পরমাণু জট কাটাতে রাশিয়া সফরে কিম জং উন
২৪ এপ্রিল ২০১৯কোণঠাসা হলেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে উত্তর কোরিয়া যে একা নয়, সে দেশের নেতা কিম জং উন আবার তা প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন৷ প্রতিবেশী ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী দেশ চীনের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্কের পাশাপাশি আরেক প্রতিবেশী রাশিয়ার সঙ্গেও সম্পর্ক আরও জোরদার করতে বদ্ধপরিকর কিম৷
সেই উদ্যোগের আওতায় তিনি বৃহস্পতিবার রাশিয়ার ভ্লাদিভস্তক শহরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে বসতে চলেছেন৷ পুটিন তাঁকে রাশিয়া সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন৷ বুধবার তিনি ট্রেনে করে স্থলসীমান্ত পেরিয়ে সেখানে পৌঁছেছেন৷ সীমান্তে খাসান শহরে রাশিয়ার সরকার তাঁকে সাড়ম্বরে স্বাগত জানিয়েছে৷ বুধবার রাশিয়ার উপ প্রধানমন্ত্রী ইউরি ত্রুটনেভ কিম জং উন-এর সম্মানে এক নৈশভোজের আয়োজন করেছেন৷ শুক্রবারই কিমের দেশে ফেরার কথা৷
২০১৮ সালের মার্চ মাস থেকে কিম জং উন জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা দেখাচ্ছেন৷ বিচ্ছিন্নতা কাটিয়ে তিনি বেশ কয়েকটি দেশের শীর্ষ নেতার সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন৷ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে চার বার, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে ইন-এর সঙ্গে তিন বার ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দুই বার ও ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এক বার মিলিত হয়েছেন তিনি৷
পরমাণু কর্মসূচির কারণে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে আটকে পড়ে উত্তর কোরিয়ার পক্ষে অনেক পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে৷ ওয়াশিংটনের সমর্থন ছাড়া সেই নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ার সম্ভাবনা নেই৷ গত ফেব্রুয়ারি মাসে ভিয়েতনামে ট্রাম্প-এর সঙ্গে দ্বিতীয় শীর্ষ বৈঠকে এ ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি হাসিল করতে পারেন নি কিম৷ একতরফাভাবে পরমাণু অস্ত্র ত্যাগ করতে এখনো প্রস্তুত নন তিনি৷ অন্যদিকে ট্রাম্প প্রশাসন পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের ক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়ার আরও উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ দেখতে চায়৷ তারপরই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে প্রস্তুত ওয়াশিংটন৷
এমন প্রেক্ষাপটে গত সপ্তাহে নতুন অস্ত্র পরীক্ষার মাধ্যমে তিনি আবার নিজের শক্তি প্রদর্শন করেছেন৷ এই অবস্থায় চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে আরও নিবিড় সম্পর্কের পথে এগোনোর চেষ্টা করছেন কিম৷ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে এই দুই দেশ উত্তর কোরিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার পক্ষে সওয়াল করছে৷
সাবেক পরাশক্তি হিসেবে রাশিয়ার নিজস্ব সমস্যাও কম নয়৷ প্রেসিডেন্ট পুটিন রাশিয়ার গৌরব আবার ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তৎপরতা বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন৷ কোরীয় উপদ্বীপের সংকটের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমাধানসূত্রের লক্ষ্যে সে দেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করতে আগ্রহী৷ ট্রাম্প-কিম বৈঠকে যে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা দিয়েছিল, তার উপর ভিত্তি করে পুটিন পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যেতে চান৷ উল্লেখ্য, ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পুটিন উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন৷ তারই আওতায় কিম জং উন প্রথম রাশিয়া সফরে এলেন৷
এসবি/ডিজি (এএফপি, ডিপিএ, এপি)