1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নজরদারিতে বিএনপি নেতা

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৯ আগস্ট ২০১৪

নিখোঁজ হওয়ার সাড়ে তিন মাসের মাথায় ব্রিটেন প্রবাসী বিএনপি নেতা মুজিবুর রহমান মুজিব উদ্ধার হওয়ার পর, ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন৷ পুলিশ পাহারাও রয়েছে সেখানে৷ সোমবার তিনি তাঁর শ্যালকের বাসায় ফিরে আসেন৷

https://p.dw.com/p/1Cwsy
Bangladesch - Landesweiter Streik
ছবি: Getty Images

মুজিবুর রহমানের শ্যালক আনোয়ার হোসেনের বাসা গুলশানে৷ মুজিব ও তাঁর গাড়ি চালক মো. রেজাউল হক সোহেল ছাড়া পেয়ে নিজেরাই সেই বাসায় যান৷ আনোয়ার হোসেন বলেন, সোমবারই তিনি দেশের বাইরে থেকে ঢাকায় ফিরেছেন৷ তিনি দু'জনের উদ্ধার হয়েছে খবর পেয়ে বাসায় গিয়ে দেখেন যে, মুজিব ও সোহেল বিছানায় শুয়ে আছেন৷ তাঁদের এরপর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করে ফিরে আসার খবর পুলিশকে জানানো হয়৷ এরপর রাতে গুলশান জোনের পুলিশের একজন সহকারী কমিশনারের নেতৃত্বে বেশ কিছু সাদা পোশাকের পুলিশ ইউনাইটেড হাসপাতালে যান৷

আনোয়ার হোসেন জানান, প্রাথমিক আলাপচারিতায় মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন যে, গত ৪ঠা মে বিকেলে সুনামগঞ্জ থেকে সিলেট ফেরার পথে সিলেট শহরতলীর টুকের বাজার এলাকায় তাঁকে বহনকারী গাড়িটির গতিরোধ করে একটি মাইক্রোবাস৷ ঐ গাড়িতে বসা ছিল ৮ থেকে ১০ জন লোক৷ তারা নিজেদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর লোক পরিচয় দেয়৷ প্রথমে তারা গাড়ির চালক সোহেলের লাইসেন্স দেখতে চায়৷ এরপর দু'জনকে গাড়ি থেকে নামতে বলে৷ গাড়ি থেকে নামার পর পরই পাশেরই মাইক্রোবাসে উঠতে বলে মুজিব ও গাড়ি চালক সোহেলকে৷
এ সময় মুজিব ও সোহেল ধস্তাধস্তির চেষ্টা করলে আগন্তুকরা অস্ত্র বের করে তাঁদের মাথায় ঠেকায় ও গুলি করার হুমকি দিয়ে গাড়িতে তুলে নেয়৷ গাড়িতে উঠার পর পরই মুজিব ও সোহেলের নাকে কিছু একটা স্প্রে করা হয়৷ এরপর আর কোনো কিছু বলতে পারেননি তিনি৷

গুলশান জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার লুত্‍ফুর কবির সাংবাদিকদের জানান, বিএনপি নেতা মুজিবুর রহমানকে পুলিশি নজরদারিতে রাখা হয়েছে৷ তিনি সুস্থ হলে দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস কোথায় ছিলেন, কারা তাঁকে অপহরণ করেছিল – এ ব্যাপারে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে৷

ইউনাইটেড হাসপাতালের ক্লিনিকাল কো-অর্ডিনেটর মাহিন আহমেদ বলেন, হাসপাতালে মুজিবের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে৷ চিকিত্‍সকেরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফল হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন৷ তিনি জানান, মুজিব দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়বেটিস ও থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছিলেন৷ তাঁর রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রাও কিছুটা কম৷ তবে তাঁর কথাবার্তা স্বাভাবিক৷

ব্রিটেন বিএনপির উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান ও তাঁর গাড়িচালক রেজাউল হক সোহেল গত ৪ঠা মে ‘হত্যা-গুম'-এর প্রতিবাদে সুনামগঞ্জে বিএনপির এক সমাবেশে যোগ দিয়ে সিলেটে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন৷

৬ই মে মুজিবের ভাগনি জামাতা অধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন৷ ঐ দিন দুপুরে জেলা বিএনপি মুজিবের সন্ধান চেয়ে শহরের লন্ডন প্লাজার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে৷ ৭ই মে মুজিব ও তাঁর গাড়ি চালক সোহেলের সন্ধান দাবিতে সুনামগঞ্জ শহরে মানববন্ধন এবং ৮ই মে সুনামগঞ্জ জেলায় আধাবেলা হরতাল পালন করে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন৷
সাধারণ ডায়েরিকে অভিযোগ হিসেবে নিয়ে পুলিশ ঘটনার পর সিলেট শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে আকবর চৌধুরী, জিহাদ ও তারেক নামে তিন যুবককে আটক করে৷ অপরদিকে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার কসবা গ্রাম থেকে মাহমুদ নামে অপর এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ৷ মুজিব নিখোঁজের ঘটনায় আটককৃতরা বর্তমানে জামিনে আছেন বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানে আলম খান৷

গাড়ি চালক বাড়ি ফেরেনি

নিখোঁজ হওয়ার প্রায় সাড়ে তিন মাস পর উদ্ধার হলেও মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত বাড়ি ফেরেননি মুজিবুর রহমানের গাড়ির চালক মো. রেজাউল হক সোহেল৷ পরিবারের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়নি৷ খোঁজ না পেয়ে তাঁর পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে৷

সোহেলের বাবা ওয়াহিদুল হক জানান, সোমবার রাত নয়টায় দিকে টেলিভিশনে মুজিব ও রেজাউলের খোঁজ পাওয়ার সংবাদ দেখেন তিনি৷ এরপর তিনি মুজিবের ভাতিজা আবুল হোসেনের কাছে ফোন করেন৷ তখন আবুল হোসেন তাঁকে জানান, সোহেলকে সুনামগঞ্জে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ মুজিবের শ্যালক আনোয়ার হোসেন জানান, সোমবার রাতেই এক হাজার টাকা দিয়ে সোহেলকে ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জে যেতে বলা হয়েছে৷ তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সে সুনামগঞ্জ যায়নি৷ সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ জানান, পুলিশও গাড়িচালক সোহেলকে খুঁজছে৷

Rapid Action Battalion RAB Spezialeinheit Militär Dhaka Bangladesh
পুলিশও গাড়িচালক সোহেলকে খুঁজছেছবি: Getty Images/AFP
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য