1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নারায়ণগঞ্জে শিক্ষকের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত

১৭ মে ২০১৬

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে বাগেরহাটের দুই শিক্ষককে জেলে পাঠানোর পরই আবার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে সেই অভিযোগ৷ এবার নারায়ণগঞ্জ৷ সেখানে মসজিদে ঘোষণা দিয়ে লোক জড়ো করে কান ধরে ওঠ-বস করানো হয় শিক্ষককে৷

https://p.dw.com/p/1IoyA
ইরেশ জাকের
অভিনেতা ও চলচ্চিত্র নির্মাতা ইরেশ জাকেরছবি: Privat

গত ১৩ মে, শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের কল্যাণদি এলাকার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তর বিরুদ্ধে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ তুলে তাঁকে প্রকাশ্যে কান ধরে ওঠ-বস করানো হয়৷ অথচ সেই স্কুলের ধর্মীয় শিক্ষকও বলছেন, প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত ধর্মের অবমাননা হওয়ার মতো কিছু বলেছেন বলে তিনি শোনেননি৷ ধর্মীয় শিক্ষক আরো জানিয়েছেন, যে শিক্ষার্থী এমন অভিযোগ তুলেছে বলে সেদিন রটানো হয় সে-ও তাঁকে তেমন কোনো অভিযোগের কথা বলেনি৷ প্রধান শিক্ষককে কান ধরে ওঠ-বস করানোর সেই দৃশ্য এবং ধর্মীয় শিক্ষকের বক্তব্য নীচের এই ইউটিউব লিঙ্কে দেখা যাবে৷

রিফাত নামের এক শিক্ষার্থী শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলেছে বলে প্রচার করা হলেও রিফাত নিজে এবং স্থানীয়রাও বলেছেন এমন কোনো কথা অভিযুক্ত শিক্ষক বলেননি৷ রিফাত এবং স্থানীয়দের বক্তব্য শুনতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

অথচ ধর্ম অবমাননার অভিযোগ খতিয়ে দেখার আগেই স্কুল সংলগ্ন মসজিদের মাইক থেকে ঘোষণা করা হয়, শ্যামল কান্তি ভক্ত ধর্ম অবমাননা করেছেন৷ তাঁকে শাস্তি দেয়ার জন্য সবাইকে স্কুল প্রাঙ্গনে সমবেত হবার আহ্বানও জানানো হয়৷ সেই আহ্বান শুনে স্কুলে ছুটে আসে কয়েক হাজার মানুষ৷ মসজিদের মাইক থেকে প্রচার করা বক্তব্য শুনে উত্তেজিত হয়ে ছুটে আসা মানুষদের কেউ কেউ তখন প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে প্রহার করেছে বলেও জানা গেছে৷ শেষমেশ সেখানে হাজির হন স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান৷ তাঁর তদারকিতেই শত শত মানুষের সামনে প্রকাশ্যে কান ধরে ওঠ-বস করানো হয় শ্যামল কান্তি ভক্তকে৷

সংবাদমাধ্যমে খবরটি প্রকাশের পর থেকেই হ্যাশট্যাগ সরিস্যার (#SorrySir) দিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে শুরু হয় প্রতিবাদ৷

এদিকে এ ঘটনায় হতাশা এবং ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, ‘‘কেউ দোষ করলে নিয়মনীতি অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে৷ কিন্তু একজন শিক্ষকের সঙ্গে এ ধরনের অসম্মানজনক আচরণ কাম্য হতে পারে না৷'' এ সময় ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি

এদিকে অনেকেই নিজের কান-ধরে বসা ছবি ফেসবুকে আপলোড করে নারায়ণগঞ্জে ধর্ম অবমাননার ধুয়া তুলে শিক্ষকের মর্যাদাহানির প্রতিবাদ জানাচ্ছেন৷ অভিনেতা, প্রযোজক, টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব ইরেশ জাকেরসহ অনেকেই যোগ দিয়েছেন অভিনব এই প্রতিবাদে৷ তাঁরাও মনে করেন, শিক্ষক কোনো অন্যায় করে থাকলে প্রচলিত আইনে তাঁর বিচার হতেই পারে, তবে ধর্ম অবমাননার কথা মসজিদের মাইকে প্রচার করেই একজন শিক্ষককে এভাবে যারা অসম্মান করেছেন তারা আসলে গোটা বাংলাদেশকেই সারা বিশ্বের চোখে হেয় প্রতিপন্ন করেছেন৷

সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ খতিয়ে না দেখেই শিক্ষককে এভাবে কান ধরে ওঠ-বস করানোকে কি আপনি সমর্থন করেন? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান