পাহাড়ের ঢালে এক অন্যরকম বাড়ি
৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮বাড়িটিতে ছাদ দুটি৷ একটি উপরে, অন্যটি নীচের দিকে৷ বাইরের দিকটা বেশ সাধারণ৷ স্থপতি কনিয়াচনির এই বাড়িকে পোল্যান্ডের অন্যতম আধুনিক বাড়ির স্বীকৃতি দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা৷
খুব অল্প আসবাব আর হালকা রং শান্তির এক আবহ সৃষ্টি করেছে৷ বড় জানালা বাড়ির একটি অন্যতম উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য৷ রুচিশীল এই ফায়ারপ্লেস বাড়িকে গরম আর আরামদায়ক রাখে৷ রবার্ট কনিয়াচনির কাছে নকশা বড় বিষয় নয়৷ তিনি বলেন, ‘‘ঘরের ভেতরটা শান্ত আর সাধারণ হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি৷ এই বাড়ির দুই পাশের দৃশ্য বেশ সুন্দর৷ প্রতিদিনই তা পাল্টায়৷ আজ যেমন কুয়াশা৷ মনে হচ্ছে, যেন স্বর্গে আছি৷''
একটি রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে বাড়ির প্রধান দরজা খোলে৷ পরে নৌকায় ওঠার মতো জেটিতে করে ভেতরে ঢোকা যায়৷ মনে হয়, যেন পাহাড়ের ঢালে একটি নৌকা কিছুক্ষণের জন্য থেমেছে৷ বাড়ির একপাশের দেয়াল প্রয়োজনে খোলা যায়৷ এভাবে প্রকৃতির আলো ঘরের ভেতরে ঢোকানো যায়৷ কনিয়াচনি বলেন, ‘‘আমি যদি এখানে একটা বাগান কিংবা টেরাস বানাতাম, তাহলে তার চারদিকে বেড়া দিতাম৷ তা দেখতে অদ্ভুত লাগত, অপ্রয়োজনীয় মনে হতো৷ আমি এমনভাবে বাড়িটি বানিয়েছি, যেন মনে হয়, পুরো পাহাড়টাই আমার৷ বাড়িটা যেন পাহাড়ের মধ্যে ভাসছে৷ এখানে কোনো সীমানা নেই৷''
এই বাড়ির আয়তন প্রায় ১৪০ বর্গমিটার, এবং এটি এমনভাবে বানানো হয়েছে যেন পাহাড় থেকে আসা পানি এর নীচ দিয়ে চলে যেতে পারে৷
বাড়ির নীচে কোনো ফাউন্ডেশন নেই৷ তিনটি পিলারের উপর দাঁড়িয়ে আছে এটি৷ নীচটা এমনভাবে বানানো যে, পিলারগুলো দেখা যায় না৷ কনিয়াচনি এখানে বসবাস শুরুর পর ‘আর্ক' শব্দের তাঁর কাছে যেন অন্য আরেক মানে হয়ে উঠেছে৷
কনিয়াচনি জানান, ‘‘প্রাণীরা এই বাড়িকে ভয় পায় না৷ গ্রীষ্মে তারা এর আশেপাশেই থাকে ও ঘুমায়৷ আর শীতের সময় তারা বনে থাকে৷''
বাড়িটি নির্মাণের সময় পরিবেশের কথাও মাথায় রাখা হয়েছিল৷ যেমন, বাথরুমে এমন এক ফোম ব্যবহার করেছেন কনিয়াচনি, যা দেখতে বিশেষ কিছুর মতো দেখায়৷ তাছাড়া এই দেয়াল অনেক তাপমাত্রা ধরে রাখতে পারে৷ একেবারে সাধারণ নকশা, তবে কার্যকরী৷
আর্কিটেকচার ও ডিজাইন ম্যাগাজিন ‘ওয়ালপেপার' কনিয়াচনির বাড়িকে ২০১৭ সালের সবচেয়ে সেরা ব্যক্তিগত বাড়ি নির্বাচন করেছে৷ অবশ্য পোল্যান্ডের এই স্থপতির পুরস্কার জেতার কোনো লক্ষ্য ছিল না৷ তিনি কেবল শহরের কোলাহলমুক্ত এক পরিবেশে থাকতে চেয়েছিলেন৷ এখানে তিনি সেটা পেয়েছেন৷
কার্স্টেন কামিন্সকি/জেডএইচ