ফিরতে চান অনুপ চেটিয়া
২৮ জুন ২০১৩ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অফ আসাম বা উলফার শীর্ষ নেতা অনুপ চেটিয়াকে বাংলাদেশে আটক করা হয় ১৯৯৭ সালের ২১শে ডিসেম্বর, ঢাকার মোহাম্মদপুরের একটি বাড়ি থেকে৷ আটকের পর অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান এবং অবৈধভাবে বিদেশি মুদ্রা ও স্যাটেলাইট ফোন রাখার অভিযোগে, তাঁর বিরুদ্ধে মোট তিনটি মামলা হয়৷ ঐ তিনটি মামলায় তাঁর যথাক্রমে তিন, চার ও সাত বছরের জেল হয়৷
২০০৭ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি তাঁর সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে৷ এরপর থেকে অনুপ চেটিয়া বাংলাদেশের কারাগারে নিরপত্তা হেফাজতে আছেন৷ মানবাধিকার সংগঠন ‘মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা' উচ্চ আদালতে অনুপ চেটিয়ার নিরপত্তা নিয়ে রিট করলে তাঁকে নিরাপত্তা হেফাজতে বাংলাদেশের কারাগারে রাখার আদেশ দেয় উচ্চ আদালত৷ আবেদনে কারাদণ্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর, অনুপ চেটিয়াকে ভারতে না পাঠিয়ে নিরপত্তার কারণে বাংলাদেশের কারাগারে অথবা তৃতীয় কোনো দেশে পাঠানোর কথা বলা হয়েছিল৷
এদিকে, গোড়া থেকেই অনুপ চেটিয়াকে ফেরত চেয়ে আসছিল ভারত৷ বিশেষ করে সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর, দেশটি এ নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করছিল৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকেও বার বার বলা হয়েছিল যে, আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অনুপ টেচিয়াকে ফেরত দেয়া হবে৷
এবার অবশ্য অনুপ চেটিয়ার এক আবেদনের কারণে বিষয়টি অনেক সহজ হয়ে গেছে৷ তিনি এখন রাজশাহী কারাগারে আছেন৷ সেখানকার জেল সুপার তৌহিদুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, অনুপ চেটিয়া গত ২৩শে মে তাদের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক আবেদনে তাঁর নিজ দেশ ভারতে ফেরার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন৷ এছাড়া, তাঁর দুই সহযোগী লক্ষ্মী প্রসাদ গোস্বামি এবং বাবুল শর্মা আলাদা আলাদা আবেদনে একই ইচ্ছার কথা জানিয়েছে৷ আবেদনগুলো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই৷ তবে এখনও মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত জানা যায়নি৷
তবে এ কথা জানা গেছে যে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় অনুপ চেটিয়ার আবেদনের ওপর কাজ করছে৷ অনুপ চেটিয়া নিজে থেকে ভারতে ফেরার আবেদন করায় তাঁকে ফেরত পাঠানো এখন আগের চেয়ে সহজ৷ কারণ তাঁর সাজার মেয়াদ শেষ হয়েছে৷ তাই অন্য কোনো আইনি সমস্যা না থাকলে তাঁকে তাঁর নিজ দেশে ফেরত পাঠানোই সাধারণ নিয়ম৷ সব থেকে বড় কথা, বাংলাদেশ ও ভারতের সঙ্গে ইতিমধ্যেই বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷
২০১০ সাল থেকে উলফার সঙ্গে নতুন দিল্লির শান্তি আলোচনা চলছে৷ সেই প্রেক্ষাপটেই অনুপ চেটিয়া ভারতে ফিরে যেতে আবেদন করেছে বলে মনে করছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়৷ তাই তাঁকে খুব তাড়াতাড়ি ফেরত পাঠানো হতে পারে, যদিও সুনির্দিষ্ট করে সময় জানা যায়নি৷
এদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দিন খান আলমগীর ডয়চে ভেলেকে জানান, এখনও তারা অনুপ চেটিয়াকে ভারতের কাছে হস্তান্তরের বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে জানানোর জন্য প্রস্তুত নন৷ প্রস্তুত হলে সব কিছুই সংবাদ মাধ্যমকে জানানো হবে৷