শিক্ষায় আগ্রহ কমছে!
১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬হিসাবটি এ রকম৷ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী সোমবার থেকে যারা এসএসসি এবং সমমানের পরীক্ষায় বসেছে, তাদের সংখ্যা ১৬ লাখ ৫১ হাজার ৫২৩ জন৷ এরাই ২০১০ সালের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল৷ তখন তাদের সংখ্যা ছিল ২৪ লাখ ৮৬ হাজার ৩১৮ জন৷ দেখা যাচ্ছে, পাঁচ বছরের দৌঁড় শেষে মাধ্যমিক, ভোকেশনাল ও দাখিল সমাপনী পরীক্ষা পর্যন্ত ঝরে পড়েছে অন্তত লাখ ১১ হাজার ৩৯১ জন শিক্ষার্থী৷ তারা এক হয় এবারের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে না অথবা এ পর্যন্ত পৌঁছাতেই পারেননি তারা৷
বাংলাদেশে শিক্ষার হার বাড়ানোর জন্য নানা ব্যবস্থা চালু আছে৷ তার মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, মেয়েদের জন্যে উপ-বৃত্তি অন্যতম৷
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, এর বাইরে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় দেশের ৬১টি জেলার পিছিয়ে পড়া ১২৫টি উপজেলার ৫৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের গণিত ও ইংরেজি বিষয়ের প্রতি ভীতি দূর করতে অতিরিক্ত ক্লাস পরিচালনা করা হচ্ছে৷ এছাড়া শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া বন্ধ করতে বর্তমান সরকার আগের মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পরপরই শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা চালু করে৷ কিন্তু তাতেও এই ঝড়ে পড়া বন্ধ করা যাচ্ছে না৷
এমন কেন হচ্ছে জানতে চাইলে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এর প্রধান কারণ দারিদ্র্য৷ অভিভাবকদের বড় একটি অংশ প্রাথমিকের পর তাদের সন্তানদের পড়াশুনা চালিয়ে নিতে পারছেন না৷ শিক্ষা উপকরণ বিনামূল্যে পাওয়া যাচ্ছে৷ কিন্তু তাদের ভরণপোষন তো আর সরকার দেবে না৷ তাই ছেলে শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ পড়াশোনা বাদ দিয়ে কাজে ঢুকে যাচ্ছে৷''
তাঁর কথায়, ‘‘শিক্ষা এখনো সেই অর্থে উপযোগিতা তৈরি করতে পারেনি৷ কারণ দেশের শিক্ষিতদের একটি অংশ বেকার৷ তাঁরা চাকরি পান না৷ তাই হয়ত অভিভাবকরা মনে করছেন, পড়াশোনা করে কী হবে, চাকরি তো পাবে না৷ তাই তাঁরা ছেলেদের অল্প বয়সেই কাজে ঢুকিয়ে দিচ্ছেন৷''
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী মনে করেন, ‘‘শিক্ষাব্যবস্থা এবং অর্থনীতির মধ্যে একটা ভারসাম্যহীন অবস্থা তৈরি হয়েছে৷ তাই শিক্ষার প্রতি আগ্রহ কমছে৷ শিক্ষা যে অর্থকরী এবং পড়াশুনা করলে চাকরি পাওয়া যাবে, তা নিশ্চিত করতে হবে৷ নয়ত এই আগ্রহ কমতেই থাকবে৷''
বন্ধুরা, শিক্ষার প্রতি আগ্রহ কিভাবে বাড়ানো যায়? জানান আপনার মত, নীচের ঘরে৷