‘হুট করে সম্পন্ন ছিন্ন করা ঠিক না'
২৩ ডিসেম্বর ২০১৫বাংলাদেশের কোনো কারখানার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা এটাই অবশ্য প্রথম নয়৷ এর আগেও আরো তিনটি কারখানার সঙ্গে একইভাবে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়েছিল৷ এ বিষয়ে তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এভাবে হুট করে সম্পর্ক ছিন্ন করা ঠিক নয়৷ কোনো ফ্যাক্টরি যদি সংস্কার পরিকল্পনা বা কারেকটিভ অ্যাকশন প্ল্যান (ক্যাপ) জমা না দেয়, তাহলে তারা আমাদের কাছে জানাবে৷ কারণ অ্যাকর্ড-এর সঙ্গে আমাদের যে সমঝোতা রয়েছে, তাতে বলা হয়েছে যে, আমরা না পারলে সরকার বা শ্রম মন্ত্রণালয় রয়েছে, তারাও দেখবে৷ তারপরও যদি না হয়, তবেই তারা সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারে৷ কিন্তু এই পাঁচটি গার্মেন্টসের ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ করা হয়নি৷ এখানে যাই করা হোক না কেন আমাদের সঙ্গে নিয়ে করতে হবে৷ অ্যাকর্ড বা অ্যালায়েন্স এককভাবে কিছু করতে পারবে না৷ কোনো ‘বায়ার' বা ক্রেতা যদি কারো সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চায়, তারা সেটা করতে পারে৷ কিন্তু এককভাবে অ্যাকর্ড বা অ্যালায়েন্স এটা পারে না৷''
সর্বশেষ ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করা এই পাঁচটি কারখানা হলো – চট্টগ্রামের ক্যালভিন ফ্যাশন, চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকার কুপার কোম্পানি লিমিটেড, আশুলিয়ার আলফা নিট অ্যাপারেলস, রাজধানীর মগবাজার এলাকার জেয়সি'জ অ্যাপারেল ও নারায়নগঞ্জের সিনসিয়ার নিট গার্মেন্টস৷ শুধু তাই নয়, কারখানার নিরাপত্তা মান উন্নয়নের লক্ষ্যে চলমান সংস্কার প্রক্রিয়ায় সময়মত কার্যকর অগ্রগতিতে ব্যর্থ হওয়ায় আরো একশ'টি তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করেছে অ্যাকর্ড৷ এ সব কারখানার অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা, ভবনের কাঠামো ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা মান উন্নয়ন করতে সংস্কারের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হলেও, তারা ‘ক্যাপ' বাস্তবায়নে ব্যর্থ হওয়ায় কারখানাগুলোর বিরুদ্ধে সতর্কতা জারি করা হয়েছে৷
অ্যাকর্ড-এর বিবৃতিতে বলা হয়, এ সব কারখানা ভবনের কাঠামো, অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাগুলো পরিদর্শন করা হয়৷ ত্রুটি সংশোধনের লক্ষ্যে কারখানাগুলো সময়মত কারেকটিভ অ্যাকশন প্ল্যান বা ক্যাপ জমা দিতে ব্যর্থ হয়৷ ফলে তাদের সঙ্গে আর ব্যবসায়িক সম্পর্ক রাখা সম্ভব হচ্ছে না৷
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ২৪শে এপ্রিল রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় ১১শ'র বেশি শ্রমিক নিহত হওয়ার পর, বাংলাদেশি কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরীক্ষার উদ্যোগ নেয় ইউরোপ ও অ্যামেরিকার ব্র্যান্ডগুলোর সমন্বয়ে গঠিত দু'টি জোট৷ অ্যাকর্ড-এ স্বাক্ষরকারী ১৯২টি ব্র্যান্ডের কাছে পোশাক রপ্তানি করে এমন ১ হাজার ৫শ' কারখানা পরীক্ষা ও সংস্কার কাজ তদারক করছে অ্যাকর্ড৷ আগামী ২০১৮ সাল পর্যন্ত এ সব কারখানার সংস্কার কাজ তদারক করতে অ্যাকর্ড-এ স্বাক্ষরকারী ব্র্যান্ডগুলো চুক্তি স্বাক্ষর করেছে৷ অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স-এর পরিদর্শনে ঝঁকিপূর্ণ বিবেচনায় ইতিমধ্যেই ৩৬টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে বাংলাদেশে৷ সর্বশেষ ৮টি কারখানার সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করল অ্যাকর্ড৷
বন্ধুরা, এভাবে হুট করে ৫টি কারখানার সঙ্গে সম্পন্ন ছিন্ন করা কি ঠিক হয়েছে অ্যাকর্ড-এর? জানান আপনার মতামত৷