পর্নহাবে ধর্ষণের ভিডিওর অভিযোগ, তদন্তে মাস্টারকার্ড
৭ ডিসেম্বর ২০২০শুক্রবার নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, পর্নহাব ডট কম ওয়েবসাইটে রয়েছে এমন কিছু ভিডিও যা আসলে শিশুদের ওপর যৌন হয়রানির ও ধর্ষণের প্রচার করছে৷ এসব ভিডিওতে দেখানো নারী ও কিশোরীদের রেকর্ডিংয়ের সময়ে কোনো হুঁশ ছিল না, সুতরাং ভিডিও করার বিষয়ে তাদের সম্মতির বিষয়টি স্পষ্ট নয় বলেও জানানো হয় প্রতিবেদনে৷
প্রতিবেদক নিকোলাস ক্রিস্টফ বলেন, ‘‘এখানে বিষয় আসলে পর্নোগ্রাফি নয়৷ এখানে আসল বিষয় ধর্ষণের প্রশ্ন৷ আমাদের বোঝা উচিত যে, কোনো একটি শিশু বা অন্য কারো সাথে ঘটা হয়রানিকে তাদের অমতে প্রচার করা আসলে অনৈতিক৷’’
এই অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে পর্নহাব সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে একটি ইমেলে জানায়, ‘‘আমরা যে শিশুদের ওপর যৌন হয়রানির কোনো ধরনের ভিডিও প্রচার করি, তা বলা অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন ও সম্পূর্ণ মিথ্যা৷’’
পর্ন দুনিয়া ও ক্রেডিটকার্ড সংস্থা
বিশ্বের পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইটের ব্যবসার সাথে তাবড় ক্রেডিটকার্ড সংস্থা ও ব্যাংকেও যোগসূত্র রয়েছে৷ ফলে, এই ইস্যুতে উঠছে তাদের নামও৷
ক্রেডিটকার্ড সংস্থা মাস্টারকার্ড রয়টার্সকে জানিয়েছে যে, তারা পর্নহাবের মালিক ‘মাইন্ডগিক’ সংস্থার ব্যাংকিং গতিবিধির ওপর তদন্ত চালাচ্ছে৷ একটি বিবৃতিতে তারা জানান, ‘‘যদি এই অভিযোগগুলি প্রমাণিত হয়, তাহলে আমরা অবিলম্বে ব্যবস্থা নেবো৷’’
বিখ্যাত হেজফান্ড ইনভেস্টর ও ধনকুবের বিল অ্যাকমান মাস্টারকার্ড ও ভিসার মতো ক্রেডিটকার্ড সংস্থাকে আপাতত পর্নহাবের সাথে সবরকমের লেনদেন বন্ধ রাখতে বলেছেন৷ তিনি অ্যামেরিকান এক্সপ্রেসকেও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলেন, যদিও অ্যামেরিকান এক্সপ্রেসের বক্তব্য, তারা কখনোই কোনো ধরনের পর্নসাইটের সাথে ব্যবসায় যায় না৷
অ্যাকমানের প্রস্তাব, কোনো ধরনের পরীক্ষা ছাড়া এই ধরনের ভিডিও কোনো পর্নসাইটে তুলে দেওয়াকে নিষিদ্ধ করা হোক৷ সাথে, ভিডিওতে উপস্থিত সবার বয়স ও ভিডিওতে সম্মতি নিশ্চিত করে তবেই যাতে ছাড়া হয় এই ধরনের ভিডিও, তাতে জোর দেন বিল অ্যাকমান৷
পর্নহাবের দাবি, তারা প্রতিটি ভিডিও আপলোড করার সময় যাচাই করে থাকে৷
রাজনীতিতেও পর্নহাবের প্রভাব
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন রাজনীতির ময়দানেও আলোচনার সৃষ্টি করেছে৷ ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানিয়েছেন যে, তার সরকার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে৷
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনেটর জশ হলি জানান, তিনি নতুন আইন প্রণয়নের চেষ্টা করবেন যাতে করে পর্নহাবের মতো সাইটগুলির মাধ্যমে হয়রানি বা পাচারের ঘটনাগুলিকে রাষ্ট্রীয় বিচারের আওতায় আনা যায়৷
এসএস/এসিবি (রয়টার্স)