পরিণতির জন্য পশ্চিমকে কেন দায়ী করছেন ইমরান খান?
২ এপ্রিল ২০২২ভাষণে একবার মুখ ফসকে অ্যামেরিকার নাম বলে ফেলেন ইমরান খান৷ তিনি বলেন, ‘‘অ্যামেরিকা -- ওহ, না অ্যামেরিকা নয়, কিন্তু একটি বিদেশি রাষ্ট্র, যার নাম আমি বলতে পারব না৷ আমি বলতে চাচ্ছি, এক বিদেশি রাষ্ট্রের কাছ থেকে আমরা একটি বার্তা পেয়েছি৷’’
ইমরান অভিযোগ করেন বিরোধীরা পশ্চিমের সঙ্গে মিলে তাকে সরাতে চাইছে৷
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷
বিশ্লেষকরা বলছেন, পশ্চিমকে অভিযুক্ত করে ইমরান খান জনগণকে বিরোধীদের বিরুদ্ধে নিয়ে যেতে চাইছেন৷ ভারতে পাকিস্তানের হাই কমিশনার আব্দুল বাসিত ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘পররাষ্ট্রনীতিকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসা বিপজ্জনক হতে পারে৷ এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান পাকিস্তানের জন্য ক্ষতিকর৷''
প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে ক্ষমতায় আছেন ইমরান খান৷বিরোধীরা তার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা ও রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের অ্যাক্টিভিস্টদের উপর নিপীড়ন চালানোর অভিযোগ এনেছে৷ এছাড়া তার সময়ে মূল্যস্ফীতি ও বেকারত্ব অনেক বেড়েছে৷
বিশ্লেষকরা বলছেন অনাস্থা ভোটের ফল যাই হোক না কেন পাকিস্তান আগাম নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে এবং ইমরান মনে করছেন মার্কিন-বিরোধী বক্তব্য দিলে আগাম নির্বাচন হলেও সেখানে জিতে তিনি আবার ক্ষমতায় ফিরতে পারবেন৷
‘‘প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবেই পরবর্তী নির্বাচনের জন্য পশ্চিমাবিরোধী অবস্থান নিয়েছেন,’’ বলেন পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক মোশাররফ জায়দি৷
রাশিয়া যেদিন ইউক্রেনে হামলা চালায় সেদিন মস্কো সফর করেন ইমরান খান৷ এরপর থেকে তিনি তার সমর্থকদের সামনে নিজেকে ‘পশ্চিম-বিরোধী' নেতা হিসেবে উপস্থাপন করছেন৷
ওয়াশিংটনের উড্রো উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, ‘‘খান সম্ভবত সাম্প্রতিক সময়ে পশ্চিম-বিরোধী কঠোর সমালোচনা করে বেশ কিছু দেশকে অসন্তুষ্ট করেছেন৷... আমার মনে হয় এমন বার্তা পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীকেও অসন্তুষ্ট করেছে৷ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বেসামরিক নেতৃত্বের চেয়ে জেনারেলদের বেশি ইতিবাচক মনে হয়েছে৷''
কুগেলম্যান মনে করছেন, ইমরান খান বর্তমানে যে সংকটে পড়েছেন তা থেকে উতরে যেতে সামরিক বাহিনীর সহায়তা আশা করতে পারেন না৷ কারণ সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গে তার সম্পর্ক ঠিক হবার নয়৷ সামরিক বাহিনীর অন্যরাও ইমরানকে নিয়ে খুশি নয় বলেও জানান কুগেলম্যান৷
হারুন জানজুয়া (ইসলামাবাদ)/জেডএইচ