চাকরি হারালেন ১,৫০০ পোশাক শ্রমিক
২৭ ডিসেম্বর ২০১৬চলতি মাসের শুরুর দিকে ঢাকার আশুলিয়ায় ফ্যাক্টরি ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন কয়েক হাজার পোশাক শ্রমিক৷ জিএপি, জারা এবং এইচএন্ডএম-এর মতো আন্তর্জাতিক ব্রান্ডের পোশাক তৈরি করা হয় এ সব কারখানায়৷ পশ্চিমে ছুটির মৌসুমে পোশাক শ্রমিকদের কাজ না করার সিদ্ধান্তের কারণে বিপাকে পড়ে পোশাক প্রস্তুতকারীরা৷
পুলিশ সেসময় বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের এই আন্দোলনকে অবৈধ ঘোষণা করে শ্রমিক ইউনিয়নের সাত নেতা এবং ত্রিশ শ্রমিককে আটক করে৷ মঙ্গলবার পুলিশ জানিয়েছে, আশুলিয়ায় আন্দোলনের কবলে পড়া পোশাক কারখানাগুলোর মালিকরা অন্তত দেড় হাজার শ্রমিককে চাকুরিচ্যুত করেছেন৷
‘‘সবগুলো কারখানায় আবারো কাজ শুরু হয়েছে৷ আর নব্বই শতাংশের মতো শ্রমিক কাজে ফিরে গেছেন'', বলেন স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা নূর নবী৷ তিনি আরো বলেন, ‘‘মালিকরা দেড় হাজার শ্রমিককে চাকুরিচ্যুত করার পাশাপাশি আন্দোলনরতদের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলাও করেছেন৷''
বাংলাদেশ গার্মেন্টস এন্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশন অবশ্য দাবি করেছে সাড়ে তিন হাজারের মতো শ্রমিককে চাকুরিচ্যুত করেছে কর্তৃপক্ষ৷ পাশাপাশি আন্দোলনের আয়োজকদের বেশ কয়েকজন চাপের মুখে নিজেদের গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফেডারেশন৷
প্রসঙ্গত, পোশাক শ্রমিকরা তাদের বেতন বাড়িয়ে তিনগুণ করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে চলিত মাসের শুরুতে৷ বর্তমানে তাদের ন্যূনতম বেতন ৫,৩০০ টাকা৷ কিন্তু মালিকরা সেই দাবি মেনে নেয়নি৷ শ্রমিক নেতারা দাবি করেছেন, প্রতিবাদকারীদের মুখ বন্ধ করতে পুলিশ সেনাশাসনের সময়কালের এক বিতর্কিত আইন প্রয়োগ করেছে৷ পুলিশ জানিয়েছে, শুধুমাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্তদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের রপ্তানির আশি শতাংশ হচ্ছে তৈরি পোশাক৷ দেশটির ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পোশাক খাত গত কয়েক বছরে একাধিকবার সমালোচিত হয়েছে৷ ২০১৩ সালে সাভারে ভবন ধসে প্রাণ হারান কমপক্ষে ১,১৩০ ব্যক্তি যাদের প্রায় সবাই পোশাক শ্রমিক ছিলেন৷ এরপর শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ এবং নিরাপত্তার বিষয়টি আলোচনায় আসলেও পরিস্থিতি এখনো আশানুরূপভাবে বদলায়নি৷
এআই/ডিজি (এএফপি)