পাকিস্তানকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দুর্ভাবনা
৬ জানুয়ারি ২০১১মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তাসির হত্যাকাণ্ডের গুরুত্ব স্পষ্টই বোঝা যায়৷ মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন বলেন যে, দেশে সহিষ্ণুতা বৃদ্ধির জন্য তাসিরের কাজের তিনি সশ্রদ্ধ ভক্ত ছিলেন৷ বুধবার হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র রবার্ট গিবস'ও তাসিরের সেই সহিষ্ণুতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টার কথাই বলেছেন৷ আসলে তাসিরকে পাকিস্তান পিপলস পার্টির মুখ্য মধ্যমপন্থী কণ্ঠগুলির মধ্যে গণ্য করা হতো৷ তিনি ছিলেন পাকিস্তানের উদারপন্থী এলিটের প্রতিভূ৷ তাঁকে জীবন দিতে হল তিনি শুধু পাকিস্তানের বিতর্কিত ঈশ্বরনিন্দা আইনের সমালোচক ছিলেন বলে৷ এবং তাঁর মৃত্যুর পর পাকিস্তানে ৫০০ মৌলবি তাসিরের হত্যাকাণ্ডে শোকপ্রকাশের উপর ফতোয়া জারি করেছেন৷ কাজেই ওয়াশিংটনের চিন্তার কারণ আছে বৈকি৷
স্পাই ভার্সেস স্পাই
অবশ্য তার আগে থেকেই মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ এবং পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই'এর মধ্যেও গোঁসা চলেছে৷ এবং সে গোঁসা অনেকদিনের৷ বিশেষ করে আইএসআই ভারত-বিরোধী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে সাহায্য করে থাকে বলে৷ ওদিকে এই গোষ্ঠীগুলির আল-কায়েদা এবং তালিবানের সঙ্গে যোগ আছে, বলে মার্কিন কর্মকর্তাদের ধারণা৷ অর্থাৎ তারা যুগপৎ মার্কিন বিরোধী৷ এছাড়া পাকিস্তান সরকার যে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে চলতি সামরিক অভিযানকে দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান ছাড়িয়ে উত্তর ওয়াজিরিস্তান অবধি প্রসারিত করতে রাজি নন, সেটাও মার্কিনিদের গোঁসার একটা কারণ৷
হীলির অঙ্গুলিনির্দেশ
যুক্তরাষ্ট্রে দণ্ডপ্রাপ্ত ডেভিড হীলি'রও এই বিরোধে একটা ভূমিকা আছে৷ হীলি অভিযোগ করেছে, ২০০৮ সালের মুম্বই সন্ত্রাসে আইএসআই'এর সংযোগ ছিল৷ এরপর যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয়দের তিনটি মামলা দায়ের করতে দেওয়ার পরে আইএসআই'এর তরফ থেকে নাকি পাকিস্তানে সর্বোচ্চ সিআইএ কর্মকর্তার নামটি ফাঁস করে দেওয়া হয়৷ সেটাই নাকি এই দুই গুপ্তচর সংস্থার ইতিহাসে সর্বনিম্ন পর্যায়৷
তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই৷ আসল ব্যাপারটা এই: মার্কিনি এবং পাকিস্তানি গুপ্তচর বিভাগগুলি পরষ্পরের ওপর এ্যাতোটাই নির্ভর যে, কোনোপক্ষই বিবাদটাকে পুরোপুরি বিভেদ হয়ে উঠতে দেবে না৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: ফাহমিদা সুলতানা