পদ্মা সেতুর উদ্বোধনে বিএনপি নেতাদের দাওয়াত
২২ জুন ২০২২সেতু বিভাগের উপ সচিব দুলাল চন্দ্র সূত্রধর বুধবার বেলা ১১টায় নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে রুহুল কবির রিজভীর হাতে দাওয়াত কার্ড তুলে দেন৷
বিএনপির সাত নেতা- মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদের নামে ওই দাওয়াতপত্র দিয়েছে সেতু বিভাগ৷ উপসচিব দুলাল বলেন, ‘‘আমি সেতু বিভাগের পক্ষ থেকে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কার্ড দিতে এসেছি৷ ’’
কার্ড হাতে নেওয়ার সময় রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা এই কার্ড রিসিভ করিনি৷ আমি অফিসে বসে ছিলাম, জাস্ট তারা দিয়ে গেছেন, ব্যাস৷ সেতু বিভাগের কর্মকর্তা দিয়ে গেছেন৷ এটা নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না৷ এর সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নাই৷’’
নয়া পল্টনে কার্ড দেওয়ার সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল খায়ের ভুঁইয়া, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারিসহ অনেকে সেখানে ছিলেন৷
আগামী শনিবার পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ তার আগে বুধবার সকালে নিজের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পদ্মার স্বপ্ন পূরণ নিয়ে কথা বলেন তিনি৷
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে বিএনপি যে সব সময়ই সংশয়ী ছিল, সে কথা তাদের নেতাদের বক্তব্য থেকে উদ্ধৃত করেই সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী৷
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ার পর প্রাথমিক সমীক্ষা হলেও বিএনপি যে পরে অন্য জায়গায় সেতু করার কথা বলে প্রকল্প আটকে দিয়েছিল, সে কথাও তিনি বলেন৷
বিএনপি নেতাদের পাশাপাশি অর্থনীতিবিদ, ‘সুশীল' সমাজের প্রতিনিধিসহ যারাই বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে টানাপড়েন আর নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে বিভিন্ন নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন, তাদের সবাইকে সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেওয়ার ইচ্ছার কথা বলেন সরকার প্রধান৷
পদ্মা সেতুর নির্মাণ প্রকল্পের শুরু থেকেই নানা ‘দুর্নীতি ও লুটপাটের' অভিযোগ করে আসছেন বিএনপি নেতারা৷ ২০১৩ সালের জুনে প্রকল্পের শুরুর দিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, ‘‘বিশ্ব ব্যাংকের সম্পৃক্ততা ছাড়া পদ্মা সেতু নির্মাণ অসম্ভব৷ সরকারের একগুয়েমি ও দাম্ভিকতার কারণে বিশ্ব ব্যাংক এই সেতু প্রকল্প থেকে অর্থায়ন তুলে নিয়ে গেছে৷ এখন পদ্মাসেতুর টেন্ডার আহবান করা হয়েছে৷ এটি পাগলের প্রলাপ ছাড়া কিছুই নয়৷ ’’
শুরুতে এই প্রকল্পে অর্থায়নের চুক্তি করে বিশ্ব ব্যাংক৷ পরে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলে, যা নিয়ে দীর্ঘ টানাপোড়েন চলে৷ কিন্তু সেই অভিযোগ তারা প্রমাণ করতে পারেনি৷ পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে নিজস্ব অর্থায়নে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়৷
দেশবাসী এখন ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকায় নির্মিত সেতুতে যান চলাচলের অপেক্ষায়৷
এনএস/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)