যও রয়েছে৷ তিনি চান, আইএস-এর পাশাপাশি আসাদেরও পতন হোক৷ এককালের বন্ধু আসাদের বিরুদ্ধে এর্দোয়ান অনেক দূর এগিয়ে গেছেন৷ ফলে আসাদের পতনের দাবি তাঁর পক্ষে আর ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়৷ কিন্তু সহযোগীদের কেউ এই মুহূর্তে সেই লক্ষ্য পূরণে কোনো সংগ্রামে অংশ নিতে প্রস্তুত নয়৷ তাদের সবার নজর আপাতত আইএস-এর দিকে৷

তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি ব্যবহার করতে দেওয়া উচিত

আরেকটি বিষয়ও তুরস্কের নীতির উপর বোঝা হয়ে রয়েছে৷ আঙ্কারার সরকার কুর্দিদের ভয় পায়৷ কোবানি শহরের মুক্তির পর তুরস্ক ও সিরিয়ার কুর্দিরা একজোট হয়ে এক তুরস্ক-বিরোধী জোট গড়তে পারে, এমন আশঙ্কার ফলে তুরস্ক কুর্দিদের সহজে সীমান্ত পেরোতে দিচ্ছে না৷ ফলে কোবানি শহরের প্রতিরোধের ক্ষমতা অত্যন্ত দুর্বল হয়ে উঠছে৷

একদিকে আইএস-এর বিরুদ্ধে সংগ্রামের জন্য প্রবল আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে৷ অন্যদিকে রয়েছে তুরস্কের জঙ্গি কুর্দিদের আঙ্কারার বিরুদ্ধে সংগ্রামের ভয়৷ ফলে বেশ কয়েক দিন ধরে তুরস্কের নেতৃত্ব বিবশ হয়ে রয়েছে৷ তাই একের পর এক সুযোগ নষ্ট হচ্ছে৷ যেমন কুর্দিদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে তাদের সঙ্গে শান্তির পথে এগোনো৷ এর বদলে সরকার প্রায় দু’বছরের বিরতির পর কুর্দি পিকেকে সংগঠনের ঘাঁটির উপর বোমা ফেলেছে৷ ফলে পিকেকে-ও আবার স্বাধীন কুর্দি রাষ্ট্রের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠছে৷ উল্লেখ্য, জার্মানিতেও পিকেকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে কালো তালিকায় রয়েছে৷ প্রায় ৩০ বছর আগে তারা যাত্রা শুরু করেছিল৷ তখন থেকে চলে আসা সংগ্রামে প্রায় ৪০,০০০ মানুষের মৃত্যু ঘটেছে৷ লক্ষ লক্ষ নিরীহ মানুষকে ভিটেমাটি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে৷ এই অবস্থায় তুরস্কের বিরুদ্ধে নতুন করে সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগ্রাম এবং তার পালটা সামরিক প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা আরও বাড়ছে৷

Deutsche Welle Türkisch Bahaeddin Güngör
বাহা গ্যুনগরছবি: DW

বৃহত্তর সন্ত্রাসবাদ বিরোধী জোটে অংশ না নিয়ে তুরস্ক যতদিন নিজেকে নিয়ে এবং অভ্যন্তরীণ কুর্দি সমস্যা নিয়ে ব্যস্ত থাকবে, ততদিন অরাজকতা আরও বাড়তে থাকবে৷ তাই তুরস্কের উচিত অন্তত ছোট এক পদক্ষেপ নিয়ে আইএস দমন সংগ্রামে নিজস্ব সামরিক ঘাঁটি খুলে দেওয়া৷ এটা করলে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী জোট আকাশ থেকে আইএস-এর বিরুদ্ধে আরও কার্যকর হামলা চালাতে পারবে৷ অনেক দশক ধরে তুরস্ক নিজেকে গর্বের সঙ্গে ন্যাটোর নির্ভরযোগ্য সহযোগী হিসেবে তুলে ধরে এসেছে৷ এই সামরিক জোটে যোগ দেবার ৬২ বছর পর সেই ভাবমূর্তি এখন প্রশ্নের মুখে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য