1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
ব্যবসা-বাণিজ্য

‘রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানায় শিশু শ্রমিক নেই'

সমীর কুমার দে ঢাকা
৮ ডিসেম্বর ২০১৬

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে প্রাপ্তবয়স্করাই সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টা কাজ করেন, সেখানে বাংলাদেশের শিশুরা করে ৬০ ঘণ্টা করে৷অথচ বিজিএমইএ ও শ্রমিক নেতারা দাবি করেছেন, বাংলাদেশের রপ্তানীমুখি গার্মেন্টসগুলোতে কোনো শিশু শ্রমিক নেই৷

https://p.dw.com/p/2Txz0
Bangladesch Textilarbeiterinnen
ছবি: picture-alliance/Zuma Press/S.K. Das

লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও মানবকল্যাণ বিষয়ক গবেষণা সংস্থা ওভারসিজ ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (ওডিআই) এক প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশের অনেক শিশু সপ্তাহে ৬০ ঘণ্টা বা তার চেয়েও বেশি কাজ করে৷ তবে এ প্রসঙ্গে পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ও সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং দুই জন শ্রমিক নেতা ও নেত্রী ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, বাংলাদেশের বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-র আওতাভুক্ত কোনো প্রতিষ্ঠানে শিশু শ্রমিক নেই৷তবু তাঁরা দাবি করেন, এ বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটরিং করা হয়৷ তবে স্থানীয় চাহিদা মেটাতে যেসব কারখানায় পোশাক তৈরি হয় সেগুলোতে কিছু শিশু শ্রমিক থাকতে পারে৷ পাশাপাশি অফিসের বাইরে বিভিন্ন জায়গাতেও শিশু শ্রমিক কাজ করে৷

সিদ্দিকুর রহমান

বিজিএমইএ-র সভাপতির সিদ্দিকুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কেউ প্রমাণ করতে পারবে না যে আমাদের কোনো প্রতিষ্ঠানে শিশু শ্রমিক আছে৷ আমি ওডিআই-র এই রিপোর্ট প্রত্যাখান করি৷ পাশাপাশি তাদের বলতে হবে বাংলাদেশের কোন গার্মেন্টসে শিশু শ্রমিক আছে৷ আমি দায়িত্ব নিয়েই বলছি, আমাদের এখানে কোনো শিশু শ্রমিক নেই৷''  

ওডিআই-র গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী ঢাকায় বস্তিবাসী শিশুশ্রমিকরা সপ্তাহে গড়ে ৬০ ঘণ্টা কাজ করে৷ তাদের বেশির ভাগই চাকরি করে পোশাক কারখানায়, যেখানে বিশ্বের নামি-দামি ব্র্যান্ডগুলোর পোশাক-পরিচ্ছদ তৈরি করা হয়৷ বস্তিবাসী শিশুদের মধ্যে ১৫ শতাংশই স্কুলে যায় না৷ তাদের বয়স ৬ থেকে ১৫ বছর এবং তারা কারখানাগুলোতে পূর্ণকালীন (ফুলটাইম) চাকরি করে৷ ‘শিশুশ্রম ও শিক্ষা  ঢাকার বস্তিবাস জরিপ' শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, বস্তি এলাকার দুই-তৃতীয়াংশ কিশোরী দেশটির দ্রুত বিকাশমান পোশাক কারখানাগুলোতে পূর্ণকালীন কাজ করে৷ জরিপের এই ফল বাংলাদেশের তিন হাজার কোটি ডলারের পোশাক তৈরি শিল্পের জন্য উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে৷

সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ

বিজিএমইএ-র সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই ধরনের রিপোর্টের সঙ্গে আমি একমত নই৷ আমাদের সদস্যভুক্ত কোনো ফ্যাক্টরিতেই শিশু শ্রমিক নেই৷ আমরা মনিটরিং করি, বায়াররা মনিটরিং করে৷ তাদের সবার অফিস আছে৷ তবে কেরানিগঞ্জের মতো কিছু এলাকায় স্থানীয় চাহিদা মেটাতে যে পোশাক তৈরি হয় তাদের মধ্যে কিছু শিশু শ্রমিক থাকলেও থাকতে পারে৷ এগুলোর ব্যাপারেও আমরা সরকারকে বলছি, বলব৷''

এদিকে ঢাকার একটি পোশাক কারখানার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যবস্থাপক বলেন, ‘‘১১ থেকে ১৪ বছরের শিশুদের দিয়ে কাজ করানো উচিত নয়, বিষয়টি তিনি জানেন৷ তবে শিশুদের এই বেআইনি নিয়োগের জন্য তিনি দায়ী নন৷ তিনি স্বীকার করেন, তাদের বেশির ভাগ কর্মীরই পরিচয়পত্র নেই৷ ফলে তাদের বয়স যাচাইয়েরও সুযোগ নেই৷'' বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, শ্রমিক নেতারা তাদের বলেছেন, কারখানাগুলোতে শিশুশ্রম দিন দিন বাড়ছে৷

ইনস্টিটিউট অফ লেবার স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা শিশুশ্রম নিয়ে কাজ করি৷ কিন্তু গার্মেন্টসে এই ধরনের শিশু শ্রমিক আছে বলে আমাদের জানা নেই৷ তবে হ্যাঁ, স্থানীয় পোশাক তৈরি করে, এমন কিছু ফ্যাক্টরিতে কিছু শিশু শ্রমিক থাকতে পারে৷ বিদেশে এক্সপোর্ট করা হয় এমন কোনো গার্মেন্টসে শিশু শ্রমিক আছে এমন তথ্য আমাদের জানা নেই৷ সেটা মনে হয় ঠিকও না৷''

ওডিআই-র প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ঢাকার বস্তিগুলোর ১৪ বছর বয়সি শিশুদের অর্ধেকই শিশুশ্রমে নিয়োজিত৷ প্রতিবেদনটির লেখকদের একজন মারিয়া কোট্টি বলেন, বেশির ভাগ শিশুই স্কুলে যেতে চায়৷

মোশরেখা মিশু

কিন্তু দারিদ্র্যই তাদের মা-বাবাকে বাধ্য করে শিশু সন্তানদের কাজে দিতে৷ যদিও তারা জানে, তা তাদের শিশুদের দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর৷ গবেষণায় আরো বলা হয়, বাংলাদেশে ১০ বছর পর্যন্ত শিশুদের শিশুশ্রমের পরিমাণ বেড়েছে ৪৫ শতাংশ৷ আর ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের মধ্যে শিশুশ্রমের পরিমাণ বড়েছে ছেলেদের ক্ষেত্রে ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ এবং মেয়েদের মধ্যে ৩৪ দশমিক ৬ শতাংশ৷ এর মধ্য দিয়ে এসব শিশু চরম গ্লানিকর অভিজ্ঞতা অর্জন করে৷ শ্রমিক নেত্রী মোশরেখা মিশু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এ ধরনের কোনো তথ্য ঠিক নয়৷ আমরা সব সময় খোঁজ খবর রাখি৷ কোনো গার্মেন্টসেই নেই৷''

প্রিয় পাঠক, আপনিও কি মনে করেন রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানায় কোনো শিশু শ্রমিক নেই? আপনার মতামত জানান নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান