1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল সুফল দেবে

১৭ এপ্রিল ২০১৭

নারী ও শিশু নির্যাতন এবং সংখ্যালঘু নির্যাতনের আলোচিত মামলাগুলো দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে৷ এমনকি সমাজে তার ইতিবাচক প্রভাবও পড়বে৷ মনে করেন আইনজীবী ও মানবাধিকার নেতারা৷

https://p.dw.com/p/2bLwC
Symbolbild - Proteste gegen Vergewaltigungen in Indien
ছবি: Getty Images/N. Seelam

শনিবার রাতে রাজধানীতে আবারো দুই কিশোরীধর্ষণের শিকার হয়৷ পুলিশ এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করে৷ কিন্তু বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতাসহ নানা কারণে আসামিরা ছাড়া পেয়ে যায় বা বিচারে তাদের সময়মতো শাস্তি দেওয়া যায় না৷ ফলে এ ধরনের ঘটনা ঢাকাসহ সারা দেশে বাড়ছে বই কমছে না৷

আদালত সূত্র জানায়, সারাদেশে বিচারের জন্য ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের দেড় লক্ষাধিক মামলা ঝুলে আছে৷ এ সব মামলার বিচার চলছে ঢিমেতালে৷ বছরে নিষ্পত্তি হচ্ছে মাত্র ৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ মামলা৷ আর সাজা পাচ্ছে হাজারে সাড়ে মাত্র চারজন আসামি৷

২০০১ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ‘ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার'-এ ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়ে চিকিৎসা সহায়তা নিতে আসেন ২২ হাজার ৩৮৬ জন নারী৷ এর মধ্যে মামলা হয় পাঁচ হাজার তিনটি ঘটনায়৷ ৮০২টি ঘটনায় রায় দেওয়া হয়, শাস্তি পায় মাত্র ১০১ জন৷ দেখা যায়, রায় ঘোষণার হার ৩ দশমিক ৬৬ ভাগ আর সাজার হার ০ দশমিক ৪৫ ভাগ৷

এদিকে রবিবার, ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার রাঙামাটিয়া ইউনিয়নের হাতিলেইট বিলপাড়া গ্রামে এক আদিবাসী কয়েস বর্মণের স্ত্রী লক্ষী রানী বর্মণ দম্পতির মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয়৷ শুধু তাই নয়, তাদের প্রকাশ্যে মারধর ও গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেওয়া হয়৷

পাশের পাড়ার মুসলিম পরিবারের সঙ্গে বন্ধুত্ব সম্পর্ক থাকার অভিযোগ এনে গ্রাম্য শালিস বৈঠকে কয়েস চন্দ্র বর্মণ ও লক্ষ্মী রানী বর্মণের বিরুদ্ধে এ নির্যাতন করা হয়৷

এই ঘটনার শিকার লক্ষী রানী বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে ফুলবাড়ীয়া থানায় একটি নির্যাতনের মামলা দায়ের করেছেন৷

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু এবং আদিবাসী নির্যাতনের ঘটনাও থামছে না৷ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সংখ্যালঘুদের বাড়ি ঘর এবং মন্দিরে হামলাকারীদের এখনো বিচার হয়নি৷ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ এর হিসাব অনুযায়ী, গত বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি-মার্চ – এই তিন মাসে ৮২৫০টি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে৷ এর মধ্যে হত্যা, আহত, অপহরণ, জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত, গণধর্ষণ, জমিজমা, ঘরবাড়ি, মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও উচ্ছেদের ঘটনা রয়েছে৷

নূর খান

২০১৫ সালের বাংলাদেশে ২৬১টি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে৷ এছাড়া ১৫৬২টি প্রতিষ্ঠান, পরিবার ও ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হন৷ ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১শে মার্চ পর্যন্ত প্রথম তিন মাসে সংখ্যালঘুদের ওপর কমপক্ষে ৭৩২টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে, যা আগের বছরের ঘটনার প্রায় তিনগুণ৷ এতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি, পরিবার ও প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৯৫৬৬টি, যা আগের এক বছরের তুলনায় ছয়গুণেরও বেশি৷ এ সময়ে ১০ জন নিহত, ৩৬৬ জন আহত এবং ১০ জন অপহরণের শিকার হয়েছেন৷

জোরপূর্বক ধর্মান্তরের অভিযোগ রয়েছে দু'টি৷ ধর্ষণের শিকার আটজন৷ জমিজমা, ঘরবাড়ি, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, দখল ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে ৬৫৫টি৷ আর ২২টি পরিবারকে উচ্ছেদের হুমকি দেওয়া হয়৷

তুহিন হাওলাদার

মানবাধিকার নেতা এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এ সব ঘটনার বিচার না হওয়া এবং বিচারে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে হামলা, নির্যাতন বন্ধ হয় না৷ তাই নাসিরনগরে হামলার মতো বছাই করা কিছু ঘটনার বিচার যদি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে করা যেত, তাহলে দ্রুত বিচার পাওয়া যেত এবং এর ইকিবাচক প্রভাব পড়ত৷''

তিনি বলেন, ‘‘এর বাইরে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনাও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেওয়া যায়৷''

ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী তুহিন হাওলাদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ঢাকায় চারটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আছে৷ কিন্তু তাদের কাছে মামলার সংখ্যা খুবই কম৷ সারাদেশের ট্রাইব্যুনালেও মামলা নাই বললেই চলে৷ তাই আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচিত হবে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং সংখ্যালঘু নির্যাতনের চাঞ্চল্যকর আরো মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো৷''

তিনি বলেনন, ‘‘দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি করার বিধান আছে৷ তাছাড়া মামলার বিচার হলে তা অপরাধ কমাতে এবং দমনে ভূমিকা রাখে৷''

আপনার কী মনে হয় বন্ধুরা? জানান আমাদের, লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য